যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শুক্রবার কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধকে এক হাজার বছরের পুরোনো বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি কি এটা রূপক অর্থ বলেছেন, না ইতিহাস নিয়ে তাঁর বিভ্রান্তি, তা স্পষ্ট নয়। তিনি মনে করেন, ভারত-পাকিস্তান নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারবে।

ট্রাম্পের ভাষায়, উভয় দেশের ‘সঙ্গেই আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তারা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সুরাহা করতে পারবে।’ শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ কথা বলেন।

আরও পড়ুনসিন্ধু নদের পানি সরবরাহ আটকে দেওয়ার ভারতের হুমকিতে পাকিস্তানে আতঙ্ক২০ ঘণ্টা আগে

২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ পর্যটক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদ জড়িত। ইসলামাবাদ তা নাকচ করে দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে করা ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। জবাবে পাকিস্তানও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ট্রাম্প ওই মন্তব্য করলেন।

ইসলামাবাদে অবস্থানকারী কিছু পশ্চিমা কূটনীতিকও ট্রাম্পের মতো একই রকম দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ-আলোচনায় তাঁরা এই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করেন, পেহেলগামের ঘটনার পর এই ধরনের পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক প্রতিক্রিয়া যে হবে, তা বোঝা গিয়েছিল। কিন্তু একটা সময় পর উত্তেজনা কমে যাবে এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে।

পাকিস্তানের নাগরিকেরা ভারত ছাড়ছেন। পাহারায় এক ভারতীয় নিরাপত্তাকর্মী। পাঞ্জাবের অমৃতসরের কাছে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তের চৌকিতে। ২৭ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনে হামলা

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পাকিস্তানের হাইকমিশনে হামলা চালানো হয়েছে। হাইকমিশনের বাইরে শত শত ভারতীয় বিক্ষোভকারীর প্রতিবাদ সমাবেশের পর এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এই ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হামলার সময় হাইকমিশনের জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলা হয় এবং ভবনের বাইরের দেয়াল ও ফলকে গেরুয়া রঙের পেইন্ট নিক্ষেপ করা হয়। এতে চতুর্দিকে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে এবং সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ঘটনার পর হাইকমিশনের চারপাশে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং দোষীদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ লন্ডনে হাইকমিশনে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি “নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য” তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনে পাকিস্তান নিজেও তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।

বিক্ষোভের সময় পুলিশের হস্তক্ষেপে দুই ব্যক্তিকে সহিংসতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি, পাকিস্তান সমর্থকরাও পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

সম্প্রতি ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ভারতের ২৬ নাগরিক নিহত হওয়ার ওই ঘটনার পর নয়াদিল্লি সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য পাকিস্তানি আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ