‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা কারো সঙ্গে আলোচনা করেনি সরকার: প্রেস সচিব
Published: 29th, April 2025 GMT
সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, এখনো রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে দেশের প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে রাখাইনে করিডোর দেওয়া নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। আমাদের অবস্থান হলো- যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবে লজিস্টিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সবসময়ই সংকটকালে অন্যান্য দেশকে সহায়তা করেছে, যেমন সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর আমরা যে মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছি। আমরা এ বিষয়েও উদ্বিগ্ন যে, রাখাইনে মানবিক দুর্দশা অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামার কারণ হতে পারে, যা আমরা আর বহন করতে পারব না।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের সহায়তায় মানবিক ত্রাণসহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে এবং শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র কার্যকর রুট হচ্ছে বাংলাদেশের মাধ্যমে। এ পথে ত্রাণ পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা দিতে সম্মত।
তবে এখনো রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে দেশের প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে— বলেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, যেখানে একটি বড় শক্তির সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কল্পিত অপপ্রচার। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচার চালানো হয়েছে, এটি তারই অংশ। এ ধরনের অপপ্রচার আমরা আগেও দেখেছি, এখনো চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক সহ য ত কর ড র র খ ইন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত
মামলার আসামিসহ ২২ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। বরখাস্ত করা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন মামলার আসামি। তবে বিএসইসি এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি করেনি। বুধবার (৩০ এপ্রিল) অফিস আদেশ জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) কমিশন সভায় কর্মকর্তাদের এ বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা এ বিষয়টি রাইজিংবিডি ডটকমকে জানিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও মুখপাত্র আবুল কালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন ধরেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “শুনেছি ২২ বা ২৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মামলার আসামিরাও রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো এজেন্ডা ঠিক করা হয়নি।”
বিএসইসির আরেক কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আজকের কমিশন সভায় কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আফিস আদেশ জারি করা হয়নি। বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হতে পারে।”
গত ৪ মার্চ বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কমিশন। এতে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়। ওই ঘটনার জেরে ৫ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। একপর্যায়ে তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন; সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, লিফট বন্ধ করে দেন এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করেন।
তবে পরের দিন ৬ মার্চ সেনা ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় মধ্যে দিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো. আশিকুর রহমান।
মামলার আসামিরা হলেন-বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন ও আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
তবে এর মধ্যে সাইফুর রহমানকে আগেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আরেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেছেন। বাকি ১৪ জন কর্মকর্তা জামিন নিয়ে কাজে ফিরেছিলেন। গত ২১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় সেই মামলায় কর্মকর্তাদের জামিনও হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে ১৪ জনসহ আরো ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন রাশেদ মাকসুদের কমিশন।
ঢাকা/এনটি/এসবি