অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদীয়বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের রাজধানীর রমনার বাসভবনে শনিবার একটি ড্রোন পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

ড্রোনটি উদ্ধার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের অধীনে পরিচালিত সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের কর্মকর্তারা।

তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আইন উপদেষ্টার বাসভবনের মূল ভবনের পশ্চিম দিকে ১৫০ গজ সামনে ঘাসের ওপর একটি ড্রোন বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

প্রথমে বাগানের মালী সালমা হক বাগান ঝাড়ু দেওয়ার সময় ড্রোনটি দেখতে পান। তিনি আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি জানান। 

মহানগরীর সাইবার সন্ত্রাস এবং সাইবার-অপরাধ দমনে টহল, প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং তদন্তে নিয়োজিত সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে এসে পড়ে থাকা ড্রোনটি দেখতে  পায়।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ড্রোনটি চীনে তৈরি। তবে কোনো ধরনের হামলা করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়নি। 

সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাহজাহান হোসেন  বলেন, “খবর পেয়ে ড্রোনটি আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও তদন্তের জন্য নিয়ে আসি। তদন্ত করে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাতে ক্ষতিকারক কোনো কিছু আমরা পাইনি।”

পুলিশের এই তদন্ত বিভাগ ড্রোনটির বিষয়ে জানায়, ড্রোনটির ওজন ২৪৯ গ্রাম। এতে ফুটেজ সংগ্রহ করার মতো কোনো মেমোরি কার্ড পাওয়া যায়নি এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে ড্রোনের ব্যাটারি খোলা ছিল।

বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ড্রোনটি আইন উপদেষ্টার বাসভবনের এলাকার মধ্যে এসে পড়ে।

ডিসি শাহজাহান হোসেন বলেন, “ড্রোনে কোনো ধরনের মেমোরি বা ক্ষতিকারক কোনো  ডিভাইস পাওয়া যায়নি। আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, কোনো ধরনের হামলার উদ্দেশ্যে ড্রোনটি ব্যবহার করা হয়নি। ড্রোনটি চায়নার তৈরি।” 

“তবে কারা এখানে ড্রোনটি অবতরণ করিয়েছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি,” যোগ করেন তিনি।

ঢাকা/সুকান্ত/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন উপদ ষ ট র ব র ব সভবন ড র নট তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দায়িত্ব ছাড়ার আগে পছন্দের ব্যক্তিদের বদলি-পদায়নে কুয়েট উপাচার্য

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল রাতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদকে অব্যাহত দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত তিনি বাসভবনেই অবস্থান করছিলেন। এদিকে এর আগ পর্যন্ত উপাচার্য পদে দায়িত্ব পালনে অনড় অবস্থানে ছিলেন অধ্যাপক মাছুদ। কিন্তু সরকারের কঠোর অবস্থান বুঝতে পেরে নিজের পছন্দের ১১ কর্মচারী ও ৪ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দপ্তরে বদলি ও পদায়ন করেন।

এছাড়া ফজলুল হক হলের প্রভোস্টকে বাদ দিয়ে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ, কেন্দ্রীয় কম্পিউটার সেলের প্রধানকে বাদ দিয়ে নতুন প্রধান নিয়োগ এবং মেকানিক্যাল বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ২৩ এপ্রিল তারিখে এসব অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

তবে কুয়েটের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নিজ বাসভবনে অফিস করেন উপাচার্য। মূলত ওই সময়ই এসব নথিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। তার নির্দেশেই ২৩ এপ্রিল তারিখে অফিস আদেশ জারি করা হয়। গত শুক্রবার রাতে এসব আদেশ সম্পর্কে জানতে পারেন সবাই।

কুয়েটের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূঞার স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, সিনিয়র নিরাপত্তা গার্ড (গ্রেড-১৪) মো. আবুল হোসেনকে বিইসিএম বিভাগে, আতাউর রহমানকে মেডিকেল সেন্টারে, মনির হোসেনকে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তরে, বেল্লাল হোসেনকে আর্কিটেকচার বিভাগে, অফিস সহায়ক বিপুল কান্তি ঘোষকে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে, মো. আবদুল্লাহকে এমইর ডিনের দপ্তরে, ভিসির ল্যাব এ্যাটেনডেন্ট কামাল হোসেনকে এমই বিভাগে, গার্ডেনার নূর ইসলামকে অমর একুশে হলে, অফিস সহায়ক আবদুল্লাহ আল ওমর ফারুক শুভকে এমই বিভাগে, মো. হালিমকে পিআর বিভাগে, হাসিবুল মিয়াকে সিএসই বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

কর্মকর্তাদের মধ্যে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মনিরুজ্জামানকে এমইআরসি বিভাগে, জনসংযোগ বিভাগের সেকশন অফিসার শাহেদুজ্জামান শেখকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে, সেকশন অফিসার আজিজুর রহমানকে এমই বিভাগে, সেখ হাফিজুর রহমানকে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে বদলি করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, মো. মনিরুজ্জামানকে বিধি বহির্ভূতভাবে পদোন্নতি দিয়ে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে পদায়ন করা হয়। পরে তার নেতৃত্বেই গত ৮ মাসে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে ৪২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই কাজে সহযোগিতা করেন আতাউর রহমান মোড়ল ও তার ভাই ইমাদাদুল হক মোড়ল।

একই তারিখে পৃথক আরেক অফিস আদেশে ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট ড. এ বি এম আওলাম হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই হলে প্রভোস্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানকে।

কেন্দ্রীয় কম্পিউটার সেন্টারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আরাফাত হোসেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই পদে ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২৪ এপ্রিল থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আরেক আদেশে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। 

এ বিষয়ে কুয়েটের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূঞার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইন উপদেষ্টার বাসভবনে ড্রোন নিরাপত্তা জোরদার
  • দায়িত্ব ছাড়ার আগে পছন্দের ব্যক্তিদের বদলি-পদায়নে কুয়েট উপাচার্য