ফ্ল্যাশব্যাকে এক বছর আগের এই সময়ে ফিরে যাওয়া যাক। লিভারপুল শহরের লাল অংশ তখন মেঘাচ্ছন্ন। প্রায় কারও মনই ভালো নেই। পুরো শহরে তখন ছড়িয়ে পড়েছে বিদায়রাগিণী। লিভারপুলের পুনরুত্থানের নায়ক ইয়ুর্গেন ক্লপ ক্লাব ছাড়বেন। এমন কাউকে তো আর যেনতেনভাবে বিদায় দেওয়া যায় না! ক্লপের বিদায় রাঙানোর প্রস্তুতিতে নিজেদের ব্যস্ত করে রাখেন লিভারপুলবাসী। এই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে ক্লপকে হারানোর যন্ত্রণাটাকেও হয়তো কবর দিতে চান তাঁরা।

বিদায়ের এই ক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছিল, পুরো লিভারপুল শহর তখন ক্লপময় হয়ে উঠছিল। বিলবোর্ড, রাস্তার দেয়াল কিংবা কফি শপ—সব জায়গা ছেয়ে গেছে ক্লপের পোস্টারে। বিদায় আয়োজন যখন তুঙ্গে, তখনই আর্নে স্লটের কোচ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।

খুব পরিচিত কোনো নাম নয়। নেদারল্যান্ডসের ক্লাব ফেইনুর্দের কোচ হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন বটে, তবে লিভারপুলের মতো ক্লাবে কতটা কী করতে পারবেন, তা অনিশ্চিত। লিভারপুল সমর্থকরা অবশ্য তাঁর আসার পথে ফিরেও তাকালেন না। স্লট কে, কেমন তাঁর কোচিং–দর্শন, ক্লপের সঙ্গে তাঁর কী পার্থক্য, সেসব নিয়ে ভাবলেনও না কেউ।

কেউ কেউ অবশ্য আলটপকা মন্তব্যও করে বসলেন, ‘এক মৌসুমও টিকবে না’, ‘পরের মৌসুমে ৮–১০ নম্বরে থেকে শেষ করবে লিভারপুল, আর ছাঁটাই হবে স্লট’। এ রকম বহু মন্তব্য সে সময় খোদ লিভারপুল সমর্থকেরাও করেছিলেন। পরিস্থিতি এমন ছিল, স্লট তখন লিভারপুলে সবচেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ একজন, যাঁকে নিয়ে কেউ ভাবছে না। ক্লপের পরিবর্তে কাউকে না কাউকে তো আসতেই হতো। ফলে কে আসছেন, তা নিয়ে অত মাথা ঘামানোর দরকার কী, কেউ একজন এলেই হলো!

আরও পড়ুনলিভারপুলের পথে থাকা আর্নে স্লটের ‘আবেদনময়ী’ ফুটবল–দর্শন কেমন ২৭ এপ্রিল ২০২৪

টাক মাথার আপাতনিরীহ-দর্শন মানুষটির এই অনাদর মেনে নিতে পারেননি ক্লপ নিজেই। নিজের বিদায়বেলায় ক্লপকেই ‘স্লট, স্লট’ বলে স্লোগান ধরতে হয়েছিল। ক্লপ যেন সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, তিনিই ক্লাবের শেষ কোচ নন। দায়িত্ব নিতে অন্য একজন এরই মধ্যে চলে এসেছেন। ক্লপের সেই স্লোগান অবশ্য অ্যানফিল্ডের গ্যালারিতে কোনো ঢেউ তুলতে পারেনি। পারার অবশ্য কথাও নয়।

এমন নীরস ও হতশ্রী দশার ভেতর বাক্স–পেটরা নিয়ে অনেকটা আগন্তুকের মতো অ্যানফিল্ডের দায়িত্ব সামলাতে আসেন স্লট। নিজের প্রথম মৌসুমে দল গড়তে কোনো রসদও পাননি এই ডাচ কোচ। উইঙ্গার ফেদেরিকো কিয়েসাকেই কেবল দলে ভেড়াতে পেরেছেন। চোটপ্রবণ কিয়েসা সব মিলিয়ে খেলেছেন ১২ মাচ। মূলত ক্লপের রেখে যাওয়া দলকে নিয়েই পথচলা শুরু করেছিলেন স্লট।

এত প্রতিকূল পরিবেশে সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকেই ধীরপায়ে এসে ‘অল রেড’ ডাগআউটে দাঁড়ান স্লট। তারপর জাদুকরের মতো চোখ ইশারাতেই লিভারপুলকে জিতিয়েছেন একের পর এক ম্যাচ। একপর্যায়ে লিভারপুলের ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল করে তুলেছিলেন স্লট। মাঝের বাজে সময় অবশ্য দলটিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও এফএ কাপ থেকে ছিটকে দিয়েছে। কিন্তু তত দিনে লিগ জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে।

স্লট নিয়েছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপের জায়গা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবশ য

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুর জন্য গ্রোথ হরমোন কেন, কখন

একটি শিশুর লম্বা হওয়ার জন্য শরীরে যে হরমোন বিশেষ ভূমিকা রাখে, সেটির নাম গ্রোথ হরমোন। গ্রোথ হরমোনের ঘাটতি হলে শিশু খর্ব হতে পারে। অনেকে মনে করেন, গ্রোথ হরমোন দিয়ে সব খাটো শিশুকে লম্বা বানানো সম্ভব। ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে, কিছু অভিভাবক তাঁদের শিশুকে লম্বা করার জন্য গ্রোথ হরমোন দেওয়ার আরজি নিয়ে আসছেন, যা যুক্তিসংগত নয়। 

লম্বা হওয়ার জন্য গ্রোথ হরমোন এককভাবে দায়ী নয়। একটি শিশু কতটা উচ্চতা লাভ করবে, তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। গ্রোথ হরমোন ছাড়াও শিশুর ঠিকভাবে লম্বা হওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো দায়ী, তা হলো গর্ভাবস্থায় শিশুর স্বাস্থ্য (যা আবার মায়ের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের ওপর নির্ভরশীল), নবজাতকের ওজন ও সুস্থতা (জন্মগত রোগ ও জন্মপরবর্তী পুষ্টির কোনো সমস্যা থাকলে উচ্চতা কমে যেতে পারে), গড় পারিবারিক উচ্চতা (জাতিগত, বংশগত বৈশিষ্ট্য), দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টি ও বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত দীর্গমেয়াদি রোগ-ব্যাধির যথাযথ চিকিৎসা না হওয়া। সেই সঙ্গে লম্বা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের (থাইরয়েড ও গ্রোথ হরমোন) অভাব বা অকার্যকারিতা উল্লেখযোগ্য। একজন শিশু হরমোন–রোগবিশেষজ্ঞ শিশুর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে লম্বা হওয়ার অন্তরায় অন্যান্য কারণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গ্রোথ হরমোন থেরাপি লাগবে কি না, তা ঠিক করে থাকেন। 

যেসব ক্ষেত্রে গ্রোথ হরমোন দিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা হলো—

● শরীরে গ্রোথ হরমোনের অভাব বা ঘাটতি যদি প্রমাণিত হয়; 

● প্রাডার উইলি সিনড্রোম নামক বিশেষ রোগ;

● জন্মগত স্বল্প ওজনের শিশু, যারা পরেও ঠিকভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়নি; ৪. যেসব ক্ষেত্রে খাটো হওয়ার কারণ জানা যায়নি; ৫. টারনার সিনড্রোম; 

● শক্স জিন হাপ্লো–ইনসাফিশিয়েনসি; 

● নুনান সিনড্রোম; 

● দীর্ঘমেয়াদি কিডনি বিকলজনিত রোগ।

গ্রোথ হরমোন অনেক ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং দুষ্প্রাপ্যও বটে। তা ছাড়া শিশু একটু খাটো মানেই গ্রোথ হরমোনের অভাব, তা–ও নয়। তাই যদি মনে হয়, শিশু যথাযথ বাড়ছে না, তাহলে পুরো বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য একজন শিশু হরমোন–রোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

অধ্যাপক ডা. রবি বিশ্বাস, শিশু হরমোন রোগবিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেহেলগামের ঘটনায় একের পর এক বাড়ি ধ্বংস, সরকারকে সতর্ক করল কাশ্মীরের দলগুলো
  • গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুনে পাঁচজন দগ্ধ
  • ‘এবং বই’ বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত
  • দাউদ হায়দার: কবির দেশ ছাড়ার কষ্ট
  • ছিনতাইকারী টান দেয় ভ্যানিটি ব্যাগ, নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় প্রাইভেটকার
  • নারীকে গাড়ির সঙ্গে টেনে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা
  • চলন্ত প্রাইভেটকারে ছিনতাইকারী এসে ছোঁ মেরে টান দিল ব্যাগ, টেনে নিয়ে গেল নারীকে
  • বঙ্গীয় সংস্কৃতি বিদেশে, বাঙালি একাত্ম
  • শিশুর জন্য গ্রোথ হরমোন কেন, কখন