ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার মামলায় শুনানিতে আদালত বিব্রত
Published: 28th, April 2025 GMT
তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও তামিমা সুলতানাকে বিয়ের অভিযোগে করা মামলার শুনানিতে বিব্রত হয়ে মামলার নথি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠিয়েছেন একই আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান। ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান।
২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় নাসির ও তামিমার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এরপর নতুন করে বিতর্ক ওঠে এই ক্রিকেটারকে ঘিরে। তামিমা তাঁর আগের স্বামীকে তালাক না দিয়ে নাসিরকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তামিমা ও নাসিরের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসান।
এ মামলায় নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আর ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও তামিমা সুলতানাকে বিয়ের অভিযোগে করা মামলায় আজ আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী এক দরখাস্ত দিয়ে আদালতকে বলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী (তিনি) মন্তব্য করেছেন, যা আদালত অবমাননার শামিল।
আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে আরও বলেন, তিনি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বিষয়ে আদালতকে বলেছেন, বিবাদীপক্ষের আইনজীবী একসময় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এটিকে পেশাগত অসদাচরণ বলে মনে করেন তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্রিকেটার নাসিরের আইনজীবী আজিজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, ১৬ এপ্রিল এ মামলায় বাদীপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান গণমাধ্যমে তামিমাকে জড়িয়ে নাসিরকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। মামলার বিচার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে এ ধরনের মন্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। আদালত অবমাননার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বিচারের এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের। আদালত অবমাননার আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টে পাঠিয়ে দিতে অনুরোধ জানান।
আইনজীবী আজিজুর রহমান আরও বলেন, তিনি কোনো পেশাগত অসদাচরণ করেননি। আদালত মামলার শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইশর ত হ স ন প রথম আল ক কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি’
বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রসঙ্গে কমিশনের ৩৭টি সুপারিশের মধ্যে ১৪টি সুপারিশ অল্প সময়ের মধ্যে প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। অনলাইনে মেনশন স্লিপ গ্রহণ এবং রায় প্রদানের বিষয়টি কার্যকর হলে বিচারিক কার্যক্রমে গতি আসবে।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কার ও জরুরি করণীয়: প্রসঙ্গ সুপ্রিম কোর্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এ সভার আয়োজন করে। সভায় দুর্নীতিমুক্ত কোর্ট ব্যবস্থাপনা, প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো গঠন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার প্রসার, আদালতের বেঞ্চ পুনর্গঠন নীতিমালা প্রণয়ন এবং দ্রুত রায়-আদেশ পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর বক্তারা জোর দেন।
ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আলোচক ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম জামিউল হক ফয়সাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী জাহেদ ইকবাল, এস হাসানুল বান্না, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম প্রমুখ।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বার কাউন্সিলের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতার অভাব রয়েছে। অতীতের মতো শুনানির দিনেই আদেশ প্রস্তুত করার নিয়ম পুনরায় চালু হওয়া উচিত।
এম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে হবে। ই-জুডিশিয়ারি ও ভার্চুয়াল কোর্টের বিস্তারে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
ড. কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত না থাকলে কোনো আইনজীবী সনদ পাঠিয়ে জেলমুক্তি আটকে দিতে পারবেন না। এটি আইনসম্মত নয়। ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন বলেন, অনেক সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব এবং তার জন্য সংবিধান বা আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। প্রশাসনিক উদ্যোগে এগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি। ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশ ছাড়া হাইকোর্টের বিচারাধীন মামলা স্থগিত রাখা উচিত নয়। এজন্য অনুশীলন নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।