নীলফামারীতে পৃথক বিস্ফোরণে দুই বোন ও দুই শ্রমিক দগ্ধ
Published: 29th, April 2025 GMT
নীলফামারীতে দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরেণের ঘটনায় উত্তরা ইপিজেডের একটি কারখানায় ও ইপিজেডের পাশে একটি বাসায় পৃথক দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই বোনসহ চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ইপিজেডের সনিক কারখানায় (খেলনা তৈরির কারখানা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কারখানার দুই শ্রমিক দগ্ধ হন। তাঁরা হলেন লিটন চন্দ্র রায় (২৫) ও দেলোয়ার হোসেন (২৮)।
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল জব্বার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো.
বিস্ফোরণের পর ওই কারখানার শ্রমিকেরা বাইরে বের হয়ে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানায় হঠাৎ করে কাজের চাপ বেড়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় তিন পালায় শ্রমিকেরা কাজ করছেন। ফলে খেলনা তৈরির যন্ত্রগুলো বিশেষ করে ‘ডায়াস্টিক’ যন্ত্রটি বন্ধ করা হয় না। ধারণা করা হচ্ছে ওই যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনার পর কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, এর আগে ৬ এপ্রিল রাত আটটার দিকে ওই কারখানার ডায়াস্টিক যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় রমজান আলী ও খায়রুল ইসলাম নামের দুই শ্রমিক দগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১০ এপ্রিল খায়রুল ইসলাম এবং ১২ এপ্রিল রমজান আলী মারা যান। এরপরও সনিক কারখানাটির কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
একই দিন সকাল ৬টার দিকে উত্তরা ইপিজেডসংলগ্ন এক ভাড়া বাসায় রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার দুই নারী শ্রমিক দগ্ধ হন। সম্পর্কে তাঁরা আপন দুই বোন। দগ্ধরা হলেন সুইটি আক্তার (২০) ও তাজকিনা আক্তার (২৩)। তাঁরা জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের সেওটগাড়ি গ্রামের বাবুল হোসেনের মেয়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের একটি দল দগ্ধ দুই বোনকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।
দুটি বিস্ফোরণের বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, পৃথক দুই ঘটনায় দগ্ধ চার শ্রমিককে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর উত্তেজিত শ্রমিকেরা কারখানার সামনে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থনীতির আকারে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দশম
এশিয়ার মধ্যে দশম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এখন বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারের ভিত্তিতে এশিয়ায় বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে ৯টি দেশ। এশিয়ায় শীর্ষস্থানে আছে চীন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এশিয়ায় জিডিপির আকারে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন, ভারত, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইপে, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ‘বেসিক স্ট্যাটিসটিকস ২০২৫’ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি এশিয়ার দেশগুলোর এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে এডিবি। এতে মোট ৪৬টি দেশের জিডিপির আকারের হিসাব রয়েছে। অবশ্য এ তালিকায় জাপান নেই। জাপানের তথ্য বিবেচনায় নিলে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়ায় ১১তম।
এডিবির পরিসংখ্যান অনুসারে, সাময়িক হিসাবে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ৪৫০ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫ হাজার ৫০ কোটি ডলার। জিডিপির আকারের ভিত্তিতে এশিয়ায় সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীন। চীনের জিডিপির আকার প্রায় ১৮,৯৫৭ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটির জিডিপির আকার ৩,৯১১ বিলিয়ন ডলার। তৃতীয় স্থানে আছে কোরিয়া। গত বছর কোরিয়ার জিডিপি ছিল ১,৮৬৯ বিলিয়ন ডলারের।
চতুর্থ স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ার জিডিপি ১,৩৯৬ বিলিয়ন ডলারের। পঞ্চম স্থানে থাকা তাইপের জিডিপি প্রায় ৭৯৬ বিলিয়ন ডলারের। ৫৪৭ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি জিডিপির আকার নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে সিঙ্গাপুর। এ ছাড়া বাংলাদেশের ওপরে থাকা অন্য দেশগুলোর জিডিপির আকার থাইল্যান্ড ৫৪০ বিলিয়ন ডলার, ভিয়েতনাম ৪৭৬ বিলিয়ন ডলার ও ফিলিপাইনের ৪৬১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত বছর সাময়িক হিসাবে জাপানের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪,০১০ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাব বিবেচনায় নিলে জিডিপির আকারের ভিত্তিতে এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাপান।