সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 29th, April 2025 GMT
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নড়াইল আদালত চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নড়াইল আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাডভোকেট এস এম আব্দুল হক। বক্তব্য রাখেন- নড়াইল আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু, যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম, সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, অ্যাডভোকেট মাহবুব মোশেদ জাপল ও অ্যাডভোকেট রাজীব।
আরো পড়ুন:
বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন: মামলার রায় দ্রুত কার্যকর চান স্বজনরা
বক্তারা বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারকে আজীবন ক্ষমতা রাখার জন্য জুডিসিয়াল যত কাজ তার সবই সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক করেছেন। তিনি জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করেছেন। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের আহ্বান জানান বক্তারা।
ঢাকা/শরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে জামানতের টাকা ফেরত না পেয়ে এনজিওর মালিকের বাড়িতে ভাঙচুর
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় গ্রাহকদের জামানতের বিপুল অর্থ নিয়ে একটি এনজিওর (বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা) মালিক ও কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই টাকা না পেয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা এনজিওর মালিকের বাড়ির আসবাব ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছেন।
এ ছাড়া জামানতের টাকার দাবিতে তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। আজ রোববার সকালে উপজেলার জামশা ইউনিয়নের উত্তর জামশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০১ সালে দক্ষিণ জামশা গ্রামে ‘গ্রাম মানবিক উন্নয়ন ক্ষুদ্র সমবায় সমিতি’ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় জামশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুজ্জামান, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি মানিক মিয়া উজ্জ্বল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাবিবুল্লাহ যৌথভাবে এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এনজিওর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে জামানত সংগ্রহ করেন। এনজিওটি উপজেলার জামশা, জামির্ত্তা, চারিগ্রাম, বলধারা, তালেবপুর ও জয়মন্টপ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সহস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা জামানত সংগ্রহ করে। জামানতের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও গ্রাহকদের টাকা না দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। এ নিয়ে টাকা পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও পরে এনজিওর মালিক আওয়ামী লীগের নেতা আমজাদ হোসেনের বাড়িতে আসবাব ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা।
আজ সকাল ১০টার দিকে উত্তর জামশা এলাকায় আমজাদ হোসেনের বাড়ির কাছে কয়েক শ গ্রাহক জামানতের টাকা পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন। এরপর বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা আমজাদের বাড়িতে আলমারি, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।
উত্তর জামশা গ্রামের গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার (৩৪) কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা জামানত হিসেবে ওই এনজিওতে জমা রাখেন। তিন বছর পার হলেও তিনি কোনো টাকা পাননি। ফাতেমা বলেন, ‘আমার সহায়–সম্বল যা আছিল, তা বিক্রি করে ওই এনজিওতে রাখছিলাম। টাকা ফেরত পাওনের জন্য এনজিওর লোকদের পায়ে পর্যন্ত ধরেছি, কোনো টাকা দ্যায় নাই। পোলাপান নিয়্যা কীভাবে আমার দিন যায়, রাত পোহায়, আমি জানি আর আল্লাহ জানে।’
চারিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা সাবিনা বেগমের (৪৫) স্বামী ও ছেলে দুজনই প্রবাসী। ২০১৮ সালে তিন বছরের জন্য এনজিওটিতে জামানত হিসেবে ১০ লাখ টাকা রাখেন। কয়েক মাস লভ্যাংশ দিলেও তা দেওয়া বন্ধ করা হয়। পরে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে সংস্থাটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এনজিওর মালিকেরা আত্মগোপনে চলে যান। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাউকেই এলাকায় পাওয়া যায়নি। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এনজিওটির পরিচালক গাজী কামরুজ্জামানের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার বলেন, টাকাপয়সার জন্য বাড়িতে প্রতিনিয়তই লোকজন আসেন। তাঁর স্বামী তাঁকে জানিয়েছেন, গ্রাহকদের জামানতের টাকা বিভিন্ন কাজে বিনিয়োগ করা হয়েছে। তিন থেকে চার বছরের ভেতর গ্রাহকের সব টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জেলা সমবায় কর্মকর্তা ফারহানা ফেরদৌসী বলেন, কোনো সমবায় সমিতি গ্রাহকের কাছ থেকে জামানত সংগ্রহ করতে পারবে না। সমিতির নিবন্ধন থাকলে সদস্যদের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারবে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা অভিযোগ করলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।