চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামীকাল বুধবার শেষ হচ্ছে। ওই দিন রাত ১২টার পর থেকে জেলেরা নদীতে জাটকা ছাড়া সব ধরনের মাছ ধরতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।

এর আগে গত ১ মার্চ থেকে দুই মাস মেঘনায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। জাটকা রক্ষায় অভয়াশ্রম নিরাপদ করতে ওই এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। স্থানীয় মৎস্য বিভাগ জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে জারি করা ওই পরিপত্রে জাটকা বা ইলিশ ধরা ছাড়াও এগুলো বিক্রি, মজুত, পরিবহনও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেরা সব মাছ ধরতে পারবেন। তবে জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা আগামী জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ ছাড়া মেঘনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহারও নিষিদ্ধ থাকছে।

বিজয় কুমার দাস দাবি করেন, মতলব উত্তর উপজেলার সীমানায় গত ১ মার্চ থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মোট ১৮০টি অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে ১৭ টন জাটকা, ১৪ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ৭টি নৌকা জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করা হয় ১৭ জেলের। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জাটকা রক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত তাঁরা এ সহায়তা পাবেন।

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলেরা। ষাটনল এলাকার জেলে রিপন বর্মণ ও ফুলচান বর্মণ বলেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। আর্থিক সমস্যায় গত দুই মাস খুব কষ্টে কেটেছে। আগামীকাল রাত ১২টার পর তাঁরা আবার মেঘনায় মাছ ধরা শুরু করবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ঘন য় মৎস য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও

কবির হোসেন (৩৬) ও তাঁর শ্বশুর সোলেমান মোল্লা (৫৫) মিলে বছর পাঁচেক আগে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেন। জামাতা-শ্বশুরের যৌথ অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় চলছে চায়ের দোকানটি। দুজনে মিলে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি করেন প্রায় ৩০০ কাপ দুধ-চা। প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার টাকার চা বিক্রি হয় দোকানটিতে।

নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন এখানে ‘খাঁটি দুধের চা’ পান করতে আসেন। গাভীর দুধ দিয়ে জামাতা-শ্বশুরের হাতের পরম যত্নে বানানো সুস্বাদু ওই দুধ-চা স্থানীয় লোকজনের কাছে বেশ সমাদৃত। দূর থেকেও অনেকে আসেন চা–পান করতে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘জামাই-শ্বশুরের’ চায়ের দোকান হিসেবে পরিচিত। দোকান থেকে উপার্জিত আয় দিয়েই চলছে তাঁদের সংসার।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের কলেজগেট এলাকায় চায়ের ওই দোকানের অবস্থান। জামাতা কবির হোসেনের বাড়ি উপজেলার পৈলপাড়া গ্রামে। কবিরের শ্বশুর সোলেমান মোল্লার বাড়ি উপজেলার নবকলস গ্রামে।

সম্প্রতি এক সকালে ওই চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। ছোট্ট পরিসরে সাজানো টুল-টেবিলে বসে চা–পান করতে করতে আড্ডা দিচ্ছেন তাঁরা। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তর্ক চলছে সেখানে। ক্রেতাদের চা পরিবেশনায় ব্যস্ত শ্বশুর-জামাতা।

কাজের ফাঁকে কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। কবির হোসেন বলেন, তাঁর একমাত্র শ্যালক মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর শ্বশুরের আর কোনো ছেলে না থাকায় তাঁকেই (কবির) ছেলে মনে করেন তিনি। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। এ জন্য শ্বশুরকেই বাবার আসনে বসিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে দুজনে মিলে ভাড়া করা এই চায়ের দোকানটি দিয়েছেন। নিজে সাতটি গাভী পালনপালন করেন। ওই গাভীর দুধ দিয়ে চা তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। তিনি ও তাঁর শ্বশুর পালা করে দোকানে বসেন এবং চা বিক্রি করেন। উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা শহর ও মতলব উত্তর উপজেলা থেকেও লোকজন এই দোকানে আসেন চা–পান করতে।

ক্রেতাদের হাতে দুধ-চা তুলে দিচ্ছেন কবির হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও