হারলে রাজস্থান রয়্যালসকে ছিটকে পড়তে হবে প্লে অফে ওঠার দৌড় থেকে। এমন ম্যাচে প্রতিপক্ষ আগে ব্যাটিংয়ে নেমে তুলেছে ৪ উইকেটে ২০৯ রান। রাজস্থানের ওপর চাপটা তাই অনেক বেশি ছিল। কিন্তু সেটা নাটকের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব যে এতটা জমজমাট হবে, তা কে জানত! ১৪ বছর বয়সী এক ছেলের ব্যাটের স্রেফ আগুন ঝরল, সেই আগুনের উত্তাপে রাজস্থানের ওপর জেঁকে বসা সব চাপ–টাপও যেন উবে গেল! কেউ কেউ বলছেন, বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটে আইপিএলের ইতিহাসেই অন্যতম অবিশ্বাস্য এক ইনিংসের জন্ম হলো!

১১ ছক্কা ও ৭ চারে ৩৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলা বৈভব ১১.

৫ ওভারে যখন গুজরাট টাইটানসের পেসার প্রসিদ্ধ কৃঞ্চার বলে আউট হলেন, জয়ের জন্য ৪১ বলে রাজস্থানের প্রয়োজন ৫২ রান। হাতে ৯ উইকেট। রানের পাহাড় ডিঙিয়ে জয় তুলে আনার খুব কঠিন কাজটা মাত্র ১৪ বছর ৩২ দিন বয়সী বৈভবের ব্যাটে রাজস্থানের জন্য ততক্ষণে সহজ হয়ে এসেছে। যশস্বী জয়সোয়াল ও রিয়ান পরাগের তৃতীয় উইকেটে ২০ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রাজস্থান শেষ পর্যন্ত জিতেছে ৮ উইকেটে, ২৫ বল হাতে রেখে।

দুই শর বেশি রান তাড়া করতে নেমে ৪ ওভারের বেশি বল হাতে রেখে রাজস্থানের এই দুর্দান্ত জয়ের শিরোনাম হতে পারে একটাই—বৈভবের আগুনে পুড়ল গুজরাট। তা নয় তো কী! ইনিংসের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে খুলেছেন নিজের রানের খাতা। ইশান্ত শর্মার করা চতুর্থ ওভারে ওঠা ২৮ রানের ২৬ এসেছে বৈভবের ব্যাট থেকে। ফিফটি তুলেছেন ১৭ বলে, যেটা আইপিএলের এ মৌসুমে দ্রুততমও।

১০ম ওভারে গুজরাট পেসার করিম জানাতের কাছ থেকে একাই তুলেছেন ৩০ রান। পরের ওভারেই দ্বিতীয় বলে রশিদ খানকে ছক্কা মেরে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেন বৈভব। ৩৫ বলে ১০০! আইপিএলে বৈভবের চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি আছে শুধু ক্রিস গেইলের। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০ বলে। তারপর এই এক যুগে গেইলের মতো বিস্ফোরক ইনিংসের কাছাকাছি কেউ যেতে পারেননি, যেটা আজ পারলেন কি না এক ১৪ বছর বয়সী!

শুধু কী তাই, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় খেলতে নামা বৈভব এখন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান। ২০০৯ সালে ১৯ বছর ২৫৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করা মনীশ পাণ্ডের রেকর্ডটি এখন বৈভবের। ছেলেদের টি–টোয়েন্টিতে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সেঞ্চুরির রেকর্ডও এখন তার। ২০১৩ সালে সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ১৮ বছর ১১৮ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করা ভিজয় জোলের রেকর্ডটি এখন বৈভবের।

গুজরাটের বোলারদের জন্য আজকের ম্যাচটি স্রেফ ভুলে যাওয়ার। ওপেনিং জুটিতেই ১৬৬ রান তুলেছেন বৈভব ও জয়সোয়াল। ৪০ বলে ৭০ রানে অপরাজিত জয়সোয়াল শেষ পর্যন্ত ছিলেন। ২ ছক্কা ও ৯ চারে ১৭৫ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা জয়সোয়ালকেও বৈভবের সামনে কেমন ম্লান লেগেছে। কারণ বৈভবের ইনিংসের স্ট্রাইকরেট যে ২৬৫.৭৮! ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইয়ান বিশপের সেই কথাটা স্মরণ করে তাই লিখেছেন, ‘বৈভব সূর্যবংশী—রিমেম্বার দ্য নেম!’পরাগ অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ৩২ রানে।

জয়পুরের মানসিংহ স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা গুজরাটের হয়ে ৫০ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক শুবমান গিল। ২৬ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন জস বাটলার। তবে বৈভব যে ইনিংস খেলেছে তাতে আজ বাকি সবাই যেন ম্লান। প্রশংসা এসেছে তার প্রতিপক্ষ শিবির থেকেও। গুজরাট অধিনায়ক শুবমান যেমন বলেছেন, ‘দিনটা সূর্যবংশীর ছিল। আইপিএলে আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস।’

বিস্তারিত আসছে...।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জয়স য় ল ১৪ বছর র কর ড উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি

জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া দেশের সব সচল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই জানিয়েছেন সমিতিটি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারা দেশে সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তবে ২০১৩ সালের গেজেট মূলে ২০১২ সালের মে মাসে সারা দেশে ৩০ হাজার ৩৫২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।

আরো পড়ুন:

পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতায় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন: উপদেষ্টা

তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের মে মাসের আগে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করে রাখা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে হবে বলে জোর দাবি তোলেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সব শর্ত পূরণ করার পরেও ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা ও জেলায় যাচাই-বাচাই করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ করা আছে।

জাতীয়করণকালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতার সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সতিমির নেতারা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান পরিচালনা করলেও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা শিক্ষকরা মানবেতর যীবন যাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে জ্ঞানের আলো দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থা দূর করতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় সুকৌশলে বাদ দেয়। এই বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বদরবারে তারা আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে সারা দেশের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিফিনসহ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে; সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।”

মানববন্ধনে সারা দেশ থেকে আসা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের দেখা যায়।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি