নিখোঁজের তিন দিন পর জাহাজের চালকের লাশ উদ্ধার, পরিবার বলছে হত্যা
Published: 27th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। আজ রোববার সকালে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) বরাবর সমুদ্র এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। নিহত ব্যক্তির নাম মো. মোস্তফা কামাল বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ। তিনি একটি তেলবাহী জাহাজের চালক ছিলেন।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট সাকিব মেহবুব প্রথম আলোকে বলেন, ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে ভাসমান লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে সেটি নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নৌ পুলিশ জানিয়েছে, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, মো.
এ ঘটনায় হাতিয়া থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। একটি করেছেন নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা, অন্যটি জাহাজের মাস্টার মো. রমজান মাহমুদ। জাহাজের মাস্টার মো. রমজান মাহমুদের করা ডায়েরিতে মোস্তফা কামাল নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে মোস্তফা কামালের ভাতিজা আফছারুল ইসলামের করা ডায়েরিতে ঘটনাটিকে ‘গুম’(হত্যার পর) বলে দাবি করা হয়।
মো. রমজান মাহমুদ তাঁর দায়ের করা ডায়েরিতে উল্লেখ করেছেন, ২৪ এপ্রিল দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম এলজি-৪ ঘাট থেকে খুলনার উদ্দেশে রওনা দেয়। হাতিয়ার কাজীর বাজার বরাবর পূর্ব পাশে মেঘনা নদীতে এলে জাহাজে থাকা মোস্তফা কামালকে পাওয়া যায়নি। তাঁর কক্ষেও ছিলেন না তিনি। পরে মাস্টার রমজান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
অন্যদিকে মোস্তফা কামালের ভাতিজা আফছারুল ইসলামের করা সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ড্রাইভার নিখোঁজ হলেও জাহাজের মাস্টার তৎক্ষণাৎ ভিএইচএফে (রেডিও) ঘোষণা করেননি যে তাঁর জাহাজের চিফ ড্রাইভারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কিংবা এই ব্যাপারে অন্য কোনো জাহাজের সহযোগিতাও চাননি। সাধারণ ডায়েরিতে মো. মোস্তফা কামালকে গুম করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পরিবারের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ লাইটারেজ ইউনিয়নের সহসভাপতি মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৫ এপ্রিল এমটি মার্কেন্টাইল ট্যাংকার চট্টগ্রাম থেকে খুলনার উদ্দেশে রওনা হয়। পরদিন ১১টায় হাতিয়ায় পৌঁছানোর পর ট্যাংকারটির মাস্টার মোস্তফা কামালের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানান। বিষয়টি খুনের ঘটনা বলে আমাদের সন্দেহ। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ, সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক
গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসন থানার মোগরখাল এলাকার একটি বাসায় এ দুর্ঘঘটনা ঘটে। পরে দগ্ধ অবস্থায় তাদের রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
দগ্ধরা হলেন, পারভীন আক্তার (৩৫ বছর), তাসলিমা (৩০) বয়সী, সীমা (৩০), তানজিলা (১০) ও দেড় বছরের আইয়ান।
আরো পড়ুন:
ছেলের পর নাতীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় রাবেয়া বেগম
নড়াইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তাদের আত্মীয় মফিজুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে রান্না করার জন্য চুলা জ্বালালে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ শাওন বিন রহমান জানান, গাজীপুরের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ জনকে দগ্ধদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগুনে সীমার শরীরের ৯০ শতাংশ, পারভীনের ৩২ শতাংশ, তানজিলার ৯০ শতাংশ, তাসলিমার ৯৫ শতাংশ ও আয়ানের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের আগুনে প্রায়ই দগ্ধ হচ্ছে মানুষ। তাদের অনেকে চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসছেন। কিন্তু সবাইকে বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানান চিকিৎসকরা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিসাবে, শুধু ২০২৪ সালে আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ হাজার ৮১১ জন রোগী জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৬৮০ জন রোগী। ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা যান ১০০২ জন। অর্থাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা/ইভা