রাজশাহী পলিটেকনিকে ৯ দিন ধরে তালা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 29th, April 2025 GMT
ছয় দফা দাবি আদায়ে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৯ দিন আগে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তালা এখনো খোলেনি। এ অবস্থায় দাবি আদায়ে শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি আদায়ে নানা স্লোগান দেন তারা।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদিক্ষণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। দুপুরে তাদের কর্মসূচি শেষ হয়।
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত, ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।
আরো পড়ুন:
পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ
ছয় দফা দাবিতে রাজশাহী পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীরা জানান, কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুসারে শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল করছেন তারা। তাদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
গত ২১ এপ্রিল রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মানবিক করিডর’ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপি, সরকারের কাছে জানতে চাইবে
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ স্থাপনে অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মর্মে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে খুব উদ্বিগ্ন বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে আসলে কী হয়েছে, তা সরকারের কাছে জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে গতকাল সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির এই সভায়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় নেতাদের কেউ কেউ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন বলে জানা গেছে।
সভাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির এই সভায় কক্সবাজার হয়ে রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডর’ স্থাপনে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের যে খবর বের হয়েছে, সে বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এ বিষয়ে শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করেন, গৃহযুদ্ধে জর্জর মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার মতো নীতিগত সিদ্ধান্ত কোনো অনির্বাচিত সরকার নিতে পারে না। এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রশ্ন জড়িত। তাই এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোসহ জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা করা উচিত। সেটা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এই ইস্যুতে সরকারকে চিঠি দেবে বিএনপি। প্রয়োজনে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। সরকারকে এমন পরিকল্পনা থেকে সরিয়ে আনতে প্রয়োজনে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করবে। বিএনপি সরকারকে সতর্ক করবে যে এমন পদক্ষেপ বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে পারে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনগণকে অন্ধকারে রেখে এমন সিদ্ধান্ত অনভিপ্রেত। যদি বিষয়টি একান্তই জরুরি হতো, তাহলে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।’
এর আগে গত রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শর্ত সাপেক্ষে মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের জন্য করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘এতটুকু আপনাদের বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এতে সম্মত। কারণ, এটি একটি হিউম্যানিটেরিয়ান প্যাসেজ (ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর জন্য মানবিক করিডর) হবে। কিন্তু আমাদের কিছু শর্ত রয়েছে, সেই বিস্তারিততে যাচ্ছি না। সেই শর্তাবলি যদি পালিত হয়, আমরা অবশ্যই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’
এ খবর প্রকাশের পরদিন গতকাল সন্ধ্যায় নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় এক কর্মসূচিতে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজ একটা খবর দেখে চিন্তিত হলাম। বাংলাদেশের যে বৈদেশিক উপদেষ্টা তৌহিদ সাহেব বলেছেন, ‘‘আরাকানদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য আমরা একটা হিউম্যানিটরিয়ান প্যাসেজ, মানবিক একটা প্যাসেজ দিতে চাচ্ছি।” অনেক কঠিন কথা, বোঝানো মুশকিল হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম মনে করেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যোগাযোগের জন্য ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কথা বলে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের শান্তিশৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা জড়িত।
অবশ্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’