রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বহিষ্কৃত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীর হলের আসন বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার রাতে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

সিট বাতিল হওয়া চার শিক্ষার্থী হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মানিক চন্দ্র সেন, এস এম লাবু ইসলাম, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মেহেদী হাসান মিরাজ এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সেজান আহম্মেদ। তাঁরা প্রত্যেকেই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ মুখতার ইলাহী হলের আবাসিক ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভা, শৃঙ্খলা বোর্ড এবং শহীদ মুখতার ইলাহী হলের নীতিমালা-২০১৫ ও প্রভোস্ট বডির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁদের হলের সিট বাতিল করা হয়েছে।

শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট মো.

কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড, সিন্ডিকেট এবং হল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এই চার শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী তিন মাসের বেশি অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সিটও বাতিল হতে পারে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জিতেই ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী

সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। বিজয়ী ভাষণে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের নিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এটি কখনোই হবে না।”

তবে কানাডার সামনের দিনগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে বলে সমর্থকদের সতর্ক করেন তিনি। কার্নি বলেন, “কানাডার সামনে যা মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তা হবে কঠিন।”

প্রধান পরিবর্তনগুলো সবসময় উদ্বেগের হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে কানাডার সকল নাগরিকের প্রতি তার বিশ্বাস আছে বলে জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কার্নি বলেন, “কানাডার শক্তি নিহিত রয়েছে ঐক্য এবং একত্রে কাজ করার মধ্যে।” 

আরো পড়ুন:

ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের

ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮

তিনি বলেন, “আমরা ইতিহাসের মোড় ঘোরানোর মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের পুরোনো সম্পর্ক, যা ক্রমবর্ধমান একীকরণের উপর ভিত্তি করে তৈরি, তা শেষ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি উন্মুক্ত বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থার উপর কানাডা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে নির্ভর করে আসছে। এমন একটি ব্যবস্থা যা নিখুঁত না হলেও কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সাহায্য করেছে, তা শেষ হয়ে গেছে।”

কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “এগুলো ট্র্যাজেডি, কিন্তু এটি আমাদের নতুন বাস্তবতাও। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি। তবে আমাদের কখনই শিক্ষাগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমাদের নিজেদের যত্ন নিতে হবে এবং সর্বোপরি, আমাদের একে অপরের যত্ন নিতে হবে।”

আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন উল্লেখ করে কার্নি বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দুটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। 

তবে তিনি এটাও বলেন, “কানাডিয়ানদের জন্য সমৃদ্ধি গড়ে তোলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আমাদের কাছে আরও অনেক বিকল্প রয়েছে। এটি কানাডা এবং আমরাই সিদ্ধান্ত নেব এখানে কী ঘটবে।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কানাডায় সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করে টানা চতুর্থবার জয়ী হয়েছে লিবারেল পার্টি। একই সঙ্গে আবারো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) কানাডায় জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, হাউজ অব কমন্সে ৩৪৩টি আসনের মধ্যে অধিকাংশেই জয়ের মুখ দেখেছে কার্নির লিবারেল পার্টি। তবে সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পেরেছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ৩৪৩টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ১৭২টি আসন নিশ্চিত করতে হবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে সরকার গঠনে লিবারেল পার্টিকে কোনো ছোট দলের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।

সর্বশেষ ভোট গণনার তথ্য অনুযায়ী, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭ আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫ আসন। এছাড়া ব্লক কুইবেকোইস ২৩টি, নিউ ডেমোক্র্যাট পার্টি ৭টি এবং গ্রিন পার্টি ১টি আসন পেয়েছে। 

এদিকে কার্নির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত রক্ষণশীল নেতা পিয়েরে পোইলিভরে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং বলেছেন, কঠিন শিক্ষা হয়েছে।

মার্ক কার্নি, যিনি রাজনীতিতে একটি নতুন মুখ, তিনি আগে কখনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করার পর, তিনি গত মাসে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সোমবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির জয় এবং ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রমাণ করেছে যে, কানাডার জনগণ তাদের স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ