ভারতীয় বাংলা সিনেমার প্রশংসিত অভিনেতা-নির্মাতা অরিন্দম শীল। তার বিরুদ্ধে একাধিক নারী যৌন হেনস্তা, অশালীন আচরণের অভিযোগ করেছেন। মামলাও দায়ের করেছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে টানা আলোচনায় রয়েছেন ‘আবর্ত’ নির্মাতা। 

কয়েক দিন আগে অরিন্দম অভিযোগ করেন, টলিউডের অনেকে টাকার বিনিময়ে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন। তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি, সুদীপ্তা, বিদিপ্তা, বিরসা, রূপাঞ্জনা, দেবলীনাসহ অনেক তারকাই। এরপর অরিন্দমের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জোরালো হয়েছে। এই আগুনে সর্বশেষ ঘি ঢাললেন অরিন্দমের স্ত্রী তনুরুচি শীল।

বলে রাখা ভালো, ১৯৯২ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন অরিন্দম শীল-তনুরুচি। যদিও ১৯৯৯ সাল থেকে আলাদা থাকছেন তারা। আইনত এখনো তাদের ডিভোর্স হয়নি। মামলা চলমান। তবে অরিন্দম শীল এখন শুক্লা দাসের সঙ্গে থাকেন।

আরো পড়ুন:

মেয়েদের সবকিছুতেই জ্বালা: রাতাশ্রী

‘বন্ড সই’ দিয়ে হাসপাতাল থেকে শুটিংয়ে ফেরেন কাঞ্চন

অরিন্দমের অমানবিক আচরণের ঘটনা উল্লেখ করে তনুরুচি বলেন, “শুক্লা আর আমি একই অফিসে কাজ করতাম। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর জানতে পারি, শুক্লা আর অরিন্দম প্রেম করছে। ওরা আমার চোখের সামনে দিয়েই দার্জিলিং গেল। আমার বাবা তখন হঠাৎই মারা গেছেন, সেই সময় স্বামী পাশে থাকার কথা, তার বদলে উনি আমাকে তাড়িয়ে দিলেন।”

প্রাপ্য সম্পত্তি থেকেও স্ত্রীকে বঞ্চিত করেছেন অরিন্দম। তা জানিয়ে তনুরুচি বলেন, “আমাদের জয়েন্ট প্রপার্টি ছিল, সেটা ওরা এখনো দখল করে রেখেছে। অরিন্দমই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিল, সেই প্রক্রিয়া এখনো চলছে। কারণ আমার ওই জয়েন্ট প্রপার্টি নিয়ে মামলা চলছিল, সেটা প্রমাণিত যে ওই সম্পত্তির ৫০ শতাংশ মালিক আমি। তবে এখনো ওরা ওটা আমাকে দেয়নি। মাঝে অবশ্য করোনা গেছে। আমি খোরপোষ চাইনি। কারণ আমি চাকরি করতাম, ওদের কোনো অর্থ নিতে চাইও না। তবে আমার প্রাপ্যটা বুঝে নিতে চাই।”

অরিন্দম-শুক্লার ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তনুরুচি বলেন, “এতই যদি ওদের ভালোবাসা, তাহলে আবার কেন মিটু কেসে জড়াচ্ছে?”

গত বছর টলিউডের এক অভিনেত্রী অরিন্দমের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানানোর পর অরিন্দমকে ডিরেক্টর্স গিল্ড থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর অরিন্দমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী অভিনেত্রী। ২০২০ সালেও অরিন্দমের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছিলেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মৈত্র। ওই সময়ে এ অভিনেত্রী বলেছিলেন— “অরিন্দম শীল অত্যন্ত বদমাশ, বদ লোক।” তবে অরিন্দমের বর্তমান সঙ্গী শুক্লা দাসের দাবি, অরিন্দম ভালো মানুষ।

১৯৯৯ সালে ‘তুমি এলে তাই’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে অরিন্দম শীলের। একই বছর তিনি আরো তিনটি সিনেমায় অভিনয় করেন। এরপর অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই অভিনেতা।

তার আরেক পরিচয় তিনি একজন পরিচালক ও প্রযোজক। ২০১৩ সালে ‘আবর্ত’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালকের খাতায় নাম লেখান এই অভিনেতা। অভিনয়ে যেমন তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন তেমনি ‘এবার শবর’, ‘হর হর ব্যোমকেশ’, ‘স্বাদে আহ্লাদে’, ‘ঈগলের চোখ’ তৈরি করেও নির্মাতা হিসেবে জাত চিনিয়েছেন অরিন্দম শীল।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নিউজ প্রকাশের জেরে জাবি সাংবাদিককে হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছাত্রদলের অর্থ কেলেঙ্কারি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় জাগোনিউজ২৪.কম এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় শহীদ মিনার সংলগ্ন প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন করেন জাবিতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। এ সময় তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অপেশাদার শব্দচয়নের প্রতিবাদ করেন।

এতে জাবি সাংবাদিক সমিতির সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দসহ অনেকে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

আরো পড়ুন:

জাবিতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

জাবিতে অবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি

জাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক জনকণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ওয়াজহাতুল ইসলাম বলেন, “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা ছাত্র রাজনীতির মৌলিক সংস্কার এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হচ্ছে একজন সাংবাদিককে হুমকির প্রতিবাদ জানাতে। কোনো সংবাদে ত্রুটি থাকলে সেটি সংশোধনের জন্য যথাযথ প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তা না করে সংবাদপত্রের ওপর পেশিশক্তি প্রয়োগ করে প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলা ফ্যাসিস্ট আচরণের বহিঃপ্রকাশ।”

তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে যে অশোভন ও অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একটি বড় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন অপেশাদার আচরণ হলে, সারাদেশে থাকা অন্যান্য নেতাকর্মীদের আচরণ কেমন হবে তা নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। তাই প্রতিবাদ জানিয়ে বলছি, ছাত্রদল তাদের বক্তব্যের ভাষা সংশোধন এবং দলের অপকর্মের সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, “গত ১৫ বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা তাদের কলম চালিয়ে গেছে। আপনারা যারা নব্য ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠছেন, আপনাদের ভয়-ভীতি তাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর ছাত্রদল যে ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হস্তক্ষেপ।”

তিনি বলেন, “ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ যে বিবৃতি দিয়েছে তা অন্যান্য ইউনিটগুলোকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আরো উদ্বুদ্ধ করবে। তার সংবাদ প্রকাশের কোনো ধরনের ভুল থাকলে তার জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় না গিয়ে তাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়। আপনারা যদি ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চান, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধেও শিক্ষার্থীরা রুখে দাঁড়াবে।”

গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “আমাদের ভাই সাংবাদিক সৈকত ইসলাম ছাত্রদলের ভ্যাকসিন কর্মসূচি নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছিল, সে বিষয়ে অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে একটি বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছিল। সেই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সৈকত শুধু একা নয়। আমরা হাজার হাজার সৈকত এখনো বেঁচে আছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা সৈকতের পাশে আছি। শুধু সৈকত নয়, সব সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবসময়ই তাদের পাশে আছি।”

গত ২৪ এপ্রিল জাগোনিউজ২৪.কম-এ ‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন: ভাগ বাটোয়ারার দ্বন্দ্বে জাবিতে ছাত্রদলের ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিতের কারণ হিসেবে অর্থ বণ্টন নিয়ে শাখা ছাত্রদলের একজন যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং অনুদানের আড়ালে সাবেক এক আওয়ামী লীগ এমপিকে পুনর্বাসন চেষ্টার বিষয় উঠে আসে।

প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর থেকে সাব্বির আহমেদ নামে সময়ের আলোর জনৈক স্টাফ রিপোর্টার জাগোনিউজ২৪.কম এর জাবি প্রতিবেদক সৈকত ইসলামকে নানাভাবে জেরা করেন ও হুমকি দেন। পরে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পত্রিকা অফিসে চাপ প্রয়োগ করে প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়া হয় ও রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে অপেশাদার শব্দচয়ন করা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাবি প্রেসক্লাব, সাংবাদিক সমিতিসহ দেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিক সংগঠনগুলো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা
  • গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা শুরু
  • মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • মেয়েদের সবকিছুতেই জ্বালা: রাতাশ্রী
  • কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
  • নিউজ প্রকাশের জেরে জাবি সাংবাদিককে হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • নারী ও কন্যাশিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়
  • মার্জিন রুলসের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দির পুঁজিবাজার টাস্কফোর্স
  • সম্পর্কে এই ১০ আচরণ কখনোই সহ্য করবেন না