টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস এবং কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংসের সর্বশেষ তথ্য বলছে, পৃথিবীর সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব কটিই ধনী বা উন্নত দেশে অবস্থিত।

আরও সহজ করে বললে, যারাই আর্থিক, সামরিক কিংবা প্রযুক্তিগতভাবে বিশ্বে মোড়লিপনা করে, সেসব দেশেই সেরা সেরা বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

এখন প্রশ্ন হলো, সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি ধনী দেশে, নাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওই সব দেশকে ধনী বানিয়েছে?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও গুরুত্বকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিচ্ছিন্ন জ্ঞান উৎপাদনকেন্দ্র নয়; বরং এটি একটি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর গভীরে প্রোথিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি।

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড, এমআইটি বা স্ট্যানফোর্ড, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ কিংবা সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ—এসব বিশ্ববিদ্যালয় একাধারে গবেষণা, উদ্ভাবন ও অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুনবৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ: সরকারি বনাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১১ নভেম্বর ২০২২

অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নশীল কিংবা গরিব দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিছু ব্যতিক্রম বাদে এখনো মূলত ডিগ্রি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছে।

এখানেই উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নীতিগত, কাঠামোগত ও প্রভাবের মূল্য পার্থক্য, যা কেবল শিক্ষার গুণমানে নয়; বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ও দেশের আর্থিক সক্ষমতার এক প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষার সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক নিয়ে পৃথিবীতে অনেক গবেষণা হয়েছে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চশিক্ষা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে একটি সুদৃঢ় পজিটিভ কো-রিলেশন আছে; অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোয়ালিটি এডুকেশন বাড়লে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ে।

তবে এই সম্পর্ক সব সময় সরলরৈখিক নয়; বরং বহুবিধ উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। যেমন ভ্যালেরো ও ভ্যান রিনেন (২০১৯) তাঁদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়লে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মাথাপিছু জিডিপি শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ হারে বাড়ে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র‍্যাঙ্কিংয়ে কেন পিছিয়ে ০৪ মে ২০২৪

এই সম্পর্ক শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে না; বরং গবেষণার গুণমান, প্রযুক্তি স্থানান্তরের কার্যকারিতা ও স্থানীয় শিল্পের সঙ্গে সংযুক্তির ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে গত দুই দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

কিন্তু সেগুলো আসলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখছে, সে বিষয়ে কি আমাদের আদৌ কোনো গবেষণা আছে?

আমরা কি স্থানীয় শিল্পের সঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংযোগ করতে পেরেছি?

অথচ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব অনেক। আগাসিসটি ও পেটরেনকো (২০২৪) ১৯৮৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে প্রকাশিত ১৫০টি গবেষণা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে ‘ইফেকটিভ’ ও ‘ইফিশিয়েন্ট’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপস্থিতি অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি প্রধান সূচক হিসেবে কাজ করে।

দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবন, নীতিনির্ধারণ এবং জ্ঞান স্থানান্তরের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপনি এই তত্ত্বের পুরোপুরি চিত্রায়ণ হতাশাজনক। কারণ, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশেই মানসম্মত গবেষণা নেই।

টিএইচই বা কিউএসের মতো আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে নেই কোনো ভালো অবস্থান। জাতীয় ও বৈশ্বিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং প্রাত্যহিক, ব্যবহারিক ও প্রয়োগিক ক্ষেত্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংযোগ গতি এখনো মন্থর।

হুসাইনি (২০২০) তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষার গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও (জিইআর) এবং মাথাপিছু জিডিপির মধ্যে একটি ইতিবাচক দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক রয়েছে।

কিন্তু এই সম্ভাবনা কাঠামোগত দুর্বলতা, বাজেট–ঘাটতি এবং নীতিনির্ধারণে অগ্রাধিকারের অভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিত্র আরও বেদনাদায়ক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী ডিগ্রি সনদ দিচ্ছে।

কিন্তু শ্রমবাজারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার বাস্তবিক ও প্রায়োগিক পার্থক্য থাকার কারণে তাদের একটি বড় অংশ শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। ফলে দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।

আরও পড়ুনকেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিযোগিতামূলক র‍্যাঙ্কিং দরকার২০ জানুয়ারি ২০২২

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মানোন্নয়ন না হওয়ার পেছনে কিন্তু রাষ্ট্রের দায় কম নয়। কেননা, এখনো আমাদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি বিনিয়োগের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

ইউনেসকো ও ইউএনডিপির সুপারিশ অনুসারে, জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষায় ব্যয় করা উচিত হলেও বাংলাদেশসহ অধিকাংশ দক্ষিণ এশীয় দেশ ৩-৪ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

গবেষণার বরাদ্দের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ বা উন্নয়নের টাকা ঢুকিয়ে দিয়ে কাগজে–কলমে শিক্ষার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ব্যয় বেশি দেখানোর খাসলত আমাদের বহুদিনের।

অথচ ট্রিন (২০২৩) তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন যে উন্নত দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘থার্ড মিশন’ বা তৃতীয় মিশন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা সামাজিক দায়বদ্ধতা, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং নীতিনির্ধারণে সক্রিয় অংশগ্রহণকে নির্দেশ করে।

কিন্তু বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয় মূলত প্রশাসনিক অচলাবস্থা, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি এবং গবেষণাবিমুখ মুখস্থনির্ভর শিক্ষাদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। ফলে তারা প্রযুক্তিনির্ভর, উদ্ভাবনী ও নীতিনির্ধারণী নেতৃত্ব তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

স্নায়ুযুদ্ধোত্তর সময়ে সেসব দেশ উন্নত হয়েছে, তাদের উন্নয়নের পেছনে ওই সব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলছে।

কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল মানবসম্পদ তৈরি করে না; এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখে। চীনের উদাহরণ এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

কেবল শিক্ষার বাজেট বাড়ানো নয়; বরং এই বাজেট কোথায় কীভাবে এবং কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে, সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরও একই সঙ্গে দিতে হবে। উদ্ভাবন-নির্ভর গবেষণার জন্য বরাদ্দ, শিল্প খাতের সঙ্গে অংশীদারত্ব গঠনের জন্য প্রণোদনা, শিক্ষক নিয়োগসহ অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং গবেষণাকেন্দ্র ও ল্যাবরেটরির উন্নয়ন—প্রতিটি পদক্ষেপকে একটি কেন্দ্রীয় নীতিকাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনের কার্যকর সমন্বয়ই পারে উচ্চশিক্ষাকে অর্থনীতির চালিকা শক্তিতে পরিণত করতে।

বিং (২০২৩) তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন যে ২০১২-২০২০ সালের মধ্যে চীনে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, ডিজিটাল উন্নয়ন এবং শিল্পরূপান্তর একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করেছে।

চীনের পূর্বাঞ্চলে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান এবং বিনিয়োগ তুলনামূলকভাবে বেশি, সেখানে উচ্চপ্রযুক্তি শিল্প ও রপ্তানি অনেক বেশি।

এই প্রবণতা প্রমাণ করে যে উচ্চশিক্ষা একটি অঞ্চলকে কেবল শিক্ষার দ্বারা নয়; বরং প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে রূপান্তর করতে পারে।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের রূপান্তরমূলক উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো অনুপস্থিত।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘কগনিটিভ স্কিলস’ বা বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে।

হানুশেক ও ওয়েসমান (২০০৭) তাঁদের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে শিক্ষার পরিমাণ নয়; বরং শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণাত্মক সক্ষমতা একটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সফলতার নির্ধারক।

উন্নত দেশগুলো যেখানে সমস্যার সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তা এবং গবেষণার দক্ষতা গঠনে গুরুত্ব দেয়, সেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনো মুখস্থনির্ভর পরীক্ষার চক্রেই আবদ্ধ।

ফলে একই মেয়াদে শিক্ষা গ্রহণ করলেও দক্ষতার দিক থেকে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান তৈরি হয়।

এই পার্থক্য ভবিষ্যতে উৎপাদন, আয় এবং সামাজিক বৈষম্যের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে।

এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর প্রয়োজন।

কেবল শিক্ষার বাজেট বাড়ানো নয়; বরং এই বাজেট কোথায় কীভাবে এবং কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে, সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরও একই সঙ্গে দিতে হবে।

উদ্ভাবন-নির্ভর গবেষণার জন্য বরাদ্দ, শিল্প খাতের সঙ্গে অংশীদারত্ব গঠনের জন্য প্রণোদনা, শিক্ষক নিয়োগসহ অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং গবেষণাকেন্দ্র ও ল্যাবরেটরির উন্নয়ন—প্রতিটি পদক্ষেপকে একটি কেন্দ্রীয় নীতিকাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনের কার্যকর সমন্বয়ই পারে উচ্চশিক্ষাকে অর্থনীতির চালিকা শক্তিতে পরিণত করতে।

আমরা উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট বানাই। কারণ, এসব উন্নয়ন সহজেই চোখে পড়ে। রাজনীতিতে এগুলোকে দেখিয়ে ভোট চাওয়া যায়।

কিন্তু সত্যিকার অর্থেই যদি আমরা দেশের উন্নয়ন চাই, তাহলে আমাদের মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদই দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।

এ জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঢেলে সাজাতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসগুলোকে শ্রমবাজার ও প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিয়মিতভাবেই উন্নত ও পরিমার্জন করা প্রয়োজন।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন গবেষণার মাধ্যমে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার নতুন তত্ত্ব, প্রযুক্তি কিংবা উদ্ভাবন নিয়ে আসতে পারবে, তখনই প্রকৃতপক্ষে একটি দেশ এগিয়ে যায়।

কারণ, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়। করোনা মহামারির কারণে যখন সারা বিশ্ব বিপদগ্রস্ত, তখন ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডই কিন্তু সবার আগে টিকা নিয়ে এগিয়ে এসে মানুষকে কোভিডের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পথ দেখিয়েছে।

আমাদের স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

আমরা যদি অর্থনৈতিক উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করতে চাই, তবে তা কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়; বরং জ্ঞানভিত্তিক উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে করতে হবে।

একবিংশ শতাব্দীর অর্থনীতি প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও নীতিনির্ধারণের সঙ্গে সংযুক্ত। এই বাস্তবতায়, একটি ‘ডিগ্রি-উৎপাদন’মুখী নয়; বরং গবেষণাভিত্তিক, শিল্প-সংযুক্ত এবং উদ্ভাবনকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ব্যবস্থাই পারে একটি জাতিকে ধনী করে তুলতে।

অন্যথায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেমন গরিব থাকবে, তেমনিভাবে জাতি হিসেবে আমরাও গরিব থাকব।

কাজেই জাতি হিসেবে ধনী হতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোয়ালিটি উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। চলুন, ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগী হই। এখনই!

মো.

ইমরান আহম্মেদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ পুলিশ; বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের পলিটিকস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগের পিএইচডি গবেষক।

ই–মেইল: [email protected]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক বল শ ক ষ র ইউন ভ র স ট র পর প র ন র ভর র জন য সব দ শ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও হা-মীম গ্রুপের সমঝোতা স্মারক সই

ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও হা-মীম গ্রুপের (টঙ্গী জোন) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

রোববার ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।

সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে হা-মীম গ্রুপের কর্মী ও শ্রমিকরা ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, ওয়েলনেস প্রোগ্রাম, মেডিকেল ক্যাম্প, ইমার্জেন্সি রেফারেল সাপোর্ট এবং অন-সাইট মেডিকেল সাপোর্ট সার্ভিস গ্রহণের সুযোগ পাবেন। উভয় প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কর্মীদের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন এবং জরুর স্বাস্থ্যসেবার দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।

এছাড়াও, কর্মীদের সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর শেষে ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক হা-মীম গ্রুপের সিনিয়র কর্মকর্তাদের হাসপাতালের বিভিন্ন সেবাকক্ষ, চিকিৎসা সুবিধাদি ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা ঘুরিয়ে দেখান। অতিথিরা হাসপাতালের সেবা ও সুবিধা সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই সমঝোতা স্মারক হা-মীম গ্রুপের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.), উপ-পরিচালক ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল যোবায়ের, সহকারী পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ডা. মো. শাহেদ আরাফাত ও জেনারেল ম্যানেজার (কর্পোরেট মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ পোদ্দার।

অন্যদিকে হা-মীম গ্রুপের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মানবসম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ইমরান আহমেদ, প্রধান পরিচালন র্কমর্কতা এএফএম আখতরুজ্জামান, মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন, সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. পারিজা আশরাফী ও জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) মিজানুর রহমানসহ আরও অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও হা-মীম গ্রুপের সমঝোতা স্মারক সই