‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’–এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে রিট পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতের পূর্ণাঙ্গ আদেশ পেলে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।

ওই অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.

আজমল হোসেন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন, যা ১৭ মার্চ হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতি বিব্রতবোধের কথা জানিয়ে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্য বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে আজ আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এম বদরুদ্দোজা বাদল, আইনজীবী কায়সার কামাল ও মোহাম্মদ শিশির মনির এবং রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. আজমল হোসেন নিজেও শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন শুনানিতে ছিলেন।

পরে আইনজীবী মো. আজমল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। শুনানি শেষে কিছু পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে আদালত রিটটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ আদেশ পেলে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বলা যাবে।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।

অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে ২৩ জানুয়ারি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন। এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। অধ্যাদেশের ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।

রিট আবেদনে দেখা যায়, ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অধ্যাদেশটির কার্যক্রম স্থগিতও চাওয়া হয়েছিল। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদী করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আজমল হ স ন ব চ রপত আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

জুয়ার সাইট-অ্যাপ ও জড়িতদের খুঁজতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলোর কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, তা নির্ণয় এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘অনলাইন জুয়ার প্রচারণায় তারকারা’ শিরোনামে ৯ এপ্রিল প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমস এবং সামাজিক ও মূলধারার মাধ্যমে তারকাদের এসব বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে তানজিম রাফিদ নামে রাজধানীর এক বাসিন্দা ১৬ এপ্রিল রিটটি করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।

পরে আইনজীবী মাহিন এম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। হাইকোর্ট সাত বিবাদীর একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে; কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিতে পারবেন। বিজ্ঞাপন প্রচারসহ অনলাইনে জুয়া/বেটিংয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন চিহ্নিত করা, এগুলো কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং এগুলোর সঙ্গে কারা জড়িত, তা তদন্ত কমিটিকে খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’

সাত বিবাদীকে সাতজন প্রতিনিধি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কোন কোন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন অনলাইনে জুয়া/বেটিং হয়, তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।’

সংবিধানে ১৮(২) ও ৩১ অনুচ্ছেদ, সংশ্লিষ্ট আইনের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে জনপ্রিয় তারকদের মাধ্যমে কোনো সামাজিক ও মূল ধারার মাধ্যমের প্লাটফর্মে অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের কার্যক্রম ও বিস্তার রোধে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ধরনের অনলাইন জুয়া/বেটিং গেমের বিজ্ঞাপন প্রচারের বিস্তার বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অন্যতম শোবিজ তারকা ও মডেল পিয়া জান্নাতুল। তিনি আইন পেশায়ও আছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বেশ জনপ্রিয়। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীসংখ্যা ১৭ লাখ। ইনস্টাগ্রামে ১১ লাখ। পিয়া নিজের মডেলিং–জীবনের পাশাপাশি নানা সময় সামাজিক ও আইনি পরামর্শমূলক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন। তবে তাঁকে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালাতেও দেখা গেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ১২টি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণা চালিয়েছেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে। শুধু পিয়া নন, চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, অভিনয়শিল্পী সামিরা খান মাহিও অনলাইন জুয়ার প্রচারণা চালিয়েছেন। দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও আছেন এই তালিকায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে আইনি নোটিশ
  • দূর সম্পর্কের ভাতিজিকে নিয়ে লাপাত্তা যুবলীগ নেতা
  • মডেল মেঘনার মুক্তিতে বাধা নেই 
  • নিরপরাধ দাবি করে প্রধান অভিযুক্ত বললেন, ‘ওই সময় কাজে-কর্মে বাইরে ছিলাম’
  • শেখ হাসিনার সঙ্গে অভিনেতা সাংবাদিক আইনজীবীসহ আসামি ৪০৭
  • সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন একটি ‘জবাবদিহিহীন জায়গা’
  • ‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি’
  • খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি হতে পারে আগামী সপ্তাহে
  • জুয়ার সাইট-অ্যাপ ও জড়িতদের খুঁজতে কমিটি গঠনের নির্দেশ