জয়পুরহাটে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিতে অনিয়ম, শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত
Published: 29th, April 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ৯৬৭ শিক্ষার্থীর মুঠোফোন অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তনের ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। ২২ এপ্রিল স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে গত রোববার। এ বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল সোমবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের জুলাই ও ডিসেম্বর কিস্তিতে কালাই উপজেলার ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৬৭ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করা হয়। বিষয়টি অনুসন্ধানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলে। এরপর মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে তাঁর প্রস্তাবনায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাসওয়ার্ড হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করা হয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তদন্তও হয়েছিল। মন্ত্রণালয় আমাকে বরখাস্ত করেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এতে আমি জড়িত নই।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কালাই উপজেলায় প্রায় এক হাজার উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মুঠোফোন অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পেয়ে মন্ত্রণালয় কালাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এখনো প্রজ্ঞাপন হাতে পাইনি। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেখে বিষয়টি জেনেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ল ই উপজ ল কর মকর ত ল ইসল ম ব ষয়ট তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা
মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলে নেওয়ার (এমএনপি) সুবিধা সাত বছরেও খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি। শুরুতে মাসে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই সেবা নিতেন। এখন সেটা নেমে এসেছে সাড়ে তিন হাজারে।
রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি): চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুবিধা জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনে সাতটি কারণকে দায়ী করেন এমএনপি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কারণগুলো হলো উচ্চ সিম কর, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধা, আবেদন বাতিলের উচ্চ হার, অপারেটরদের অসহযোগিতা, খুদে বার্তা বা এসএমএস জটিলতা, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)–সংক্রান্ত জটিলতা এবং মুঠোফোনে আর্থিক সেবা বা এমএফএস–সংক্রান্ত জটিলতা।
কর্মশালাটি আয়োজন করে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঘটা করে এমএনপি সেবা চালু করে। এই সেবা নিলে গ্রাহক নম্বর ঠিক রেখে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যেতে পারেন।
প্রথম বছরেই এমএনপি সেবায় সাড়া ছিল ভালো। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে মাসে ১ লাখ ১১ হাজার ১২৭ জন গ্রাহক নম্বর একই রেখে অপারেটর বদল করেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে কয়েক হাজারে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫২২ জনে।
এমএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়নের টেকনিক্যাল লিড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ৭২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমএনপি চালু হয়। প্রথম বছরে যেখানে সাত লাখ গ্রাহক এ সেবা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তী ছয় বছরে সেই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এমএনপি সেবা ব্যবহার করছেন না, যার প্রধান কারণ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণগত বাধা।
ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, ‘গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবেন সর্বোত্তম সেবা।’
কর্মশালায় টিআরএনবির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, এই সেবায় (এমএনপি) সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়া যেত। তৃতীয় পক্ষের নেটওয়ার্ক ব্যবহারযোগ্য হলে প্রতিযোগিতা বাড়বে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে। এতে ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তফা কামাল, টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুনমুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ, কিন্তু জনপ্রিয় হয়নি কেন৩১ মার্চ ২০২৫