Prothomalo:
2025-04-28@09:39:49 GMT

জামিল স্যার

Published: 28th, April 2025 GMT

জামিল স্যারকে (জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী) আমি ঠিক কবে থেকে চিনি, মনে করতে পারব না। তবে ২০১১ সালে আমার লেখা ৮টি ভ্রমণকাহিনির সংকলন প্রকাশনার উৎসবে প্রধান অতিথি হয়ে যখন অনুষ্ঠানে আসেন, সেদিন তাঁকে আমার সবচেয়ে কাছ থেকে দেখা। এরপর আরও ভালো করে দেখার সুযোগ পেলাম যখন ২০১৬ সালে তাঁকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র বানাতে হুকুম দিল বুয়েট অ্যালামনাই। একুশে পদকপ্রাপ্তির সম্মাননা অনুষ্ঠানে এটা দেখানো হয়। এরপর তাঁকে আরও কয়েকবার আমার ক্যামেরায় নিয়েছি। কখনো তিনি ডেকে নিয়েছেন কোনো কিছু রেকর্ড করতে, কখনোবা অন্যরা বলেছে তাঁর কিছু ধারণ করে দিতে।

বুয়েট অ্যালামনাই একটা বড় রকমের প্রামাণ্যচিত্র আমাকে দিয়ে বানায়। ‘আমাদের বুয়েট, আগামীর বুয়েট’ নামে এই প্রামণ্যচিত্র বানানোর কাজের জন্য প্রায় এক মাস একসঙ্গে কয়েকবার আমাদের বসা হয়েছে। ২০১৬ সালে বুয়েটকাল নামে আমার যে স্মৃতিচারণামূলক বই প্রকাশিত হয়, তার পেছনের ফ্ল্যাপের জন্য তিনি লিখেও দেন। এরপর প্রথম আলো একবার ঢাকার নগরায়ণ বিষয়ে তাঁর একটা সাক্ষাৎকার নিতে আমাকে পাঠায় তাঁর কাছে। সেখানেও তিনি অকুতোভয় অনেক কথা খোলামেলা বলেন। সবশেষে তাঁর সঙ্গে আমার মোলাকাত হয় ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি। সিলেট মহানগরীতে একটা বড় পরিসরের ডিজাইন করেছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। সিলেটের মেয়র ঢাকায় এসেছেন এ বিষয়ে তাঁর মতামত নিতে। তিনি ঢাকার সব বড় বড় স্থপতিকে নিয়ে এটা দেখে মতামত দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিলেন। এ–ই শেষ। আর দেখা হলো না।

২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত কাছাকাছি থেকে তাঁকে যেমন দেখেছি, তাতে আমার যা মনে হয়েছে, তা হলো—

● প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী।

● ছোটবেলায় খেলোয়াড় ছিলেন।

● ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যানুরাগী ছিলেন এবং শেষ বয়সেও প্রতিদিন কিছু না কিছু অকারিগরিবিষয়ক লেখা পড়তেন।

● আগাগোড়া মেধাবী।

● শুধু কারিগরি বিষয়ই নয়, সমসাময়িক যেকোনো বিষয়েই তিনি অগাধ জ্ঞান রাখতেন।

● কোনো বিষয়ে বা কারও সম্পর্কে কথা বলতে গেলে আগে তিনি অনেক হোমওয়ার্ক করে যান।

● তাঁর বন্ধু কেমন আছে জানি না, তবে তাঁর কোনো নিন্দুক আমি খুঁজে পাইনি।

● তাঁর ব্যক্তিগত সততা কখনোই প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুনিনি।

● তাঁর অনেকগুলো কথা আমার কাছে রেকর্ড করা আছে। কথা বলেছিলাম রাজউক, ভূমি ব্যবস্থাপনা আর নগরায়ণ নিয়ে। খুব স্পস্ট কথা বলতেন তিনি।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে নগরাঞ্চলে পানির গতি রোধ করতে পারে, এমন কিছু স্থাপনা থাকতে পারবে না বলে একটা সুপারিশ করেছিলেন। এটা বাস্তবায়নের কথা ছিল রাজউকের। কিন্তু তিনি দেখলেন, রাজউক নিজেই ডেভেলপার হয়ে সেখানে পানির প্রবাহ বন্ধ করে হাউজিং করে ফেলেছে। পরিষ্কারভাবে এটা স্বার্থের সংঘাত। তিনি তখন বলেছিলেন, রাজউক কিন্তু গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন। এখন মন্ত্রী যদি নির্দেশ দেন এটা করেন, তারা করে ফেলে। তাদের হয়তো দ্বিমত ব্যক্ত করার সুযোগ আছে, ক্ষমতা আছে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন—তারা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই চলে।

ভূমিদস্যুদের নিয়েও তাঁর খেদ ছিল। বলেছিলেন, ২০১১ সালে একবার মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ল্যান্ড ডেভেলপারদের বলেছিলেন, ‘আপনারা ভূমিদস্যুরা রাত্রে ঘুমান কীভাবে?’ তার কিছুদিন পর দেখি তিনি অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। আমরা বলেছিলাম, বেআইনিভাবে যেগুলোতে মাটি ভরাট করা হয়েছে, কোনো দালান বানানো হয়নি, সেগুলোতে মাটিটা সরিয়ে ফেললেই হয়। পেশায় আইনজীবী মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বললেন, আমাদের আইনে একটা কথা আছে, ‘একটা অবৈধ শিশু যদি জন্মগ্রহণ করে, তাঁর বেঁচে থাকার অধিকার আছে, তাকে বেচে থাকার সুযোগ দিতে হবে।’ তারপর তো আর এই ড্যাপের বাস্তবায়ন হলো না। ল্যান্ড ডেভেলপারস আর এক্সট্রিমলি পাওয়ারফুল। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে জীবনের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে।

জামিল স্যার খেদ করে রাজউক নিয়ে বলেছিলেন, টাকাপয়সা বা ক্ষমতার বিনিময়ে যেকোনো কিছুর অনুমোদন আনা যায়। 

দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থাও দুর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে, এ অভিযোগ সরকার থেকেই আসছে।

জামিল স্যার নেই আজ পাঁচ বছর। আমাদের রাজউক, আমাদের ভূমিদস্যু— এদের তেমন পরিবর্তন দেখতে পেলে হয়তো জামিলুর রেজা চৌধুরীর আত্মা শান্তি পেত।

শাকুর মজিদ: স্থপতি, লেখক ও নির্মাতা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ল ন মন ত র আম দ র র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

গাছ থেকে লাফিয়ে বিজয়ের গাড়ির ওপরে ভক্ত (ভিডিও)

রাস্তায় তিল ধারণের জায়গা নেই। সাদা রঙের হুটখোলা একটি গাড়ি স্থির। দাঁড়িয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়াচ্ছেন থালাপাতি বিজয়। হঠাৎ পাশের গাছ থেকে গাড়ির ওপরে লাফিয়ে পড়েন এক যুবক। পেছন ফিরেন বিজয়। উচ্ছ্বসিত যুবকের গলায় বিজয় তার রাজনৈতিক দলের পতাকা গলায় পরিয়ে দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ভিডিওটি এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল।

দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, নিজে দল প্রতিষ্ঠা করে রাজনীতিতে পা রেখেছেন তামিল সুপারস্টার থালাপতি বিজয়। তার রাজনৈতিক দলের নাম ‘তামিলাগা ভেত্রি কোঝাগম’। দলের প্রচারের কাজে বেরিয়েছিলেন বিজয়। তামিল নাড়ুর কোয়েম্বাটোরে বিজয়ের এক ভক্ত এমন কাণ্ড ঘটনা।

২০২৬ সালের তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে আপাতত প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজয়। পাশাপাশি ‘জন নায়ক’ সিনেমার শুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এটাই তার শেষ সিনেমা হতে যাচ্ছে। এইচ বিনোদন পরিচালিত এই সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করছেন শ্রুতি হাসান। এরপর অভিনয় ছেড়ে রাজনীতি নিয়ে বাকি জীবন কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন এই নায়ক।

আরো পড়ুন:

জালিয়াতির মামলা, মহেশ বাবুকে তলব

আমরা এমনিতেই ফর্সা-সুন্দর, উর্বশীর বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা

থালাপাতি বিজয়ের বাবার নাম এসএ চন্দ্রশেখর। তিনি ছিলেন তামিল সিনেমার পরিচালক। মা শোভা চন্দ্রশেখর ছিলেন গায়িকা। মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে নাম লেখান বিজয়। ‘বেট্রি’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করেন তার বাবা। প্রথম সিনেমার জন্য ৫০০ রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় দেখা যায় তাকে।

রুপালি পর্দায় অভিষেকের আট বছর পর অর্থাৎ ১৯৯২ সালে ‘নালায়া থেরপু’ সিনেমার প্রথম নায়ক চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তার প্রথম ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘পুভে উনাকাগা’। এটি মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে। তবে ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই অভিনেতার ‘থিরুমালাই’ সিনেমাটি তার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।

পরের বছর ‘ঘিল্লি’ সিনেমায় একজন কাবাডি খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অভিনয় করে সকলের মন কাড়েন বিজয়। এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম তামিল অভিনেতা হিসেবে বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপি আয় করেন। পরবর্তী সময়ে ‘থিরুপাচি’, ‘সাচেন’, ‘শিবাকাসি’, ‘পক্কিরি’, ‘কাবালান’, ‘নানবান’, ‘থুপ্পাক্কি’, ‘কাত্থি’, ‘মার্সাল’, ‘সরকার’, ‘মাস্টার’ প্রভৃতি সিনেমা তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ দিন নিজের প্রস্রাব নিজে পান করেছি: পরেশ রাওয়াল
  • শিশু কবিরাজের ঝাড়ফুঁক পেতে মানুষের ভিড়, সামলাতে পরিবারে হিমশিম
  • জয়পুরহাটে ইটভাটার ধোঁয়ায় ধানখেত নষ্টের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ
  • চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় বাংলাদেশের
  • ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামির জামিন, একদিন পর বিক্ষোভ
  • মা হতে যাচ্ছেন শিরিন
  • চ্যাম্পিয়নস লিগে ৮ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন রোনালদো
  • কেন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন সোহেল আরমান
  • গাছ থেকে লাফিয়ে বিজয়ের গাড়ির ওপরে ভক্ত (ভিডিও)