রাশিয়ার কুরস্কে সেনা মোতায়েনের কথা নিশ্চিত করল উত্তর কোরিয়া
Published: 28th, April 2025 GMT
রাশিয়ায় সেনা মোতায়েনের কথা প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ আজ সোমবার জানিয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের সেনারা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন কুরস্ক সীমান্ত অঞ্চল পুনর্দখলে রাশিয়াকে সাহায্য করেছে।
এর কয়েক দিন আগেই উত্তর কোরিয়ার সেনাদের যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করে রাশিয়া। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই জানাচ্ছিল, পিয়ংইয়ং গত বছর কুরস্কে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা পাঠিয়েছিল।
উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর উপদলটি রাষ্ট্রপ্রধানের নির্দেশ অনুযায়ী কুরস্ক এলাকা মুক্ত করতে অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে।’
কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ছিল পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির অধীনে।
কিম বলেন, ‘ন্যায়বিচারের জন্য যারা লড়ছে, তারা সবাই মাতৃভূমির গর্ব এবং সম্মানের প্রতিনিধিত্বকারী।’
আরও পড়ুন কুরস্ক ‘পুনর্দখলে’ রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সেনারা, প্রশংসায় মাতল মস্কো১৭ ঘণ্টা আগেকিম আরও বলেছেন, যুদ্ধের বীরত্বগাথার স্মরণে রাজধানীতে শিগগিরই একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। তিনি ‘শহীদ সেনাদের সমাধিফলক’ স্থাপনের কথাও উল্লেখ করেছেন। এতে প্রকাশ্যে নিশ্চিত করা হলো, যুদ্ধে উত্তর কোরীয় সেনারা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদের পরিবারের প্রতি বিশেষ সম্মান দেখানো হবে এবং তাদের দেখভালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুনপুতিন একটা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন?২৬ এপ্রিল ২০২৫কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের মতে, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের দুঃসাহসী আক্রমণ প্রতিহত করে কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার অভিযানে বিজয় হয়েছে।’
রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ গত শনিবার উত্তর কোরীয় সেনাদের ‘বীরত্বের’ প্রশংসা করে বলেছিলেন, তাঁরা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি দলকে পরাজিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করেছে।
আরও পড়ুনইউক্রেনে রুশ যুদ্ধশিবির থেকে দুর্বিষহ জীবনের গল্প বললেন এই বাংলাদেশি তরুণ২৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রস ক
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের প্রতি উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান চীন-যুক্তরাষ্ট্রের
কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে রয়েছে। সীমান্তে চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে উত্তেজনা নিরসনে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
সংযম প্রদর্শনের আহ্বান চীনের
রোববার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই। পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান যে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে, তার প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি।
চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে ওয়েং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘চীন একটি দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের পক্ষে এবং বিশ্বাস করে যে, এই সংঘাত পাকিস্তান ও ভারত কারো মৌলিক স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না, তা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যেও উপকারী নয়।’
দুই পক্ষই সংযম প্রদর্শন করবে এবং উত্তেজনা নিরসনে এগিয়ে আসবে, এমনটা প্রত্যাশা তার। ওয়েং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামির সঙ্গেও আলাপ করেছেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ‘ভারতের মিথ্যা দাবি, ভিত্তিহীন প্রচারণা এবং একতরফা পদক্ষেপ’ নিয়ে তারা কথা বলেছেন।
‘দায়িত্বশীল সমাধান’ চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর রোববার জানিয়েছে তারা ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। দুই দেশই যাতে একটি ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ নিয়ে কাজ করে সেটি চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রেখেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে একটি দায়িত্বশীল সমাধানের জন্য একসাথে কাজ করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।’
হামলার পরপর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছিল। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় ভারত। নিজেদের কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও। সূত্র: ডয়েচে ভেলে