সূর্যবংশী বৈভবের বয়স নিয়ে সন্দেহ আছে। কাগজে-কলমে তার বয়স ১৪ বছর ৩২ দিন। বয়স কমালে কতই বা কমিয়েছেন তিনি? দুই বছর? তবু তো ১৬! ওই বয়সেই আইপিএলের রেকর্ড এলোমেলো করে দেওয়া এক সেঞ্চুরি করেছেন রাজস্থান রয়েলসে খেলা এই ওপেনার। 

গুজরাট টাইটান্সের ২১০ রান তাড়া করতে নেমে তরুণ এই ব্যাটার মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তাও আবার তার খেলতে নামা তৃতীয় আইপিএল ম্যাচে। ৩৫ বলে করা তার এই সেঞ্চুরি আইপিএলের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। 

বৈভবের ব্যাটিংয়ের সময় মনে হচ্ছিল ক্রিস গেইলের ঝড়ো সেঞ্চুরির রেকর্ড তিনি ভেঙে দেবেন। আইপিএলে মাত্র ৩০ বলে সেঞ্চুরির কীর্তি আছে তার। দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ইউসুফ পাঠানের দখলে ছিল। তিনি ৩৭ বলে শতক ছুঁয়েছিলেন। 

বৈভব তার চেয়ে দুই বল কম খেলে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। শতরানের ইনিংস খেলার পথে ১১টি ছক্কা তোলেন এই তরুণ। চার মারেন সাতটি। শেষ পর্যন্ত আউট হন ৩৮ বলে ১০১ রান করেই। 

দুর্দান্ত এই সেঞ্চুরির পথে বৈভব ইনিংসের চতুর্থ ওভারে অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মাকে তিনটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন। অর্থাৎ পাঁচ বলে বাউন্ডারি হাঁকান এই তরুণ। ইশান্ত ওই ওভারে দেন ২৮ রান। পরের ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের তিন বল খেলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন তিনি। 

দশম ওভারে করিম জানাতের ৬ বলেই বাউন্ডারি হাঁকান ১৪ বছরের বৈভব। ওই ওভারে তিন ছক্কা ও তিন চার মারেন। তুলে নেন ৩০ রান। ১১তম ওভারে রশিদ খানকে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। আইপিএলের সব চেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে নিলামে উঠে ও দল পেয়ে আগেই রেকর্ড গড়েছেন তিনি। সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএল খেলে রেকর্ড দখলে নিয়েছেন। এবার সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডও করে ফেলেছেন বৈভব। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

আবহাওয়ার বিরূপ আচরণের প্রভাব পুরো দেশে। ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে কাঠফাটা রোদ। গরমে অস্বস্তিতে মানুষ। ঠিক উল্টো চিত্র উত্তরাঞ্চল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলায়। বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা ভেঙে বন্ধ হয়েছে রাস্তাঘাট। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। ঝড়বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন তিনজন।
আবহাওয়াবিদরা কোথাও বৃষ্টি, কোথাও গরমকে আবহাওয়ার ‘হেঁয়ালি আচরণ’ হিসেবে দেখেছেন। তারা বলছেন, কোথাও বৃষ্টি, কোথাও খরা। গরমের সময় হঠাৎ বৃষ্টি। আবার শীতকালে নামছেই না পারদ। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের অশনিসংকেত।

কালবৈশাখীতে রংপুরের কয়েকটি উপজেলার বেশ কিছু এলাকার বাড়িঘর-ফসল তছনছ হয়ে গেছে। গাছ উপড়ে ও ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে এ ঝড় শুরু হয়। প্রায় ৩০ মিনিটের এই ঝড়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তারাগঞ্জ, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলায়। এ ছাড়া রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গঙ্গাচড়ায় কালবৈশাখীতে ৯টি ইউনিয়নের কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি তছনছ হয়েছে। উপড়ে গেছে গাছপালা। খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ। নষ্ট হয়েছে ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত।

কালবৈশাখীতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া এই ঝড় প্রায় আধা ঘণ্টা সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে তাণ্ডব চালায়। স্থানীয়রা জানান, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ধান, ভুট্টা, আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর জেলার কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। অনেক এলাকায় সড়কের ওপর গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা গাছ সরিয়ে যান চলাচল সচল করেন। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কালবৈশাখীতে বড়ভিটা বাজারের ১৪ দোকানপাট লন্ডভন্ড হয়েছে। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের। 
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, কালবৈশাখীর ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে বলা যাবে।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় শনিবার রাতে কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আধা ঘণ্টা ধরে চলা শিলাবৃষ্টিতে টিনের চাল ফুটো হয়ে যায় এবং অসংখ্য কাঁচা ঘর ভেঙে পড়ে। ধানগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ঝড়ে বহু বাড়ির চাল উড়ে গেছে। অনেক ঘর সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। আশ্রয়ের অভাবে বহু পরিবার রাত কাটিয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
রোববার সকালে বরগুনার আমতলীতে মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে রিপন হাওলাদার নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এদিন দুপুরে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চরফলকন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে শাহানাজ বেগম কনা নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নোয়াখালী সদর উপজেলায় বজ্রপাতে আবুল কালাম কালা নামে এক দিনমজুর প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার জালিয়াল গ্রামের দালাল বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার ঝড়ে ফসল, বিশেষ করে ভুট্টা, বোরো ধান এবং শাকসবজি তছনছ হয়ে গেছে। এ ছাড়া এলাকার বেশ কিছু টিনের ঘর এবং কয়েক হাজার গাছপালা উপড়ে পড়ে। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকালের সংশ্লিষ্ট অফিস ও প্রতিনিধিরা]
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
  • কুড়িগ্রামে কালবৈশাখীর তাণ্ডব