সলঙ্গায় গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ, পিতা-পুত্রকে কারাগারে প্রেরণ
Published: 29th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত বাবা সলঙ্গার চড়িয়াকান্দি গ্রামের জামসেদ ফকির (৬৫) ও তার ছেলে আনারুল ইসলাম মুক্তা ফকির (৩৫)। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ভুক্তভোগীর গৃহপরিচারিকার মা বাদী হয়ে জামসেদ ও মুক্তাকে আসামি করে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের ফলে তার মেয়ে দু’মাসের গর্ভবতী হয়েছেন।
সলঙ্গা থানার ওসি মোখলেসুর রহমান মামলার এজাহার ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আজ সন্ধ্যার পর জানান, অভিযুক্তদের বাড়িতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন ওই গৃহপরিচারিকা। এ সময়ে নানা সুযোগে তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করতেন অভিযুক্ত বাবা-ছেলে। এতে ওই গৃহপরিচারিকা দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি প্রকাশ পেলে তার মা থানা-পুলিশের শরণাপন্ন হলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আগামীকাল সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে বলেও জানান ওসি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ গ হপর চ র ক সলঙ গ
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রাহকের ৩ কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা নিরুদ্দেশ
ঢাকার দোহারে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের জয়পাড়া শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম ৯ জন গ্রাহকের কাছে স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) নামে টাকা জমা নেন। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করেন। শহীদুল তাদের দুই কোটি ৯৮ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন।
জানা যায়, বিশালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লার ৯০ লাখ টাকা, দোহার পৌরসভার জয়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের সহ-সভাপতি নাফিস চৌধুরীর ৩৬ লাখ, উত্তর জয়পাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ২০ লাখ, নবাবগঞ্জ উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নের শুরগাঁও গ্রামের মাহমুদা আক্তার লাকীর ৩০ লাখ, তাঁর স্বামী বোরহানুল হকের ৩০ লাখ, দোহার খালপাড়ের জামাল আহমেদের ১৫ লাখ, একই এলাকার রোকসানা আক্তারের ৪৫ লাখ, দোহার পৌরসভার উত্তর জয়পাড়া এলাকার ফাতেমা আক্তারের ২১ লাখ ও তাঁর স্বামী নুর ইসলামের ১১ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শহীদুল।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, এ ঘটনায় গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের জয়পাড়া শাখার চলতি দায়িত্বে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান। তিনি জানান, এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাবেক ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলামের নামে দোহার থানায় গত ৪ মার্চ মামলা করা হয়েছে। মামলাটি দুদক তদন্ত করছে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের লিখিত এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মস্থলে না যাওয়ায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ও যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি আর কর্মস্থলে যাননি ও অফিসের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। পরে ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও বিভিন্ন আলামত যাচাই করে বোঝা যায় শহীদুল স্থানীয় অনেক লোকজনের সঙ্গে ব্যাংক বহির্ভূত অনৈতিক আর্থিক লেনদেনে জড়িত। তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের সুনাম নষ্ট হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা জানান, তাঁর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান লাকী এন্টারপ্রাইজের ৯০ লাখ টাকা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের জয়পাড়া শাখায় এফডিআর করার জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে একাউন্ট খোলেন। পরে গত ২ মার্চ ব্যাংকে একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়ে আরও ১০ লাখ টাকা যোগ করে এক কোটি টাকার এফডিআর করতে আবেদন করেন। এ সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁকে দেওয়া স্থায়ী আমানতের জমা রশিদ ও সিকিউরিটি চেক গ্রহণ করে অপেক্ষা করতে বলে। কিছুক্ষণ পর তাঁকে জানানো হয়, তাঁর জমা দেওয়া রশিদ ও সিকিউরিটি চেক সবই জাল। এ সময় দায়িত্বরত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল রাকিব তালুকদারের কাছে বিষয়টির সমাধান চাইলে তিনি বলেন, এখন তাঁর কিছুই করার নেই। টাকা ফেরত পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান, এমডি বরাবর এবং দুদক ও দোহার থানায় লিখিত অভিযোগ করতে হবে।
আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, এ ঘটনায় তারা ৯ জন গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারের কাছে তারা এর ন্যায়বিচার চান।
এ বিষয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের বোর্ডে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এখনও লিখিত কোনো আদেশ তাঁর দপ্তরে পৌঁছেনি। আদেশ হাতে পেলে তদন্ত শুরু করবেন বলে জানান তিনি।