পটুয়াখালীতে শহীদ বাবার কবরের পাশে শায়িত কলেজছাত্রী, কান্না থামছে না মায়ের
Published: 27th, April 2025 GMT
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় জুলাই আন্দোলনের শহীদ বাবার কবরের পাশেই দাফন করা হয়েছে কলেজছাত্রী মেয়েকে। আজ রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজ গ্রামের বসতঘরের সামনের আঙিনায় তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান স্বজনেরা।
গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত ১৮ মার্চ তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুমকি থানায় মামলা রয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হন স্বজনেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাতটার দিকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। একই অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন কলেজছাত্রীর মা। তিনি অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নার একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় স্বজনেরা তাঁকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। নিজ ঘরে পৌঁছানোর একপর্যায়ে জ্ঞান ফিরলে তিনি আবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন অবস্থা থেকে কলেজছাত্রীর বৃদ্ধ দাদাও সেখানে কান্নাকাটি শুরু করেন।
আরও পড়ুনশহীদ বাবার পাশেই কলেজছাত্রীকে দাফনের প্রস্তুতি, কবর খুঁড়ছেন বৃদ্ধ দাদা৬ ঘণ্টা আগেপরে বাড়ির পাশে একটি স্কুলমাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজায় বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, এনসিপির মুখ্য সংগঠক সার্জিস আলমসহ নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
এর আগে কলেজছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
ওই নারী আরও বলেন, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় তাঁর মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার অশালীন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলে। এরপর তাঁরা গত ২০ মার্চ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই দুজন কিশোর। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুনজুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়েটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর, হাসপাতালে ক্ষোভ৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার২১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনের এক শহীদের কলেজছাত্রী মেয়ের (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
আদাবর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর জানান, ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে তার স্বজনরা জানান, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলো। বিচার হবে কিনা তা নিয়েও তার মনের মধ্যে শঙ্কা ছিল। এ কারণে সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই কলেজছাত্রীর এক চাচা রাইজিংবিডিকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার ভাই গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
তিনি আরো জানান, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার ভাতিজি। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তাঁর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়। এ ঘটনার পর এজাহারভুক্ত দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।