সিলেটসহ সারাদেশে পাথর কোয়ারিগুলোতে নির্বিচার পাথর উত্তোলনের ফলে প্রকৃতি ও জনজীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায় ও সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সিলেটসহ সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে পাথর, বালু, মাটিসহ সব কোয়ারির ইজারা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর এসব কোয়ারিতে পাথর, বালু ও মাটি উত্তোলন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ছিল।
দেখা গেছে, অনেকে তখন স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছিলেন। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টানা এক মাস প্রকাশ্যে সিলেটের পাথর কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু লুট করা হয়। গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সিলেটসহ সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারিগুলোর ইজারা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বাতিল করে। পরিবেশবাদীরা এতে অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ও। এমন পরিস্থিতিতে রোববার পরিবেশগত বিবেচনায় দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা প্রদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
সভায় বলা হয়েছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এবং প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষিত কোনো পাথর কোয়ারিতে ইজারা প্রদান করা যাবে না। এ ছাড়া নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষার স্বার্থে সিলেট জেলার ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, রতনপুর, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া পাথর মহালে ইজারা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পাথর কোয়ারিতে ইজারা দেওয়ার আগে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নয়, প্রকৃত দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত কোনো পাথর বিক্রি না করে, তা কাস্টমসের মাধ্যমে সরকারের নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন শুধু পাথর মহল নয়, অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন রোধেও একই নীতিমালা অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে পরিবেশ ও জনস্বার্থ রক্ষিত হবে। বালু ও পাথরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদগুলো আইন মেনে জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট পর ব শ র ইজ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
চার দিনের কাতার সফর এবং পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ শেষে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৩টায় তাকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। এর আগে বাংলাদেশ সময় রবিবার দুপুর দেড়টায় তিনি ইতালির রাজধানী রোম ত্যাগ করেন।
শনিবার বিশ্বনেতাদের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। আগের দিন তিনি কাতারের দোহা থেকে রোমে যান।
পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর শনিবার অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যাথলিক চার্চের দুই শীর্ষ নেতা-কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া তোমাসি ও কার্ডিনাল জ্যাকব কুভাকাড। তারা পোপ ফ্রান্সিসের দারিদ্র্য বিমোচন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের স্বপ্নের স্মৃতিচারণ করেন।
আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২১ এপ্রিল কাতারের রাজধানী দোহায় যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীরা। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চার নারী ক্রীড়াবিদ সরকারপ্রধানের সফরসঙ্গী হন।
গত ২২ এপ্রিল আর্থনা সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন।
কাতারের আমিরের মা ও কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া, কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপারসন শেখ থানি বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানি, কাতার চ্যারিটির আন্তর্জাতিক অপারেশনস সেক্টরের সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নওয়াফ আবদুল্লাহ আল হাম্মাদি ও কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবির সঙ্গেও বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা