সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা.

রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে। 

গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।  

পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা। 
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। 
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।  
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। 
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ তদন ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

পরবর্তী পোপ নির্বাচন কীভাবে

রোমান ক্যাথলিক চার্চের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বেছে নিতে রক্ষণশীল আর প্রগতিশীল কার্ডিনালদের তৎপরতা বেড়েছে। চলছে বিভিন্ন পর্যায়ের লবিং। প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ক্যাথলিকের নতুন নেতা বেছে নিতে ১৩৫ জন কার্ডিনাল সিস্টিন চ্যাপেলে গোপন বৈঠকে বসবেন। এবারের পোপ নির্বাচনের ফলাফল আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অনিশ্চিত।

এবারের বৈঠকে অংশ নেওয়া কার্ডিনালদের বেশির ভাগই আগে কোনো পোপ নির্বাচনে অংশ নেননি। তাদের ৮০ শতাংশই গত ১২ বছর পোপ ফ্রান্সিসের হাতে নিয়োগ পেয়েছেন। চার্চের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টায় ইরান, আলজেরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকা থেকে কার্ডিনাল নিয়োগ দেন পোপ ফ্রান্সিস। ফলে কার্ডিনাল কলেজে ইউরোপ-আমেরিকার একক আধিপত্য কিছুটা কমেছে। ২০১৩ সালে ইউরোপীয় কার্ডিনালের হার ছিল ৫০ শতাংশের বেশি, এখন যা নেমে এসেছে ৩৯ শতাংশে। এশিয়া আর লাতিন আমেরিকা থেকেও এখন ১৮ শতাংশ করে প্রতিনিধি আছেন।

পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের পর এখন রোমান ক্যাথলিক চার্চে চলছে ‘নোভেনদিয়ালি’ নামে ৯ দিনের আনুষ্ঠানিক শোক পালন। ভ্যাটিকানের নিয়ম অনুযায়ী, পোপের মৃত্যুর পর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কনক্লেভ শুরু করতে হয়। সব  কার্ডিনাল আগেভাগে পৌঁছে গেলে কনক্লেভ আগেও শুরু করা যায়। আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে কনক্লেভ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এরই মধ্যে ভ্যাটিকানের করিডোর, বাগান আর ডাইনিং রুমে শুরু হয়েছে গোপন আলোচনা আর লবিং।

কনক্লেভ শুরু হওয়ার পর দ্রুত প্রথম ভোট হবে। প্রতিদিন সকাল আর বিকেলে ভোট হবে, যতক্ষণ না কোনো প্রার্থী দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে জিতে যান। ১৩০০ শতকে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ কনক্লেভ চলেছিল ২ বছর ৯ মাস। দ্য গার্ডিয়ান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • দুই দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত
  • ‘বেগম’ রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা ধারণ করেছে
  • পরবর্তী পোপ নির্বাচন কীভাবে
  • ১৪ বছর আগের ঘটনায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
  • জুলাই আন্দোলনে শহীদ কন্যার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • রাজধানীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  • জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার