প্রথম ১০০ দিনে ট্রাম্প সফল নাকি বেশি দ্রুত চলছেন, কী বলছেন তাঁর সমর্থকেরা
Published: 28th, April 2025 GMT
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভোটে জয়ী হয়ে এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ঘটেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তাঁকে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন ট্রাকচালক, অবসরে যাওয়া ব্যক্তি, ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকেই।
গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে ট্রাম্প যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে কতটা সমর্থন আছে তাঁর কট্টর সমর্থকদের? ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করতে পেরেছেন বলে তাঁদের মনে হয়? তাঁরা কি এখনো ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক হয়েই আছেন, নাকি তাঁদের মনে হচ্ছে, তাঁরা ভুল করেছেন?
এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে বিবিসি ট্রাম্পের পাঁচজন সমর্থকের সঙ্গে কথা বলেছে, যাঁরা সর্বশেষ নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করেছেন, কতটা বাকি আছে বা তাঁরা ট্রাম্পের কাছে এরপর কী চান, সেসব নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা।
‘যদি এটা কাজ না করে, আমি বলব এটা ভুল ছিল’
লুইজ অলিভেরা বলেছেন, ট্রাম্প তাঁর প্রথম ১০০ দিনে দ্রুত যেসব কৌশলগত পরিবর্তন এনেছেন, তিনি সেগুলোর সঙ্গে আছেন। বিশেষ করে অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার প্রশংসা করেন লুইজ। ট্রাম্প সীমান্তে নতুন করে বিধিনিষেধের ঝড় তুলেছেন এবং অভিবাসী বিতাড়ন প্রক্রিয়ার গতি বাড়িয়েছেন। ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের এমনকি এল সালভাদরের কুখ্যাত কারাগারেও পাঠাচ্ছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থী ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সংঘাত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
এ বিষয়গুলো লুইজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮০ সালে ব্রাজিল থেকে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন লুইজ। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডাতে বসবাস করেন, বয়স ৬৫ বছর। ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনিও বলেন, সম্প্রতি অভিবাসীরা যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছিলেন, সেটা ‘আক্রমণের’ সমান।
লুইজ মনে করেন, ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের বলছেন, এটা আমাদের বাড়ি, আমাদের আঙিনা এবং আপনারা এখানে থাকতে পারবেন না।
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থী ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সংঘাত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।তবে অভিবাসন নীতিতে খুশি হলেও ট্রাম্পের কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে অস্বস্তিতেও ভুগছেন লুইজ। তিনি একটি কফির দোকানের মালিক। বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার কথা বলে ট্রাম্প সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশের ওপর যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তার ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন লুইজ।
লুইজ বলেন, ‘এটা যন্ত্রণাদায়ক হতে চলেছে। তবে আমার মনে হয় না, তিনি (ট্রাম্প) যেভাবে বলছেন ততটা দ্রুতগতিতে এটা কার্যকর হবে। আমি তাঁর একজন সমর্থক। তবে দিন শেষে, যদি এটা কাজ না করে তবে আমি বলব, এটা একটি ভুল—তিনি খুবই দ্রুত সবকিছু করছেন, বাজারে ভয় ধরিয়েছেন, অর্থনীতিকে আতঙ্কিত করে তুলেছেন।’
তিনি ‘মেধাভিত্তিক সমাজ’ পুনরুদ্ধার করছেন
২০২৪ সালে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন আমান্ডা সু ম্যাথিস। এই নারীর মনে হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো একমাত্র ট্রাম্পই সমাধান করতে পারবেন। ট্রাম্পের ১০০ দিন সামনে রেখে আমান্ডার মনে হয়েছে, ট্রাম্প নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে চিন্তিত। তবে আমার মনে হয়, এবার আমাদের নিজের দেশের দিকে তাকানোর সময় হয়েছে। অন্যান্য দেশের সমস্যা ঠিক করতে যাওয়ার আগে আমাদের নিজেদের সমস্যার সমাধান করা দরকার।’
আমান্ডা ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সমর্থন করেন। সর্বোপরি তাঁর মনে হয়, ট্রাম্প সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রমে একজন ভোটার হিসেবে তিনি খুশি।
তবে আমান্ডা নিজেকে ট্রাম্পের অন্ধভক্ত মানতে নারাজ। আমান্ডা বলেন, ‘যদি তিনি (ট্রাম্প) জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেন, তবে আমিই প্রথম আপনাকে সেটা বলব।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম ১০০ দ ন আম দ র আম ন ড ন ল ইজ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবী মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না: ফরহাদ মজহার
জুলাই বিপ্লবে সামনে থাকা মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কবি ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থান বলতে আসলে কি বুঝায়, আমাদের সমাজে এর পরিষ্কার ধারণা নেই। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সামনের সাড়িতে অনেক মেয়ে ছিল। কিন্তু তারা হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেল? তারা আর রাজপথে নেই। কারণ তারা রাজপথে আর নিরাপদবোধ করছে না। আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র আর সরকারের পার্থক্য স্পষ্ট না। ফলে দেশ সামনের দিকে আগাতে পারছে না।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘অভ্যুত্থান: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ এ সভার আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
রাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’
রাবির ভর্তি পরীক্ষা: একটি ইউনিটেই ৭৫০ ওএমআর বাতিল
ফরহাদ মজহার বলেন, “১৯৭২ এর সংবিধান আমরা বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কারণ, ওই সংবিধান সাধারণ মানুষ প্রণয়ন করেনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শক্তি, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যাবস্থা, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ এক হয়ে লড়েছিল। কিন্তু বর্তমান ইন্টেরিম সরকার আমাদের জুলাই ঘোষণাপত্র করতে দেয়নি। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র ও নতুন গঠণতন্ত্র চাই।”
রাবি রেজিস্ট্রার ও সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক প্রমুখ।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী