বন্দরে যুবদল নেতা পরিচয়ে হুমায়ুনের চাঁদাবাজি, মামলা
Published: 27th, April 2025 GMT
৫ আগষ্টের পর ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ পালিয়ে গেলেও হুমায়ুন এখন যুবদল নেতা পরিচয়ে বন্দর রূপালী ও আমিন আবাসিক এলাকায় বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে স্থানীয়রা চরম ভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
রুপালী আবাসিক এলাকায় মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে মারধর ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে হুমায়ুন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় কথিত যুবদল নেতা হুমায়ুনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলার করেছেন ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন।
জানাগেছে, উপজেলা কলাগাছিয়া ইউপি মাদবপাশা এলাকার মৃত আব্দুল আলীর ছেলে মহিউদ্দিন বন্দর রূপালী আবাসিক এলাকায় পাঁচ শতাংশ জমির উপরে একটি টিনসেড দৌচালা বসত ঘর রয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পর হাসিনা দেশ ত্যাগের পর বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার নিজামউদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন যুবদল নেতা পরিচয়ে ১০/১২ জনকে নিয়ে মহিউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে নগদ ৫ লাখ টাকা ও প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে মহিউদ্দিন হুমায়ুনকে নগদ ৫ হাজার টাকা দেন, এবং যুবদলের অফিস খরচ বাবদ প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ এপ্রিল রাতে হুমায়ুনের নেতৃত্বে ১০/১২ জন রুপালী গেইট আবাসিক এলাকায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করে মহিউদ্দিনের ছোট ভাই বাহাউদ্দিন (৫৫) কে মারধর ও ভাংচুর ও লুটপাট করে নগদ ৫০ হাজার টাকা লুটে নেয়। দাবীকৃত চাঁদার ৫ লাখ টাকার হুমকি দমকি দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানান, আওয়ামীলীগের শাসনামলে থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ এ এলাকায় চাঁদাবাজি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ ছিলো সাধারণ মানুষ ।
৫ আগষ্টের পর ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ পালিয়ে গেলেও হঠাৎ হুমায়ুন যুবদল নেতা পরিচয়ে ১০/১২ জনের একটি বাহিনী গড়ে তুলে বন্দর রূপালী ও আমিন আবাসিক এলাকায় বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। হুমায়ুন ও তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বাসা বাড়ির মালিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সাধারণ মানুষ ।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় হুমায়ুনসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ য বদল ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার ভালো সমাধান
বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।
লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।
তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।