চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে চলতি বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট। এ বছর হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশি হজযাত্রী বহনকারী প্রথম বিমানটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাচ্ছেন ৫ হাজার ২০০ জন; আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ৮১ হাজার ৯০০ জন। এরইমধ্যে ৭৩ শতাংশ যাত্রীর ভিসা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের (১৪৪৬ হিজরি) হজ ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
অন্যান্যবারের মত এবারো সব হজযাত্রীর সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ফ্লাইট চলবে।
এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১১৮টি, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ৮০টি, আর ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইট চালাবে।
এরআগে সোমবার হজযাত্রীদের সেবা সহজীকরণের জন্য প্রস্তুতকৃত মোবাইল অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, “হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারেন সেজন্য এই অ্যাপ বিরাট ভূমিকা রাখবে।”
তিনি জানান, ধর্ম পালনে সহায়ক হওয়ায় এবং স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা ফিচার থাকায় এই অ্যাপ হাজীদের একাগ্রচিত্তে হজ পালনে মস্তবড় অবদান রাখবে।
চলতি বছর পবিত্র হজব্রত পালনের শুরু থেকে হজযাত্রীরা এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারলেও আগামী বছর থেকে যেন মানুষ হজে যাওয়ার চিন্তাভাবনার পর্যায় থেকে এই অ্যাপ ব্যবহার করে হজযাত্রাকে সহজ করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ বছরও বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া যাত্রীরা ‘মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের’ অধীনে সেবা পাবেন বলে জানিয়েছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো.
সৌদি ভিশন ২০৩০-এর অন্যতম কর্মসূচি ‘পিলগ্রিম এক্সপেরিয়েন্স প্রোগ্রামের’ অংশ হিসেবে মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়ন করছে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই উদ্যোগে বাংলাদেশ, মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক ও আইভরি কোস্ট- এই ৭টি দেশের ১১টি বিমানবন্দরে ডেডিকেটেড লাউঞ্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের লক্ষ্য সুবিধাভোগী দেশগুলো থেকে সৌদি আরবে হজযাত্রীদের জন্য উচ্চমানের পরিবহন পরিষেবা দেওয়া।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮জন হজযাত্রী নেওয়ার কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। তবে আগের বছরের মত এবারও প্রায় ৩৩ শতাংশ কোটা পূরণ হয়নি। ২০২৪ সালে হজে যান ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। এবার তা কিছুটা বেড়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই অ য প হজয ত র ফ ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জিতেই ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। বিজয়ী ভাষণে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের নিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এটি কখনোই হবে না।”
তবে কানাডার সামনের দিনগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে বলে সমর্থকদের সতর্ক করেন তিনি। কার্নি বলেন, “কানাডার সামনে যা মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তা হবে কঠিন।”
প্রধান পরিবর্তনগুলো সবসময় উদ্বেগের হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে কানাডার সকল নাগরিকের প্রতি তার বিশ্বাস আছে বলে জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কার্নি বলেন, “কানাডার শক্তি নিহিত রয়েছে ঐক্য এবং একত্রে কাজ করার মধ্যে।”
আরো পড়ুন:
ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮
তিনি বলেন, “আমরা ইতিহাসের মোড় ঘোরানোর মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের পুরোনো সম্পর্ক, যা ক্রমবর্ধমান একীকরণের উপর ভিত্তি করে তৈরি, তা শেষ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি উন্মুক্ত বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থার উপর কানাডা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে নির্ভর করে আসছে। এমন একটি ব্যবস্থা যা নিখুঁত না হলেও কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সাহায্য করেছে, তা শেষ হয়ে গেছে।”
কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “এগুলো ট্র্যাজেডি, কিন্তু এটি আমাদের নতুন বাস্তবতাও। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি। তবে আমাদের কখনই শিক্ষাগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমাদের নিজেদের যত্ন নিতে হবে এবং সর্বোপরি, আমাদের একে অপরের যত্ন নিতে হবে।”
আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন উল্লেখ করে কার্নি বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দুটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন।
তবে তিনি এটাও বলেন, “কানাডিয়ানদের জন্য সমৃদ্ধি গড়ে তোলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আমাদের কাছে আরও অনেক বিকল্প রয়েছে। এটি কানাডা এবং আমরাই সিদ্ধান্ত নেব এখানে কী ঘটবে।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কানাডায় সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করে টানা চতুর্থবার জয়ী হয়েছে লিবারেল পার্টি। একই সঙ্গে আবারো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) কানাডায় জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, হাউজ অব কমন্সে ৩৪৩টি আসনের মধ্যে অধিকাংশেই জয়ের মুখ দেখেছে কার্নির লিবারেল পার্টি। তবে সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পেরেছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ৩৪৩টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ১৭২টি আসন নিশ্চিত করতে হবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে সরকার গঠনে লিবারেল পার্টিকে কোনো ছোট দলের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।
সর্বশেষ ভোট গণনার তথ্য অনুযায়ী, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭ আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫ আসন। এছাড়া ব্লক কুইবেকোইস ২৩টি, নিউ ডেমোক্র্যাট পার্টি ৭টি এবং গ্রিন পার্টি ১টি আসন পেয়েছে।
এদিকে কার্নির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত রক্ষণশীল নেতা পিয়েরে পোইলিভরে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং বলেছেন, কঠিন শিক্ষা হয়েছে।
মার্ক কার্নি, যিনি রাজনীতিতে একটি নতুন মুখ, তিনি আগে কখনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করার পর, তিনি গত মাসে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সোমবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির জয় এবং ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রমাণ করেছে যে, কানাডার জনগণ তাদের স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ