এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
Published: 29th, April 2025 GMT
দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।
এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.
আরো পড়ুন:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল
নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল
সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।
সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।
সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব এক ক র গ সরবর হ দরপত র র জন য কম ট র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। কাজ বন্ধ থাকায় ডিইপিজেডের সব কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ডিইপিজেডের সব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি বলছে, বিল বকেয়া থাকায় ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ নেই, কারখানাগুলোতে ছুটি
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় সব কারখানায় কর্মীদের ছুটি দেওয়া হয়।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রায় ৯০টি কারখানার ১ লাখ শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। মঙ্গলবারও যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তাহলে সংকট আরো বাড়বে। শ্রমিকরা কাজ করতে না পারলে বিক্ষুব্ধ হবেন। এতে পরিস্থিতি আরো জটিল হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, কোনো নোটিশ ছাড়াই গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় কারখানাগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ার বকেয়া বিল পরিশোধ করেনি। এ বিষয়ে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে।
কেন গ্যাস নেই, জানে না ইউনাইটেড পাওয়ার
গ্যাস বিচ্ছিন্ন করার কারণ বলতে পারেনি ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, কোনো কারণ ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ।
ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান বলেছেন, কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরাও এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার জানা মতে, বকেয়া বিল নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই।
তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন বলেছেন, বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সহায়তায় ইপিজেডের ভেতরের সড়ক বাতিসহ আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা ইপিজেডে ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের আশ্বাস মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের অবস্থান। এখানে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী প্রায় ৯০টি কারখানা আছে। এসব কারখানায় শ্রমিক প্রায় ১ লাখ।
ঢাকা/সাব্বির/রফিক