৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে
Published: 29th, April 2025 GMT
৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া কয়েকজন প্রার্থী গেজেটভুক্ত করা ও ভেরিফিকেশন নীতি প্রণয়নের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ দাবিতে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
অনশনে বসা প্রার্থীরা বলেন, ‘গেজেটের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই এখন আমরণ অনশন শুরু করেছি।’
আরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংক নেবে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার, বেতন ৩০,০০০ টাকা২৭ এপ্রিল ২০২৫আমরণ অনশনে বসা শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো.
আমরণ অনশনে বসা প্রার্থীরা হলেন, শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার, মো. মতিউর রহমান, এম এ হান্নান সরকার, দেবাশীষ ঘোষ ও সমরজিৎ চক্রবর্তী। আগামীকাল বুধবার তাঁদের সঙ্গে বাদ পড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী যোগ দেবেন বলে জানান তাঁরা।
দীর্ঘ পাঁচ বছরের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষে ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত হয়ে গত ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু গেজেট থেকে বাদ পড়ায় ২২৭ প্রার্থী চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি। এরপর গেজেটভুক্ত হওয়ার দাবিতে তাঁরা গত জানুয়ারি থেকে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
আরও পড়ুন৪০৪ পদে সরকারি চাকরি, আবেদন শেষ আগামীকাল১২ ঘণ্টা আগে৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৬ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত, পিএসসি সংস্কার কমিশন গঠন
পিএসসি সংস্কারের ৮ দফা দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের শাহবাগ ব্লকেডের পর আগামী ৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ ব্লকেড শুরু করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে চত্বরের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মধ্যস্থতায় পিএসসির সদস্য জহিরুল হক ভূইয়াসহ আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ আলোচনার পরে ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয় এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৮দফা দাবির জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। পিএসসির দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও গঠিত কমিটি আলোচনায় বসবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে সড়কের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তারা ‘এই মুহূর্তে দরকার, পিএসসি সংস্কার’ ‘জুলাইয়ে অঙ্গীকার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
তাদের আট দফা দাবি হলো– ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন আবার করা; আগে ৪৪ এর ভাইভা শেষ করে তারপর ৪৬ এর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া; কমিশনে বসিয়ে খাতা দেখানো; অতি দ্রুত কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ এ উন্নীত করা; ভাইবা শেষ হবার পর ও রেজাল্টের আগে ক্যাডার চয়েজ প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদান; ৪৫-৪৭ বিসিএসের ক্ষেত্রে ভাইবার পূর্বে পুনরায় ক্যাডার চয়েজ পূরণের সুযোগ প্রদান; প্রিলির কাট অফ মার্ক এবং প্রিলি, লিখিত ও ভাইবার মার্ক প্রকাশ করা এবং লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে রুটিন ঘোষণা করা; সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও যথাসম্ভব স্বচ্ছকরণ, ভেরিফিকেশনের হয়রানি লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গেজেট প্রণয়ন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষকরণ এবং ৪৪ এর ক্যাডার পদবৃদ্ধি ও নন ক্যাডার বিধি’২৩ সংস্কার।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আওরঙ্গজেব, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মো. সিরাজুস সালেহীন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী সাকির রাজু ভাস্কর্যে অনশন শুরু করেন।