জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া দেশের সব সচল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই জানিয়েছেন সমিতিটি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারা দেশে সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তবে ২০১৩ সালের গেজেট মূলে ২০১২ সালের মে মাসে সারা দেশে ৩০ হাজার ৩৫২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।

আরো পড়ুন:

পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতায় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন: উপদেষ্টা

তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের মে মাসের আগে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করে রাখা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে হবে বলে জোর দাবি তোলেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সব শর্ত পূরণ করার পরেও ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা ও জেলায় যাচাই-বাচাই করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ করা আছে।

জাতীয়করণকালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতার সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সতিমির নেতারা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান পরিচালনা করলেও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা শিক্ষকরা মানবেতর যীবন যাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে জ্ঞানের আলো দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থা দূর করতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো.

ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় সুকৌশলে বাদ দেয়। এই বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বদরবারে তারা আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে সারা দেশের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিফিনসহ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে; সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।”

মানববন্ধনে সারা দেশ থেকে আসা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের দেখা যায়।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: শামীম ওসমান পালালেও তারা দোসরা বিশৃঙ্খলায়

“নারায়ণগঞ্জ থেকে শামীম ওসমান পালিয়ে গেলেও তার দোসররা নারায়ণগ‌ঞ্জে বিশৃঙ্খলা কর‌ছে। তা‌দের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের লড়াই করতে হচ্ছে। তারা ঘায়েল করার জন্য বিভিন্নভাবে  নেতাকর্মীদের বিরু‌দ্ধে অপপ্রচার ও কাল্পনিক অভিযোগ সামনে এনে বিএন‌পির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ কর‌ছে। ফ্যাসিবাদের এই দোসরদের বিরুদ্ধে গণপ্রতি‌রোধ গড়ে তুল‌তে হবে।”

রবিার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়নগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।

অপপ্রচারের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে তি‌নি ব‌লেন, “আওয়ামী দোসরদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মী পর্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের শিকার হচ্ছে।”

“একইভাবে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতেও আমা‌দের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হ‌চ্ছে। আমরা এই ধরনের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দলীয়ভাবে আলোচনা ক‌রে আমরা এই ধরনের কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

ফতুল্লার চৌধুরী বাড়ীর সন্তান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে রিয়াদ মোহাম্মদ ব‌লেন, “ফতুল্লা মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু সরকারি ও বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ভূমির দাতা আমার পূর্ব পুরুষরা। আমার বাবা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন বিএনপির নিবেদিত কর্মী।”

“গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রইসউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। সেখানে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে; যার স‌ঙ্গে আমার কো‌নো সম্পর্কই নাই।”

 “নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণাদিও উল্লেখ করেনি। রইস উদ্দিনকে দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসররা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে,” অভিযোগ রিয়াদ মোহাম্মদের।

তিনি বলেন, “যিনি মানববন্ধন করেছেন, তিনি ফতুল্লার কেউ নন এবং মানববন্ধনে মুষ্টিমেয় লোকের সবাই বহিরাগত এবং তারা কেউ এখানকার ব্যবসায়ী নন। মানববন্ধনকারীরা সঠিকভাবে আমার নামটিও জানেন না। যার কারণে তারা সঠিকভাবে আমার নামটিও উচ্চারণ করতে পারেননি। মূলত আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এক পক্ষ ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ এনে একটি মানববন্ধন আয়োজন করিয়েছে।”

রিয়াদ মোম্মদের দাবি, মানববন্ধনে ফতুল্লা হোসেন ট্রেক্সটাইল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের কথা কথা বলা হয়েছে। সেই ঘটনাটি ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে ফতুল্লা রেললাইন বটতলা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ও মাদকবিরোধী একটি শান্তি মিছিল আয়োজন করে। বিএনপি ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে আয়োজিত সেই শান্তি মিছিলে ফতুল্লার চিহ্নিত আওয়ামী পরিবার ও গডফাদার শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী যুবলীগ ক্যাডার আক্তার এবং সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা ও গুলি বর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, “ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, যুবদল নেতা মিঠু, রাহাত চৌধুরীসহ ১৫/২০ জন সাধারণ মানুষ সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হন। তাতে হোসেন টেক্সটাইল নামে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা করা হয়। আমি সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে, সেই মামলায় অবশ্যই আমাকেও আসামি করা হতো।”

হত্যাকান্ডের এক দিন পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও হোসেন টেক্সটাইলের দখলদার আক্তার ও সুমনসহ ১১ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান রিয়াদ মোহাম্মদ।  

পুলিশ সেই মামলার ভিত্তিতে আক্তার, সুমনের বাড়ির কেয়ারটেকারসহ ৭-৮ জনকে গ্রেপ্তার করেন জানিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

লিখিত অভিযোগে রিয়াদ বলেন, সন্ত্রাসী আক্তার, সুমন ও তাদের পরিবার বিগত দিনে ৮-১০টি হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মেম্বার, ডাইং ব্যবসায়ী সোলেমান এবং নজরুল হত্যাকাণ্ড অন্যতম।

তি‌নি বলেন, “বর্তমানে দেশে কোন দলীয় সরকার নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে কোন সত্যতা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো লিখিত অভিযোগ জমা থাকতো এবং আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে বিগত দিনে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কাছে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলে যৌথবাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্যই অবগত থাকতেন এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন।“

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, সহ-সভাপতি হানিফ কবির, সুমন আকবর, যুগ্ম সম্পাদক আনিস রহমান,ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী, সহ-প্রচার সম্পাদক কামাল আহম্মেদ, মিলন টালি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির চৌধুরী।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ
  • ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন
  • সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: শামীম ওসমান পালালেও তারা দোসরা বিশৃঙ্খলায়
  • পদ্মার খেয়াঘাট ইজারা বন্ধ দাবি চরের বাসিন্দাদের
  • ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্ম বাতিল চায় ছাত্রদল
  • মানিকগঞ্জে জামানতের টাকা ফেরত না পেয়ে এনজিওর মালিকের বাড়িতে ভাঙচুর
  • জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানি