ভিডিওটি জয়পুরে গতকাল রাতের ঝড়ের। ব্রায়ান লারা তখন সম্ভবত টিভি সেটের সামনে। বৈভব–ঝড় দেখে কিংবদন্তি হয়তো বুঝেছিলেন, এটাই এক টুকরা ইতিহাস। টিভি থেকে ঝড়ের হাইলাইটসটুকু ভিডিও করতে দেরি করেননি লারা। পরে সেই ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে পোস্ট করে লারা যে ক্যাপশন দিয়েছেন, সেটি টাইম মেশিনে চড়িয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের ফিরিয়ে নেবে ১৮ বছর আগে। ব্রিজটাউনে সেদিন বিশ্বকাপের সুপার এইটে ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যেটা ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লারার শেষ ম্যাচ।

আরও পড়ুন১৪ বছর বয়সে অন্যরা আইসক্রিম খায়, বৈভব সূর্যবংশী বোলারদের পেটায়৮ ঘণ্টা আগে

সেদিন আবেগে ভেসে গিয়েছিল ব্রিজটাউনের গ্যালারি। ভেসে গিয়েছিলেন লারাও। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ধরে আসা গলায় দর্শকদের কাছে লারা শুধু একটি বিষয় জানতে চেয়েছিলেন, যেটা আসলে তাঁর ক্যারিয়ারেরই সারাংশ, ‘আমি কি মন ভরাতে পেরেছি? যদি পারি তাহলে আমি খুব খুশি।’

বলা বাহুল্য, লারার প্রশ্নের উত্তরে গ্যালারিতে হ্যাঁ–সূচক গর্জনই উঠেছিল।

এখন প্রশ্ন হলো, বৈভব সূর্যবংশী কী বলবেন? পৃথিবীতে অনেক তারকা ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা সারা জীবন খেলেও হয়তো নিজের রোল মডেলের কাছ থেকে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া পান না কিংবা পেলেও, তা ক্যারিয়ারের মাঝপথে অথবা শেষ দিকে। বৈভবের কী কপাল, আইপিএলে নিজের তৃতীয় ম্যাচেই প্রশংসাপত্র পেয়ে গেলেন তাঁর আদর্শ ক্রিকেটারের কাছ থেকে। একটু ভুল হলো, কপাল নয় আসলে সামর্থ্য।

১৪ বছর বয়সী এক ছেলে যদি বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে বাঘা বাঘা সব বোলারকে মেরে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেন, যদি সেই ইনিংসে ফ্লিক শটগুলো তাঁর আদর্শের ব্যাটিং স্টাইলের সঙ্গেও মিলে যায়, তাহলে মনের ভেতর আবেগের স্ফুরণ ঘটতে পারে। তখন হয়তো ফিরতে ইচ্ছা করে ফেলে আসা দিনগুলোতে। লারারও কি তেমন মনে হয়েছে?

আরও পড়ুন১৪ বছর বয়সী বৈভবের বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উড়ে গেল গুজরাট ১৯ ঘণ্টা আগে

‘বস বেবি’খ্যাত বৈভব–ঝড়ের হাইলাইটসের ভিডিও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লারা ক্যাপশনে মিশেল ঘটিয়েছেন তাঁর অতীতের সঙ্গে বৈভবের বর্তমানের, ‘আমি কি মন ভরাতে পেরেছি? তুমি অবশ্যই আমার মন ভরিয়েছ।’

ওহ, বলাই হয়নি। বাঁহাতি বৈভবের আদর্শ কিন্তু ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা।

প্রিন্স অব ত্রিনিদাদের অবসর নেওয়ার চার বছর পর জন্ম বৈভবের, অন্তত তাঁর অফিশিয়াল জন্ম তারিখ সে রকমই। লারার ব্যাটিংটা তাই তাঁকে দেখতে হয়েছে ইউটিউবে। বছরের পর বছর ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তির ব্যাটিং দেখে তাঁর দু–একটি শট বৈভব নিজেও আয়ত্ত করেছেন। লারার প্রতি ভালোবাসা বৈভব আগে জানিয়েছেন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে, ‘আমার আদর্শ ব্রায়ান লারা। আমি তাঁর ভিডিও ও ব্যাটিং স্টাইল দেখি। তাঁর অপরাজিত ৪০০ রানের ইনিংসটি ভালোবাসি। অনেকবার আমি এটা দেখেছি। তাঁর যে বিষয়টি সেরা, আমিও সেটা ভালোবাসি, তিনি ম্যাচ মাঝপথে ছেড়ে আসেন না। হাল ছাড়েন না। তাঁর ভেতরে ম্যাচ জেতার মানসিকতা ছিল। আমি এটাই তাঁর কাছ থেকে শিখতে চাই.

..লারা যেভাবে করেছেন, আমিও সেভাবে বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাই।’

গুজরাটের বিপক্ষে কাল আইপিএলে ঐতিহাসিক এক সেঞ্চুরি করেন বৈভব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আদর শ

এছাড়াও পড়ুন:

মাটির পাত্রে রাখা পানি

এক সময় মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাসনপত্রে রান্না করত। পানি সংরক্ষণের জন্যও ব্যবহার করা হতো মাটির পাত্র। এ অভ্যাস তৎকালীন প্রজন্মকে সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করত। সময়ের বিবর্তনে আবারও ফিরে এসেছে সেই চল। অনেকে আজকাল পানি সংরক্ষণের জন্য মাটির ফিল্টার ও জগ ব্যবহার করছেন। অনেকে আবার পানি খাওয়ার জন্য ব্যবহার করছেন মাটির মগ বা গ্লাস। মাটির পাত্রে রাখা পানি পানে নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে। যেমন–
প্রাকৃতিকভাবে পানি ঠান্ডা রাখে 
মাটির পাত্রে রাখা পানি প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা থাকে। এ গরমে বাইরে থেকে ফিরে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি না খেয়ে এ পাত্রে রাখা পানি পান করুন। এতে শরীর শীতল হবে। 
হজম শক্তিকে উন্নত করে
মাটির পাত্রে পানি রেখে পান করলে হজম শক্তি উন্নত হয়। মাটিতে থাকা ক্ষার পানির অম্লতা নিরপেক্ষ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভালো। সেই সঙ্গে মাটিতে থাকা খনিজ ও লবণ হজমের জন্য উপকারী। মাটির পাত্রে রাখা পানি পানে এসিডিটি, ফোলাভাব ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো হজমের সমস্যা কমে। শরীরে টক্সিক কেমিক্যালের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে মাটির পাত্রে রাখা পানি।
হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে
প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক একটি সাধারণ সমস্যা। মাটির পাত্রে রাখা পানি পান করলে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করে। কারণ এ পাত্রে পানি থাকায় খনিজ এবং পুষ্টি উপাদানগুলো অক্ষত থাকে। এর ফলে শরীর দ্রুত ডিহাইড্রেট হয়।
পানির গুণমান উন্নত
মাটির পাত্র কেবল পানি ঠান্ডা করে না, বরং প্রাকৃতিকভাবে পানি বিশুদ্ধ করার জন্যও কার্যকর। কাদামাটি দিয়ে তৈরি ছিদ্রযুক্ত মাটির পাত্র প্রাকৃতিকভাবে পানি ফিল্টার করে। যার ফলে পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
স্বাদ বাড়ায়: মাটির পাত্র রাখা পানি পান করলে পানিতে অন্য রকম এক স্বাদ ও সুগন্ধ যোগ হয়। মাটির বিভিন্ন উপাদান পানিতে মিশে স্বাদটা ভিন্নমাত্রা পায়। এ কারণে এই পানি খেতে অনেক সতেজ লাগে।  
পরিবেশবান্ধব
প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে মাটির পাত্র বেশি ভালো হওয়া কারণ, এটি পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া কাচের বোতলের চেয়ে মাটির বোতল ব্যবহার করা সাশ্রয়ী। মাটির পাত্র দীর্ঘ সময় ব্যবহারও করা যায়। v
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, হেলথ শটস

সম্পর্কিত নিবন্ধ