ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এবার গণমিছিল থেকে ছয় দফা দাবি পূরণে সরকারকে বার্তা দিলেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ১টায় রাজধানীর আইডিইবি ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাই মোড় ও কাকরাইল মসজিদ মোড় ঘুরে আবার আইডিইবি ভবনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।

ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে দাবি আদায়ে সক্রিয় রয়েছেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা; প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

আরো পড়ুন:

ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামির জামিন, একদিন পর বিক্ষোভ

ছয় দফা দাবিতে রাজশাহী পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সোমবার গণমিছিল শেষে আইডিইবির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো.

মাশফিক ইসলাম বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, আন্দোলনের আট মাস পর কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এখনো আন্দোলনকে জীবিত রেখেছেন। তারই ফলাফল আজকের গণমিছিল ও বিক্ষোভ। 

“যদি আবার আমাদের রাজপথে নামার সময় আসে, যদি আবার রাজপথ থেকে দাবি আদায় করে নিতে হয়, তাহলে দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রস্তুত।”

দাবি আদায়ে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকার বার্তা দিয়ে মাশফিক ইসলাম বলেন, “ঢাকা থেকে আমরা সারা দেশের পলিটেকনিক ভাই-বোনদের জানিয়ে দিতে চাই, যদি গ্রেপ্তার হওয়ার প্রয়োজন হয়, রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়; তাহলে আমরা ঢাকা পলিটেকনিক প্রস্তুত।”

গণমিছিল শেষে আইডিইবির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। ছবি: রাইজিংবিডি

মাশফিক ইসলাম বলেন, “যে ৬ দফা দাবির জন্য আমার ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছে, সেই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। দাবি আদায়ে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।”

এর আগে সকাল থেকে আইডিইবি ভবনে সি.আর. সম্মেলন করেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

কারিগরি শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত। নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পা করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ। এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়' নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র গণম ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ বছরে ব্যয় হবে ২ লাখ ১৭ হাজার ৪ কোটি টাকা

বাস্তবায়নাধীন মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ট্যারিফ নির্ধারণ করা হচ্ছে। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম ৮.৪৪৭৫ টাকা। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ২ লাখ ১৭ হাজার ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এ সংক্রান্ত বিদ্যুৎ বিভাগের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এর বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ হাজার ৫৮৬ কোটি ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

আরো পড়ুন:

১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ জানাল মন্ত্রণালয়

খুলনা অঞ্চলে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা তদন্তে ৮ সদস্যের কমিটি

‘মাতারবাড়ি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। আলোচ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বাবিউবো ক্রয় করবে। বাবিউবোর বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বর্ণিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য সিপিজিসিবিএল ও বাবিউবোর মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদে স্বাক্ষরিত পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে ট্যারিফ স্ট্রাকচার ও লেভেলাইজড ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৮.৪৪৭৫ টাকায় চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

সূত্র জানায়, ট্যারিফ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ক্রয় করা হলে প্রতি বছর প্রায় ৭ হাজার ২৩৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা হিসাবে ৩০ বছর মেয়াদে সিপিজিসিবিএলকে আনুমানিক ২ লাখ ১৭ হাজার ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

বর্তমান ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৮.৪৪৭৫ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে চূড়ান্ত ব্যয় হিসাব করে পুনরায় ট্যারিফ নির্ধারণ করা হবে।

সিপিসিসিবিএল একটি সম্পূর্ণ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।এর উৎপাদিত বিদ্যুৎ হতে যে পরিমাণ লভ্যাংশ অর্জিত হবে তা সরকারের লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার, জাইকা ঋণ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন, তোশিবা কর্পোরেশন ও আইএইচআই কর্পোরেশ-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ