ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী। মৌসুমী চ্যাটার্জি, মুনমুন সেন, দেবশ্রী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দা কাঁপিয়েছেন। যদিও প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, তাপস পাল কিংবা চিরঞ্জিতের সঙ্গে নায়কের দৌড়ে পেরে উঠেননি। তবে সহনায়ক কিংবা চরিত্রাভিনেতা হিসেবে মুঠো মুঠো ভালোবাসা কুড়িয়েছেন অর্জুন।

পরিচালক গুলজারের সহকারী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন অর্জুন। কিন্তু কলকাতায় ফিরে হয়ে যান পুরোদস্তুর অভিনেতা। যদিও পরবর্তীতে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাহিনি নিয়ে ‘টলিলাইটস’ সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন অর্জুন। কিন্তু এখন না অভিনয়, না নির্মাণ কোথাও দেখা নেই অর্জুন চক্রবর্তীর। কেন নেই সেই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে অর্জুন চক্রবর্তী বলেন, “এক সময় লোকের পেছনে অনেক তেল মেরেছি। কিন্তু আমার চোখেমুখে সেই তেল ফুটে উঠত। এই বয়সেও অভিনয়ের সুযোগ পেতে এখনকার পরিচালকদের তেল দিতে হবে! আবার সিনেমা পরিচালনা করতে গেলে নিত্যনতুন প্রযোজকদের তেল দিতে হবে। এখন এই বয়সে নিজেকে প্রমাণ করার আর কিছু নেই। তবু আমাদের ইন্ডাস্ট্রির এমনই অবস্থা। আর আমি ভীষণ অলস। এসব করার ইচ্ছা আর নেই।”

অভিনয়ে বা নির্মাণে না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে অর্জুন চক্রবর্তী বলেন, “এখনো মানুষ আমার ভুল ধরে। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে। সিনেমা কবে বানাব, তা আর ঠিক করিনি। লেখা চিত্রনাট্য অনেক পড়ে আছে। কিন্তু প্রযোজক পাচ্ছি না। আমার কাছে এত তেলের ভাণ্ডার নেই যে, সবাইকে তেল দেব। তাই আমাকে পর্দায় কম দেখছেন। এতদিন যা কাজ করেছি, আর কোনো কাজ না করলেও চলবে।”

১৯৮৩ সালে হিন্দি ভাষার ‘জারা সি জিন্দেগী’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন অর্জুন। বলিউডের এই সিনেমায় কমল হাসানের মতো তারকাদের সহশিল্পী হিসেবে পান। তিন বছর বিরতি নিয়ে বলিউডের ‘অঙ্কুশ’ সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন অর্জুন। ১৯৮৯ সালে মৃণাল সেন নির্মিত ‘এক দিন আচানক’ সিনেমায় অভিনয় করেন। একই বছর ‘প্রণামী তোমায়’ দিয়ে ভারতীয় বাংলা সিনেমায় পা রাখেন। এরপর অনেক সিনেমায় দেখা গেছে তাকে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জিতেই ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী

সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। বিজয়ী ভাষণে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের নিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এটি কখনোই হবে না।”

তবে কানাডার সামনের দিনগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে বলে সমর্থকদের সতর্ক করেন তিনি। কার্নি বলেন, “কানাডার সামনে যা মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তা হবে কঠিন।”

প্রধান পরিবর্তনগুলো সবসময় উদ্বেগের হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে কানাডার সকল নাগরিকের প্রতি তার বিশ্বাস আছে বলে জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কার্নি বলেন, “কানাডার শক্তি নিহিত রয়েছে ঐক্য এবং একত্রে কাজ করার মধ্যে।” 

আরো পড়ুন:

ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের

ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮

তিনি বলেন, “আমরা ইতিহাসের মোড় ঘোরানোর মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের পুরোনো সম্পর্ক, যা ক্রমবর্ধমান একীকরণের উপর ভিত্তি করে তৈরি, তা শেষ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি উন্মুক্ত বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থার উপর কানাডা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে নির্ভর করে আসছে। এমন একটি ব্যবস্থা যা নিখুঁত না হলেও কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সাহায্য করেছে, তা শেষ হয়ে গেছে।”

কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “এগুলো ট্র্যাজেডি, কিন্তু এটি আমাদের নতুন বাস্তবতাও। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি। তবে আমাদের কখনই শিক্ষাগুলো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমাদের নিজেদের যত্ন নিতে হবে এবং সর্বোপরি, আমাদের একে অপরের যত্ন নিতে হবে।”

আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন উল্লেখ করে কার্নি বলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দুটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। 

তবে তিনি এটাও বলেন, “কানাডিয়ানদের জন্য সমৃদ্ধি গড়ে তোলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আমাদের কাছে আরও অনেক বিকল্প রয়েছে। এটি কানাডা এবং আমরাই সিদ্ধান্ত নেব এখানে কী ঘটবে।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কানাডায় সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করে টানা চতুর্থবার জয়ী হয়েছে লিবারেল পার্টি। একই সঙ্গে আবারো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) কানাডায় জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, হাউজ অব কমন্সে ৩৪৩টি আসনের মধ্যে অধিকাংশেই জয়ের মুখ দেখেছে কার্নির লিবারেল পার্টি। তবে সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পেরেছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ৩৪৩টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ১৭২টি আসন নিশ্চিত করতে হবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে সরকার গঠনে লিবারেল পার্টিকে কোনো ছোট দলের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।

সর্বশেষ ভোট গণনার তথ্য অনুযায়ী, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭ আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫ আসন। এছাড়া ব্লক কুইবেকোইস ২৩টি, নিউ ডেমোক্র্যাট পার্টি ৭টি এবং গ্রিন পার্টি ১টি আসন পেয়েছে। 

এদিকে কার্নির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত রক্ষণশীল নেতা পিয়েরে পোইলিভরে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং বলেছেন, কঠিন শিক্ষা হয়েছে।

মার্ক কার্নি, যিনি রাজনীতিতে একটি নতুন মুখ, তিনি আগে কখনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করার পর, তিনি গত মাসে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সোমবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির জয় এবং ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রমাণ করেছে যে, কানাডার জনগণ তাদের স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ