আমরা গাজায় পরিণত হতে চাই না, রাখাইনের জন্য করিডোর ইস্যুতে মির্জা ফখরুল
Published: 28th, April 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আরাকানদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য যে করিডোর তৈরি করার সিদ্ধান্ত, সেটি সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া উচিত ছিল। সরকারের দায়িত্ব ছিল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা। কারণ আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে এমনিতেই সমস্যায় আছি, আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, আমরা গাজায় পরিণত হতে চাই না।
সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নে গণসংযোগ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশের মানুষ তাদের নিজস্ব সরকার দেখতে চায়। বর্তমানে এমপি নেই, সমস্যা হলে কার কাছে যাবেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানরা সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন না। এজন্য আমরা বারবার করে বলছি, সংস্কারটা হউক, নির্বাচনটাও হউক।
তিনি বলেন, নির্বাচনটা বাংলাদেশে খুব দরকার। এই কাজগুলো যদি আমরা না করতে পারি, তাহলে হবে না। আমরা আশা করবো, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা বলেছে যে, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে থেকে জুনের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা বলি এভাবে না বলে পরিষ্কার করে বলেন- নির্বাচনটা কখন হবে, রোডম্যাপ দেন। রোডম্যাপ দিলেই মানুষ আশ্বস্ত হবে।
স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছরে আপনাদের সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয়েছে, কারণ আপনারা সবাই জানেন। এই ১৫ বছর আমাদের শান্তিতে থাকতে দেয়নি। প্রায় ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বড় খোচাবাড়ীতে আমাদের এক ভাইয়ের হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় আমরা কেউ এ এলাকায় ঢুকতে পারিনি। তারা আমাদের গাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছে, আমাদের রাস্তা গাছ ফেলে বন্ধ করে দিয়েছিল, যাতে করে আমরা আপনাদের কাছে আসতে না পারি। নির্বাচন করতে না পারি। গত ১৫ বছরে আপনারা ভোট দিতে পারেনি, নতুন ছেলেরা তো পারেইনি। এই ১৫ বছরে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। ব্যাংকগুলো লুট করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তাগুলো দিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। এগুলোর নাম করে তারা অনেক টাকা নিয়ে চলে গেছে। বিএনপির যদি গন্ধ পেয়েছে কোথাও তার চাকরি হয়নি। ব্যবসা বাণিজ্য হয়নি, চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। পরে এ দেশের মানুষ অস্থির হয়ে, জীবন দিয়ে তারা হাসিনাকে তাড়িয়েছে। আপনারা দেখেছেন, মানুষ কোনো কিছুকে ভয় পায়নি ওই দিনগুলোতে। তারা শুধু সামনের দিকে ছুটে গেছে। আপনাদের বিরুদ্ধেও অনেক মামলা হয়েছে, অনেকে জেলেও গেছেন। আপনাদের একমাত্র অপরাধ ছিল, আপনারা বিএনপি করেছেন।
শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সরকার যা করা দরকার তা করেছিল। সারাদেশ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়, সে কারণে বেশি সময় পাইনা আপনাদের মাঝে আসার। ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষ ১৫ বছর উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছি। চাকরি, কৃষকের ন্যায্য পাওনা থেকে, শ্রমিক ভাইয়ের পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আগামীতে যদি আমরা নির্বাচিত হতে পারি, আমরা সবার আগে নতুন কর্মসংস্থানের দিকে গুরুত্ব দেবো। চাকরির দিকে গুরুত্ব দেবো। আমাদের যুবক-তরুণ ছেলে মেয়েরা যে চাকরি পায় না তারা যেনো চাকরি পায় সে ব্যবস্থা আমরা সবার আগে করবো।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র আপন দ র ব এনপ র ১৫ বছর র জন য আম দ র ফখর ল আপন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় দুই মাসে ২১৩ শ্রমিকের মৃত্যু
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। এ ছাড়াও নির্মাণ খাতে ৭ জন ও পোশাক খাতে ৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এই দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে আহত হয়েছেন ১৭০ জন।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে উল্লিখিত তিনটি খাতের বাইরে অন্যান্য খাতে ২১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া একই সময়ে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে ছিলেন ৭০ জন পরিবহন খাতের, ১৮ জন নির্মাণ খাতের এবং ১২ জন পোশাক খাতের। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্যান্য খাতের ৭০ জন শ্রমিক। জাতীয় দৈনিকগুলোয় প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে বিলস এ জরিপ পরিচালনা করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবছর ২৮ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক স্মৃতি দিবস পালিত হয়। যেখানে কর্মক্ষেত্রে নিহত, পঙ্গু, আহত বা অসুস্থ হওয়া শ্রমিকদের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশেও গতকাল দিবসটি পালিত হয়েছে।