‘আমি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, ব্যক্তিগতভাবে এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই’—ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা লিখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী উমামা ফাতেমা। এ পোস্ট দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় উমামা বলেছেন, এনসিপিতে যোগ না দেওয়া সত্ত্বেও অনেকে তাঁকে নতুন এই দলের আদলেই দেখার চেষ্টা করেন। সে জন্যই স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র ফেডারেশনের (গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ছিলেন। অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে যেসব ছাত্রী সম্মুখসারিতে ছিলেন, তিনি তাঁদের অন্যতম।

অভ্যুত্থানের পর গত বছরের অক্টোবরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হলে উমামা মুখপাত্রের দায়িত্ব পান। তখন তিনি ছাত্র ফেডারেশনের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ ঘটে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বড় অংশ এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু উমামা এনসিপিতে যোগ দেননি। উমামা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় আছেন। প্ল্যাটফর্মটির সাংগঠনিক কাঠামো আবারও পুনর্গঠিত হতে পারে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুনর্গঠিত কমিটিতে উমামা শীর্ষ পদপ্রত্যাশী, এমন আলোচনা আছে।

গতকাল সোমবার রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে উমামা বলেছেন, ‘সবার উদ্দেশে একটা ছোট ঘোষণা। আমি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমার অনেক পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এই দলটির সঙ্গে আছেন। ব্যক্তিগতভাবে এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। তাই এনসিপি–সংক্রান্ত পরামর্শ, সাংগঠনিক আলাপ বা প্রস্তাবনা আমার কাছে উপস্থাপন না করার অনুরোধ রইল। এতে আপনার, আমার দুজনেরই সময় বাঁচবে।’

হঠাৎ কেন এ পোস্ট দিতে হলো, তা জানতে চাইলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে উমামা ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক পেরিফেরিসহ (পরিসর) সবার কাছ থেকে আমাকে নিয়মিত এসব প্রশ্ন মোকাবিলা করতে হয় যে আমার দল কী করছে বা আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? মূলত তারা এনসিপি–বিষয়ক আলোচনা করতে চায়। বিভ্রান্তির কারণে অনেকে আমাকে এনসিপির প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করার চেষ্টা করে। অর্থাৎ আমাকে ওই দলের আদলে ভাবার একটা প্রবণতা আছে। এ জন্য আমি স্ট্যাটাসটা দিয়েছিলাম, যাতে মানুষ বিষয়টা পরিষ্কার হয় যে আমি এনসিপির সঙ্গে যুক্ত নই।’

এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আছেন জানিয়ে উমামা আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি এখনো ডিজলভড (বিলুপ্ত) হয়নি। এর কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। এরপর নতুন করে কার্যক্রমও শুরু হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম

ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে ‘বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, “রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।”

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ। তিনি বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। প্রবন্ধে তিনি নববর্ষের উৎপত্তি, অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক মাত্রা তুলে ধরেন।

প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী।

সেমিনারটি সভাপতিত্ব করেন আইআরডিসি’র সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এবং সঞ্চালনা করেন আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ