কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
Published: 28th, April 2025 GMT
কোনো মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনো মহামানব কোনো দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব.
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স থ য় কম ট র সদস য গণতন ত র উপস থ ত ব এনপ র জনগণ র ন র জন র জন য সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের
‘দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। পাশাপাশি অবিলম্বে উচ্চ আদালত এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণেরও দাবি জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আজ রোববার দুপুরে ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
পাশাপাশি দাবি পূরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ দেশের প্রতিটি জেলা আইনজীবী সমিতিতে আগামী ২৯ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ফোরাম। আর দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দকরণ এবং ফ্যাসিবাদের দোসর উচ্চ ও নিম্ন আদালতের দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারকদের অপসারণ দাবিতে’ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষায় আমরা অবিলম্বে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও দলবাজ বিচারকদের অপসারণ দাবি করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
দেশে যত গুম ও খুন, যা কিছু হয়েছে, সব কিছুর মূল হোতা হচ্ছেন খায়রুল হক—এ কথা উল্লেখ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘কাজেই তাঁর বিচার অবশ্যই হতে হবে। না হলে জনগণ তাঁর বিচার করবে অবশ্যই। এ লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
২৯ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশ
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের পর কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি বলেন, ‘মূলত যে দাবিটা করছি, গণতন্ত্র হত্যাকারী, দেশের গুম–খুন–হত্যার অন্যতম নায়ক সাবেক প্রধান বিচারপতির (খায়রুল হক) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আইনজীবী সমাজসহ দেশের মানুষ চায়। কারণ, বিচারকের আসনে বসে তিনি যে দেশের প্রতি অবিচার করেছেন, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে আরেকজন খায়রুল হকের জন্ম হয়তো বা হতে পারে। যে কারণে খায়রুল হকের বিচার এমন হওয়া উচিত, যেন ভবিষ্যতে আর নতুন কোনো খায়রুল হক বিচারাঙ্গনে সৃষ্টি না হয়। সেই লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী ফোরামে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হচ্ছে ২৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ সারা দেশের আইনজীবী সমিতিতে বিক্ষোভ কর্মর্সূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনতিবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে প্রত্যাশা করছি। অন্যথায় আইনজীবী ফোরাম আইনজীবী সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।’
লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল। অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। অথচ তাঁর বিচার বাংলাদেশের জনগণের গণদাবি। এ ক্ষেত্রে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগই এখন পর্যন্ত নেয়নি।
‘শেখ হাসিনার মতোই দোষী হচ্ছেন খায়রুল হক’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ফোরামের মহাসচিব আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘আমরা মনে করছি, আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন না বলে খায়রুল হক সাহেবকে এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। যে কারণে বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন।…শেখ হাসিনার মতোই দোষী হচ্ছেন খায়রুল হক। তাঁর হাত দিয়েই জুডিশিয়াল ক্যুর মাধ্যমে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’
কায়সার কামাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্র হত্যার জন্য যেভাবে দায়ী, ঠিক তেমনিভাবে খায়রুল হক সাহেবও দায়ী। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত তাঁকে আইনের আওতায় আনার কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সহসভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক এম বদরুদ্দোজা বাদল, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আলী, শহীদুজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মাহবুব, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম।