গ্রন্থাগারের সামনে পোড়ানো হলো ‘স্বৈরাচারপন্থি’ বই
Published: 27th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বই বের করে পুড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এসব বই বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট। শিক্ষার্থীরা এসব বইকে ‘স্বৈরাচারপন্থি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ ঘটনার ওই গ্রন্থাগারের ভেতরে সংবাদকর্মীদের ঢুকতে দেননি দায়িত্বরত ব্যক্তিরা।
সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে কয়েকজন ওই গ্রন্থাগারের ভেতরে যান। তারা অভিযোগ করেন, সেখানে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বই রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীরা শতাধিক বই বের করে গ্রন্থাগারের সামনের সড়কে জড়ো করেন। পরে এতে আগুন ধরিয়ে দেন।
সংবাদ পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা গ্রন্থাগারের সামনে গেলে ওই শিক্ষার্থীদের চলে যেতে দেখা যায়। তাদের দু’জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ৫ আগস্টের পর বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট কোনো বই ছিল না। রোববার দুপুরে পড়তে এসে কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগপন্থি’ শত শত বই দেখতে পান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এসব বই গ্রন্থাগারের সামনে এনে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
শিক্ষার্থীরা এসব বইকে ‘স্বৈরাচারপন্থি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এসব বই গ্রন্থাগারে রাখা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। স্বৈরাচারের দোসররা আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠা করতে পরিকল্পিতভাবেই এ কাজ করেছে। গ্রন্থাগারে এমন যত বই আছে, তা অপসারণে উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হবে।
এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে গ্রন্থাগারে দায়িত্বে থাকা পিয়ন আব্দুল মজিদ সংবাদকর্মীদের ভেতরে না ঢোকার জন্য অনুরোধ করেন। তিনিই জানিয়ে দেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ বই পোড়ানোর বিষয়ে বক্তব্য দেবেন না।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি পালন করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রক্টর মোখলেসুর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখা ৮ এপ্রিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে একটি মানববন্ধন করে, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং ২১ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ব্যানারে মানববন্ধন ও র্যালি করেন, যা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় একটি শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেছেন এবং অপরাপর ছাত্রসংগঠনগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই আপনাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টর বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
গত ১৪ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত জামান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাঈম সরকার মনোনীত হন।
গত বছরের ৬ নভেম্বর ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান প্রথম আলোকে বলেন, 'যে দুইটা বিষয়ে কর্মসূচি করেছি, সেগুলো জাতীয় ইস্যু। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে লুকিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাউকে জোর করিনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা যদি অমান্য হয়ে থাকে, আমরা তিনদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দেব।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আইন অমান্য করে কর্মসূচির কারণে ছাত্রদলের নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। লিখিতভাবে তাঁদের জবাব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।