তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম
Published: 28th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম টেস্টে আজ প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেনতাইজুল ইসলাম। টেস্টে এ নিয়ে ১৬তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাইজুলের প্রশংসা করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন তামিম ইকবাল।
আরও পড়ুনতাইজুলের মনে হয় না তারা খেলা বোঝে১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের পেজে তাইজুলের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত (আন্ডাররেটেড) বোলার। এখন খেলা অন্য বোলারদের পরিসংখ্যান দেখুন, তাহলে আমার কথাটা বুঝতে পারবেন। আরেকবার ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ খেলেছ তাইজুল।’
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ও ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেক তাইজুলের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ২০১৯ সালে। ওয়ানডে (২০) ও টি-টোয়েন্টির (২) চেয়ে টেস্ট ম্যাচই (৫২) বেশি খেলেন তাইজুল। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে প্রথম দিনের পারফরম্যান্সসহ মোট ৫৩ টেস্টে এ পর্যন্ত ২২৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তাঁর টেস্ট সংস্করণের পারফরম্যান্সটা যাচাই করে দেখা যায়।
এখনো যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের। অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের সময় থেকে লায়নের পারফরম্যান্স— ১০৩ টেস্টে ২৯.
ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন। টেস্টে তার অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেক থেকে এই সংস্করণে ৮৫ ম্যাচে ২২.৮৪ গড়ে ৪৩০ উইকেট নেন অশ্বিন। এ সময়ে ২৮ বার পেয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও বেশি বেশি টেস্ট খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে তাইজুলের তুলনায় বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন।
ভারতের আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। তাইজুলের অভিষেকের দুই বছর আগে টেস্টে অভিষেক জাদেজার। তাইজুলের অভিষেকের সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ টেস্টে ২৭৮ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। তবে তাঁর চেয়ে এ সময়ে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। জাদেজা এ সময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার, তাইজুল নিয়েছেন ১৬ বার।
তাইজুল ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক নাজমুলউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইক ট ন য় ছ ন ৫ উইক ট ন ত ইজ ল র প রথম এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
নতজানু বিসিবির ‘নৈতিক’ পরাজয়
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স ভালো হয়নি। সিলেটে প্রথম টেস্ট হেরে সমালোচনার মুখে ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে যখন কাটাছেঁড়া হওয়ার কথা, তখন তা আড়াল করতে কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্ম দিয়েছে বিসিবি।
মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলছে নাটক। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের বাইলজ পরিবর্তন করে হৃদয়কে খেলার সুযোগ করে দিয়ে মোহামেডানকে অন্যায় সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমানের এ অনিয়মের প্রতিবাদে টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনি পদত্যাগ করেছেন। প্রতিবাদস্বরূপ আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতও বিসিবির চাকরি ছেড়েছেন।
এ দুই ঘটনায় সমালোচনার মুখে হৃদয়ের শাস্তি পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার। ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই সেখান থেকেও সরে এসেছে বিসিবি। তামিম ইকবালদের চাপে হৃদয়ের শাস্তি এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে!
আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু জানান, আগামী ডিপিএলে কার্যকর হবে হৃদয়ের এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা। মোহামেডান ও হৃদয়কে সুবিধা দিতে গিয়ে বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনার জন্ম দিল বিসিবি।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের নেতৃত্বে গতকাল সকাল থেকেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জড়ো হতে থাকেন ক্রিকেটাররা। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে প্রতিবাদ ও নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে একজোট হন তারা। সভায় ফারুকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ ও টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার।
ফাহিম জানান, সভায় উপস্থিত ক্রিকেটারদের দাবি-দাওয়া ছিল– তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি সুপার লিগে পুনর্বহাল করার বিরুদ্ধে। তামিম ও হৃদয় মোহামেডানের ক্রিকেটার। সুপার লিগে হৃদয়কে মোহামেডানের হয়ে বাকি দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দিতেই ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে মিটিং করেন। বিসিবি কর্তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সফলও হন তারা।
মোহামেডানের পর ক্রিকেটারদের চাপে নতিস্বীকার বিসিবির নৈতিক পরাজয় কিনা জানতে চাওয়া হলে ফাহিম বলেন, ‘যে সিদ্ধান্ত লিখিত নিয়মের বাইরে যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক। আগের ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হলো। পরপর দুটি ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, সেটা না করে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া ছিল ভুল এবং অনিয়ম। আবার সেখান থেকে সরে এলে ক্রিকেটাররাও সুযোগ পেয়েছে বিসিবির ভুল ধরার। আমাদের ব্যর্থতার কারণেই এতকিছু হতে পেরেছে।’
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তামিম বলেন, ‘তার (হৃদয়ের) যে শাস্তিটা ছিল, সেটা কিন্তু সে ভোগ করেছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর কাল (বৃহস্পতিবার) শুনলাম, তাকে আবার বহিষ্কার করেছে। এটা কোন আইনে, কীভাবে করেছে, এটা আমার জানা নেই। এটা খুবই হাস্যকর, কোনোভাবেই সে আবার বহিষ্কার হতে পারে না। যাকে বিসিবি দুই ম্যাচ খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার কীভাবে বহিষ্কার করে?’
মোহামেডানকে অনৈতিক সুবিধা দিতে গিয়ে হযবরল করে ফেলে আম্পায়ার্স বিভাগ। বিসিবির জন্য যেটা নৈতিক পরাজয় বলে মনে করেন ফাহিম, ‘কিছুটা তো বটেই। এ রকম একট পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে, কোনো কোনো স্টেকহোল্ডার চাপ প্রয়োগ করে যার যার কাজ আদায় করে নিতে পারে। এটা খুবই দুঃখজনক, এমন একটা পরিবেশের মধ্য আমাদের যেতে হচ্ছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে এখান থেকে বেরিয়া আসার।’