স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে চান?
Published: 29th, April 2025 GMT
শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার ওপর খাবারের ব্যাপক ভূমিকা আছে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে চাইলে ৮টি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে পারেন।
১. আপনার খাবারে উচ্চ ফাইবারযুক্ত স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট রাখতে পারেন। আপনার খাবারের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট থাকা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে আলু, রুটি, ভাত, পাস্তা জাতীয় খাবার। উচ্চ ফাইবার বা আটা জাতীয় খাবার বেছে নিন, যেমন আটা, বাদামী চাল বা খোসা ছাড়ানো আলু ইত্যাদি। সাদা বা পরিশোধিত স্টার্চি কার্বোহাইড্রেটের তুলনায় এগুলিতে বেশি ফাইবার থাকে এবং এটি আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা অনুভব করতে সাহায্য করতে পারে।
২.
আরো পড়ুন:
‘ড্রাই আই সিনড্রোম’ কেন হয়, করণীয় কী
গাড়িতে উঠলেই ‘মোশন সিকনেস’ হয়, কী করবেন
৩. মাছ প্রোটিনের একটি ভালো উৎস এবং এতে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার মাছ খান। যার মধ্যে কমপক্ষে ১ বার তৈলাক্ত মাছও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাট বেশি থাকে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
৪. আপনার খাদ্যতালিকায় কিছু চর্বি থাকা প্রয়োজন। তবে পরিমিত পরিমানে খেতে হবে। পুরুষদের দিনে ৩০ গ্রামের বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত নয়। মহিলাদের দিনে ২০ গ্রামের বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত নয়। ১১ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত।
৫. অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃদরোগ বা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এমনকি যদি আপনি আপনার খাবারে লবণ নাও যোগ করেন, তবুও আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাচ্ছেন। আপনি যে লবণ খান তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ খাবার কেনার সময় ইতিমধ্যেই থাকে, যেমন ব্রেকফাস্ট, স্যুপ, রুটি এবং সস ইত্যাদি। প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১১ বছর বা তার বেশি বয়সী শিশুদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি লবণ (প্রায় এক চা চামচ) খাওয়া উচিত নয়। ছোট বাচ্চাদের আরও কম খাওয়া উচিত।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি, নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। এটি আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা টাইপ ২ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা কমাতে পারে। প্রাপ্তবয়ষ্করা কম ক্যালোরি খাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
৭. প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। নন-অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করুন। কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং কম চিনিযুক্ত পানীয়, চা এবং কফি পান করতে পারেন। অধিক চিনিযুক্ত এবং ফিজি পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন, কারণ এগুলিতে ক্যালোরি বেশি থাকে। এগুলো দাঁতের জন্যও খারাপ। গরম আবহাওয়ায় বা ব্যায়াম করার পরে বেশি করে পানি পান করুন।
৮. কিছু মানুষ সকালের নাস্তা বাদ দেন কারণ তারা মনে করেন এটি তাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু ফাইবার সমৃদ্ধ এবং চর্বি, চিনি এবং লবণ কম থাকা একটি স্বাস্থ্যকর নাস্তা— সুষম খাদ্যের অংশ হতে পারে। যা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে সাহায্য করতে পারে।
সূত্র: এইএইচএস
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর আপন র খ প ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া থাকতে হবে নিয়মিত আয়ের উৎস। আর বিনিয়োগের ৬ মাসের আগে ঋণ পাবে না কোনো বিনিয়োগকারী। একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড এবং কোম্পানির হিসাবেও মার্জিন ঋণ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এসব সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ প্রসঙ্গে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্যরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান।
টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলেন, পুঁজিবাজার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে টাস্কফোর্স। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩ মাসের আগে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে, মার্জিন নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ হবে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সুশাসন না থাকায় বিপুল অংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীর পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুঁজিবাজার। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং মার্জিন খারাপ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা টাস্কফোর্সের মূল্য উদ্দেশ্য।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, অনেক স্টেকহোল্ডার দাবি করছেন তাদের সাথে বসা হয়নি। অথচ আমরা দেখলাম তাদের সাথে আমরা ৩ বারও বসে ফেলেছি। তবে কেন এরকম মিস কমিউনিকেশন। আমরা অংশীজনদের বাহিরেও যারা বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের সাথেও আমরা বসেছি। এরপরেও যদি মনে হয় আমরা কিছু বাদ দিয়েছি বা গ্যাপ ছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তা আমরা যুক্ত করে দিব। তবে অংশীজনদের থেকে বেশি আমরা সাধারণ মানুষদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে। যার কারণ বাজার অচল অবস্থায় চলে গেছে। সে অবস্থাটাকে মাথায় রেখে আমরা চিন্তা করেছি, এর অন্যতম কারণ হলো মার্জিন রুলস। কারণ মার্জিন রুলসটা যদি প্ল্যান করে দেওয়া হতো, গভর্নেন্সটা যদি সঠিক থাকতো, তাহলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি নাও হতে পারতো। তাই মার্জিন রুলসকে আমরা টপ প্রায়োরিটি আইটেম ধরেছি। পৃথিবীতে মার্জিন রুলসকে শর্টটার্ম ওয়ে হিসেবে নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ১:৩/৪ রেশিওতে মার্জিন ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ এগুলা কিভাবে হয়েছে? এরপর বাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্রিয়েট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এই জিনিসগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি বাজারে না হয়। মার্জিন নিয়ে আর গ্যামব্লিং করা যাবেনা। মার্জিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এতো পরিমাণ নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকলে বাজারের আজ এই পরিস্থিতি হতো না।
হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন বলেন, আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছে ফোকাস গ্রুপ। মূল কাজ করেছে টাস্কফোর্স। আমরা কাজ করতে যেয়ে পাবলিকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেও পেয়েছি, তবে পাবলিক থেকে পরামর্শ বেশি এসেছে। এটা খুব ভালো বিষয়। কারণ যত বেশি পরামর্শ আসবে, আমরা তত বেশি রিফাইন করার সুযোগ পাব।
সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকে আমার খুবই ভালো লাগছে যে, এই প্রথম বাংলাদেশে আইনি ফরমেশন করতে যাচ্ছি, যেখানে ব্রেইন স্টর্মিং ড্রাফটিং হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে। এ মার্কেটে যারা কাজ করেন, তাদের আইডিয়াগুলো নিয়েই ড্রাফট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসইসির ওয়ার্কিং টিমের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এছাড়া মার্কেটের বড় বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব নিয়ে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছি।
এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ