রোহিঙ্গাদের জন্য আরাকানে স্বাধীন রাজ্য চায় জামায়াত
Published: 27th, April 2025 GMT
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যকেন্দ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গাদের এলাকায় স্বাধীন মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এ প্রস্তাব দেন। রোববার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো.
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বাংলাদেশে ১১ বা ১২ লাখ রোহিঙ্গা আছে; তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের খাদ্য, কাপড় ইত্যাদি দেওয়া কোনো সমাধান নয়। স্থায়ী সমাধানের জন্য রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ও পুনর্বাসন করতে হবে। সে জন্য আমরা আরাকানকেন্দ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গাদের এলাকায় “ইন্ডিপেনডেন্ট আরাকান স্টেট” করার প্রস্তাব দিয়েছি।’
চীনকে কেন এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা। তিনি বলেন, চীন এখানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ, মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের বড় ধরনের সম্পর্ক আছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদল এই প্রস্তাব তাদের দেশের সরকারকে জানাবে বলে জানিয়েছে।
বৈঠকে চীনা প্রতিনিধিদলকে তিস্তা ব্যারাজ, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু এবং গভীর সমুদ্রবন্দরে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান আবদুল্লাহ মো. তাহের। তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
চীনের এই প্রতিনিধিদল তাদের দেশের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জামায়াতকে দাওয়াত দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান জামায়াতের নায়েবে আমির। জামায়াতের পক্ষ থেকেও শিগগিরই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘তারা আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন কখন, কীভাবে হতে পারে, তা জানতে চেয়েছে। আমরা জানিয়েছি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জুনে নির্বাচনের কথা বলেছেন, আমরাও এ বিষয়ে একমত। তারা এই নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করে না বলে আমাদের জানিয়েছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
চার দিনের কাতার সফর এবং পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ শেষে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৩টায় তাকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। এর আগে বাংলাদেশ সময় রবিবার দুপুর দেড়টায় তিনি ইতালির রাজধানী রোম ত্যাগ করেন।
শনিবার বিশ্বনেতাদের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। আগের দিন তিনি কাতারের দোহা থেকে রোমে যান।
পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর শনিবার অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যাথলিক চার্চের দুই শীর্ষ নেতা-কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া তোমাসি ও কার্ডিনাল জ্যাকব কুভাকাড। তারা পোপ ফ্রান্সিসের দারিদ্র্য বিমোচন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের স্বপ্নের স্মৃতিচারণ করেন।
আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২১ এপ্রিল কাতারের রাজধানী দোহায় যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চার নারী ক্রীড়াবিদ সরকারপ্রধানের সফরসঙ্গী হন।
গত ২২ এপ্রিল আর্থনা সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন।
কাতারের আমিরের মা ও কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া, কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপারসন শেখ থানি বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানি, কাতার চ্যারিটির আন্তর্জাতিক অপারেশনস সেক্টরের সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নওয়াফ আবদুল্লাহ আল হাম্মাদি ও কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবির সঙ্গেও বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা