মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 28th, April 2025 GMT
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেন, মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার। কারণ, কারিগরির শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হয়, এ শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলা হচ্ছে মিস্ত্রি বানানোর কারখানা। এই ধরনের নেতিবাচক ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে ‘কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সম্ভাবনা ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে’ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, কারিগরি শিক্ষা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, এখানে কাঠামোগত সংস্কারের দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ট্রেডভিত্তিক শিক্ষকের বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও নিউ টেকনোলজির অভাব রয়েছে। এসব দূর করার জন্য কারিগরি শিক্ষাকে আরো যুগোপযোগী করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষালাভ করেও অনেকে বেকার রয়েছে, তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না, তার বিকল্প হিসেবে কারিগরি শিক্ষায় জোর দিতে হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে, সে কারণে আচরণে পার্থক্য থাকবে। সবার কাছ থেকে স্বাভাবিক আচরণ আশা করা যাবে না। এক্ষেত্রে তাদেরকে বুঝিয়ে আদর করে পাঠদানের কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা একটা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। দাবি-দাওয়াগুলো সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করতে হবে। একইসঙ্গে আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষ উপদ ষ ট উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিতর্কিত হৃদয়কে বাঁচাতে একাট্টা কেন ক্রিকেটাররা
বার্সেলোনার বিপক্ষে কোপা দেল রে ফাইনালের আগে রেফারি পরিবর্তনের দাবি তুলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। অনুশীলন ও সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছে। ম্যাচ বয়কট করতে পারে এমন গুঞ্জনও বের হয়েছিল। রিয়ালের দুঃখে ব্যথিত হয়ে বার্সাও অনুশীলন বয়কট করলে কী ভালোই না দেখাত!
রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সা সেটা না পারলেও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মোহামেডানের জন্য ব্যথিত হয়েছে আবাহনী। শুক্রবার তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা মওকুফ করতে একাট্টা হয়ে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন ডিপিএলে বিভিন্ন ক্লাবে খেলা ক্রিকেটাররা। সেখানে সামনের কাতারে সরব উপস্থিতি ছিল আবাহনীর উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুনের। অর্থাৎ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের ক্রিকেটার মিঠুনও চান হৃদয় দোষ করলেও সাজা না দেওয়া হোক!
মোহামেডানের হয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে শারীরিক কারণে শেষ করতে না পারা তামিম ইকবালের ডাকে শুধু মিঠুন নয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম এসেছিলেন বিসিবি’তে। সুপার লিগে উঠতে না পারা ধানমন্ডি ক্লাবের নুরুল হাসান সোহান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি, জিয়াউর রহমানসহ অনেকে ছিলেন। এছাড়া নৈতিক সমর্থন দিয়ে রিয়াদ, মুস্তাফিজসহ অনেককে বিসিবির ঘুরে যেতে দেখা যায়।
ইতিবাচক দিক হলো, তারা কেউ দাবি করেননি তাওহীদ হৃদয় দোষী নন। আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে আচরণ করে হৃদয় দোষ করেছেন, এটা তারা মানেন। হৃদয়কে দেওয়া দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়নি। তামিমের মাধ্যমে তাদের প্রশ্ন- এক দোষে দু’বার সাজা কেন? এই প্রশ্নকে অযৌক্তিক বলার উপায় নেই। আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করা, পরে আম্পায়ারিং নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা ও মুখ খোলার হুমকি দেওয়া এবং শেষে ম্যাচ রেফারির সঙ্গেও গরম দেখানোয় তাকে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
হৃদয় এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করেছেন। এরপর মোহামেডানের লিখিত আবেদন এবং ‘গোপন চাপে’ বাকি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে ম্যাচ খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। আবেদন করে নিষেধাজ্ঞা কমানো দোষের নয়। কিন্তু সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হয়নি। যে কারণে টেকনিক্যাল কমিটি থেকে এনামুল হক মনি পদত্যাগ করেন। যার সঙ্গে হৃদয়ের বিতণ্ডা সেই আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার ইবনে সৈকতও পদত্যাগ করেছেন।
এরপর নতুন টেকিনিক্যাল কমিটির চেয়ারে বসে হৃদয়ের পাওনা এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল করেন বিসিবির পরিচালক ও বিকেএসপির সাবেক কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এই ফাহিমকে স্যার বলে সম্বোধন করেন মুশফিক, সাকিবরা। বিকেএসপির সাবেক ছাত্র হিসেবে হৃদয়ও সম্ভবত একই সম্বোধনই করে থাকবেন। ওই হিসেবে- আজ গাজী গ্রুপের বিপক্ষে হৃদয়ের খেলতে পারার কথা নয়। কিন্তু হৃদয় খেলছেন ও দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অথচ আলোচনা ছিল- আম্পায়ার সৈকতকে বিসিবি অনুরোধ করেছে তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করা জন্য। যদিও আপাতত পদত্যাগ প্রত্যাহার না করার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন সৈকত। হৃদয়ের অপ্রীতিকর আচরণে ব্যথিত হয়ে নৈতিকতার প্রশ্নে- ডিপিএলের বিভিন্ন লিগে খেলা এই ক্রিকেটারদের সৈকতকে চাকরিতে ফেরানোর প্রশ্নে একাট্টা হওয়ার কথা ছিল।
তামিমের নেতৃত্বে ক্রিকেটাররা করেছেন উল্টোটা। ‘শেষ’ হয়ে যাওয়া বিষয়কে নতুন করে শুধু বিতর্কিত করেননি বিতর্কের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। ভিন্ন ভিন্ন দলে খেলা ক্রিকেটারদের এক জায়গায় করে বিসিবির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থগিত করা হয়েছে। ওই চাপে নতজানু হয়েছে বিসিবি। নৈতিক পরাজয় মেনে নিয়েছে। এখন হৃদয় আগামী বছরের ডিপিএলে যদি খেলন তবেই এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করবেন।
প্রশ্ন হলো- হৃদয়ের সাজা কমাতে বা স্থগিত করতে মোহামেডান আন্দোলন, অবস্থান কর্মসূচি দিতেই পারে। আবাহনী, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ কিংবা ধানমন্ডির ক্রিকেটাররা কেন আসবেন? হৃদয় দোষ করেছেন এ নিয়ে তো তাদের সন্দেহ নেই। হৃদয়ের সাজা পাওয়া উচিত এটা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়নি। তারপরও একাট্টা কেন তারা? লাভ কী তাদের? এভাবে জোটবদ্ধ হয়ে তারাও কী পরিবর্তিতে ‘অনৈতিক সুবিধা’ পাওয়ার আশায় ‘বিসিবি ঘেরাও কর্মসূচির’ ব্যালট বাক্সে একটা করে ভোট দিয়ে রাখলেন?