২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের
Published: 28th, April 2025 GMT
দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।
আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।
রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ণ আরএফএল গ র প উৎপ দ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
উত্তরবঙ্গের কোন জেলায় বেড়াতে যাচ্ছেন? জেনে রাখুন এই অঞ্চলের প্রাচীন স্থাপত্য আর নিদর্শনের খোঁজ
‘আপা, এখনো জাদুঘরে?’
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের এক কর্মকর্তার প্রশ্নে সংবিৎ ফিরে পাই। তাই তো, সেই কখন ঢুকেছি! ঘড়িতে দেখি, প্রায় চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। অথচ এখনো অনেক কিছু দেখা বাকি!
২০২৪–এর ডিসেম্বরের শুরুতে গিয়েছিলাম রাজশাহী। জাদুঘরটি ঘুরে মনে হলো, বাংলাদেশের জাদুঘরটি শুধু প্রতিষ্ঠার দিক থেকেই প্রথম নয়, প্রত্নসম্পদ ও সমৃদ্ধিতেও সেরা। হবে নাই–বা কেন। রাজশাহীর ইতিহাস কি আজকের! রেশম চাষে রাজশাহীর খ্যাতি একসময় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। রেশম চাষের জন্য আঠারো শতকের দিকে এই অঞ্চলে এসেছিল ওলন্দাজরা। রাজশাহী শহর ও শহর থেকে অদূরে সারদা পুলিশ একাডেমিতে ডাচ স্থাপত্যের অল্প কিছু নিদর্শন এখনো রয়ে গেছে। আছে ফরাসি নীলকুঠি, ইংরেজ নীলকুঠির কিছু ভবন। মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া রাজবাড়ি দেখে যেকোনো পর্যটকই আপ্লুত হবেন। তবে রাজশাহী নগরীর পুরোনো খ্রিষ্টান সমাধিভূমি দেখতে ভুলবেন না।
রাজশাহীর মতো উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলাই ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। আর আমার কাছে তো গোটা উত্তরবঙ্গই বাংলাদেশের ‘হেরিটেজ জোন’। কী নেই এই অঞ্চলে—প্রাচীন নগরী, শত শত বছরের পুরোনো উপাসনালয়, আদি আমলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শাসকদের স্থাপনা।
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় দুই বিঘা জমিজুড়ে রয়েছে এই লতা সূর্যপুরী আমগাছ