বরিশালের উজিরপুরে রেজাউল করীম নামে এক ‘ভুয়া’ চিকিৎসককে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল ইসলাম খান তাকে এ দণ্ডাদেশ দেন।

কয়েক বছর ধরে ‍উপজেলার পশ্চিম সাতলা বাজারে ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিতেন রেজাউল করিম। ‘ভুয়া’ এই পরিচয় ব্যবহার করে উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পশ্চিম সাতলায় ডায়গনস্টিক সেন্টার খুলেন তিনি। যেখানে সার্জারিসহ জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেওয়া হতো। চিকিৎসার নামে গ্রামের সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

উজিরপুর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে রেজাউল করীমকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

মাইনুল ইসলাম খান। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি সনদপত্র দেখান রেজাউল। যা ‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’ নামে ভারতীয় একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের। আদতে ওই সনদের কোনো বৈধতা নেই। ভুয়া চিকিৎসক হওয়ায় রেজাউলকে আটক করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ য় চ ক ৎসক র জ উল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি

হাসপাতালে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁদের পাশে আরও কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে। দুজনের বাগ্‌বিতণ্ডায় এক পর্যায়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ সময় ওই চিকিৎসককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন আরেকজন। তখন চিকিৎসকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ানো ব্যক্তি কিছু একটা বলেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি দিয়ে বসেন ওই চিকিৎসক।

এমন একটি ভিডিও গতকাল রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে জুবায়ের আহমদ (২২) নামের এক রোগীকে নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত। সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জের কলাগাঁও এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের শুক্রবার থেকে পেটের নিচে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল দুপুরে জুবায়েরের পাশে তাঁর বন্ধু মিজান আহমদ (২২) ছিলেন। মিজানের সঙ্গেই তন্ময় দেবনাথ নামের ওই চিকিৎসকের বাগ্‌বিতণ্ডা এবং লাথি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তন্ময় দেবনাথ নামের ওই চিকিৎসক স্নাতকোত্তর ‘ফেজ-বি’–এর আবাসিক শিক্ষার্থী। রোগীর স্বজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে কোনো কথার জেরে মেজাজ হারিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। রোববারের ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুবায়েরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিজান আহমদ ওই চিকিৎসককে ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। পরে মিজানকে ডেকে নিয়ে ব্যবহার ঠিক করার কথা বলেছেন ওই চিকিৎসক। একপর্যায়ে চিকিৎসকের সঙ্গে মিজানের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এতে ওই চিকিৎসক লাথি দিয়েছেন।

জুবায়ের জানান, তিনি বাড়িতে কৃষিকাজ করেন। তাঁর বন্ধু মিজান আহমদ তাঁদের পার্শ্ববর্তী আনন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা। মিজান মিস্ত্রির কাজ করেন। ওই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বিষয়টি জানার জন্য তাঁর কাছে গিয়েছিলেন। জুবায়ের এখন অনেকটা সুস্থ আছেন চিকিৎসকেরা তাঁকে আজ–কালকের মধ্যেই ছাড়পত্র দিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই চিকিৎসককে আপাতত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি