সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশে বৈষম্য ও অবহেলার প্রকৃষ্ট উদাহরণ কারিগরি শিক্ষা। অভ্যুত্থানপরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারও দায়িত্ব নেওয়ার পর কারিগরি শিক্ষা নিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কার চিন্তা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে কারিগরি শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

কারিগরি শিক্ষায় অবহেলা পীড়া দেয় উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘নীতিপ্রণেতাদের কাছে আমরা এই ব্যথা পৌঁছাতে চাই। কারিগরি শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছেন, সেখানেও রোগের উপসর্গ নিরাময়ের দাবি রয়েছে। মূল সমস্যা সমাধান করতে হলে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা প্রয়োজন।’

টেকসই উন্নয়ন অর্জনে কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০২৩ সালের টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে যুগোপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরি, উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ এবং কারিগরি শিক্ষাকে মূল ধারার শিক্ষায় যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন না হওয়াকে জাতীয় ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘শিক্ষা এমন একটি জিনিস, এটা টেকনিক্যাল বিষয় নয়। এর মধ্যে মূল্যবোধ থাকে। এটার মধ্যে বিশ্ব দীক্ষা থাকে। পৃথিবী, মানুষ ও দেশকে আমরা কীভাবে দেখি, এসব বিষয় থাকে। এটার ভেতর ইতিহাস থাকে। বর্তমান উত্তরণকালীন সময়ে বিষয়গুলো অনেক আলোচিত। কোনো ক্ষেত্রে এটি বিতর্কের জায়গায়ও চলে যায়।’

বাংলাদেশে শিক্ষা এখন বড় বৈষম্যের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এর কারণ হলো, এখনো কারিগরি শিক্ষাকে যথোপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া হয়নি। সামাজিকভাবেও এই শিক্ষাকে নিচু দৃষ্টিতে দেখা হয়। মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখনো কারিগরি শিক্ষাকে মিস্ত্রি তৈরির শিক্ষা মনে করে।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। কারিগরি শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করলে উন্নত দেশ গঠন বাধার মুখে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।

কারিগরি শিক্ষায় দেশের উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে উল্লেখ করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বুঝতে পারবেন যে কী ধরনের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ জরুরি। পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত করে শিক্ষা–প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ সুবিধা তৈরি করবে উল্লেখ করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালে আমেরিকা শুল্ক বৃদ্ধির করলে চীন তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ভিয়েতনামে নিয়ে যায়। এখনো একই পরিস্থিতি তৈরি হবে। চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশসহ এই স্তরের অন্য দেশগুলোয় আসবে। কিন্তু আমাদের দক্ষতার সঙ্গে সেটি ধরতে হবে।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের নেটওয়ার্ক ফোকাল পয়েন্ট তারান্নুম জিনান, গবেষক নাইমা জাহান তৃষা, সংলাপ সহযোগী রিফাত বিন আওলাদ ও গবেষক ইন্টার্ন মালিহা রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

হত্যাচেষ্টা মামলা: আসামি সুবর্ণা-অপুসহ ১৭ অভিনয়শিল্পী

জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ের ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সুবর্ণা মোস্তফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ অভিনয়শিল্পী আসামি হয়েছেন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) আদালত তাদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

রাজধানীর ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম ও ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুজন হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

ধামরাইয়ে চালক-হেলপারকে মারধর করে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই 

নওগাঁয় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

এর আগে গত মার্চে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করেন এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি। আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানায় এই আবেদন এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে।

মো. সুজন হক বলেন, “আসামিদের তালিকায় মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ফারিয়া, জায়েদ খান, আশনা হাবিব ভাবনা, আজিজুল হকের নাম রয়েছে। মামলায় ১৭ জন অভিনয়শিল্পীর নাম রয়েছে। থানায় এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ হলে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।”

এদিকে, রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপির কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ নিহতের ঘটনায় ঢাকার আদালতে গত ২০ এপ্রিলের করা একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০৭ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় হাসিনা সরকারের আমলের সাবেক মন্ত্রী-এমপি, ঢাকার সাবেক দুই মেয়র, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, নির্বাচন কমিশনার, আইনজীবীসহ ৪০৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আসামি তালিকায় অভিনেতা ইরেশ যাকেরও রয়েছেন।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ