এবার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট চলাচল শুরু
Published: 27th, April 2025 GMT
সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। আজ রোববার রাতে কার্গো ফ্লাইট উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
রাত ৮টায় ৬০ টন পণ্য নিয়ে স্পেনের উদ্দেশে কার্গো উড়োজাহাজটি ছেড়ে যায়। এর মাধ্যমে ঢাকার বাইরে প্রথম মালবাহী ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করল সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
জানা গেছে, এত দিন ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার আওতায় ভারতের পেট্রাপোল ও গেদে স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করত বাংলাদেশ। কিন্তু কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই ৮ এপ্রিল ভারত এই সুবিধা বাতিল করে। এতে বাংলাদেশের পণ্য সড়কপথে কলকাতা ও দিল্লি নিয়ে সেখানকার বিমানবন্দর হয়ে বৈশ্বিক বাজারে পাঠানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডর বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা কিছুটা বিপাকে পড়েছিলেন। এরপর বিকল্প হিসেবে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ওসমানী বিমানবন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নেয় সরকার।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গালিস্টেয়ার এভিয়েশনের একটি চার্টার্ড উড়োজাহাজ সিলেট থেকে স্পেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এই উদ্বোধনী ফ্লাইটে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের মানদণ্ড পূরণে বিস্ফোরক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, এক্স-রে স্ক্যানার এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ট্রান্সশিপমেন্টের তুলনায় দেশে চালু করা কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনে খরচ আরও কম পড়বে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মেক্সিকোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনসচিব নাসরীন জাহান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ফ ল ইট ওসম ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশান্তির সঙ্গে কিছু কঠিন বাস্তবতা
সমুদ্রের তীরে দুই পায়ের পাতায় ভর দিয়ে বসে আছেন এক ব্যক্তি। গভীর মনোযোগ দিয়ে তাঁর চুল-দাড়ি কাটছেন আরেকজন। কিছুক্ষণ পর পর ঢেউ এসে দু’জনের পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। পাশে চোখ ফেরালেই আরেক দৃশ্যে নজর আটকায়। পরিত্যক্ত এক জোড়া জুতা পায়ে ময়লার বিশাল স্তূপ থেকে লাফিয়ে নামছেন এক মধ্যবয়সী নারী। তাঁর হাতে নোংরা প্লাস্টিকের বস্তা। আরেকটু দূরের ফ্রেমে নজর রাখলে দেখা মেলে নিখাদ আনন্দের। রেলপথের পাশের দুটি খুঁটিতে দড়ি বেঁধে দোলনা বানিয়ে একে অপরের মুখোমুখি বসে দুলছে দুই পথশিশু। তাদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস।
এমনই বিচিত্র সব দৃশ্যের প্রদর্শনী চলছে রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে। জুলাই আন্দোলন থেকে শুরু করে নিত্যজীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা, যেগুলো সহজেই চোখ এড়িয়ে যায়, সেই সব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে দর্শকদের সামনে তুলে এনেছেন আলোকচিত্রীরা। এর মধ্যে কিছু ছবি যেমন প্রশান্তির, কিছু ছবি আবার মন খারাপ করিয়ে দেয়, টেনে দাঁড় করায় কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। সেখানে একটি ছবি দেখে থেমে যান দর্শনার্থী আল-আমিন সজীব। নির্মাণাধীন ভবনের কার্নিশে ঝুলছেন ভীতসন্ত্রস্ত এক তরুণ। ছাদ থেকে তাঁর দিকে পিস্তল তাক করে আছে পুলিশ।
সজীব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এ ঘটনার ভিডিওটি দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। একজন নিরস্ত্র মানুষকে কীভাবে গুলি করতে পারে! পরে অবশ্য গণমাধ্যমে খবর হয়, কার্নিশে ঝুলে থাকা ওই তরুণ বেঁচে আছেন। বিষয়টি জানার পর স্বস্তি পেয়েছিলাম।’
গত ১৯ এপ্রিল দৃকপাঠ ভবনে বাংলাদেশ প্রেস ফটো কনটেস্ট-২০২৫-এর পুরস্কার বিতরণ এবং প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এ বছর ২৫২ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে সাতজন বিজয়ী হয়েছেন। ৯ ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত ছবি আহ্বানের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। ২৫২ আলোকচিত্র সাংবাদিক গত বছর নিজেদের তোলা ছবি জমা দেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও তথ্যচিত্রনির্ভর ১ হাজার ৩১০টি ছবি জমা পড়ে। এর মধ্যে নির্বাচিত ৩১টি ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে এই প্রদর্শনী।
বর্ষসেরা আলোকচিত্রের (২০২৪) জন্য পুরস্কার পেয়েছেন আশরাফুল আলম।
প্রদর্শনীর কিউরেটর ও দৃকের মহাব্যবস্থাপক এ এস এম রেজাউর রহমান বলেন, ‘প্রদর্শনীটি কিউরেট করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আলোচনায় থাকা ছবিগুলো তো বটেই, এর বাইরের ছবি নিয়েও মানুষ আলাপচারিতা করুক। যেমন, জনমুখী সাংবাদিকতা বিভাগের একটা ছবিতে উঠে এসেছে, এক নারী শিশুসন্তানসহ বাসে উঠতে চাচ্ছেন। কিন্তু বাসচালকের হেল্পার গলায় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে সরিয়ে দিচ্ছেন। এই ছবি আমাদের বুঝিয়ে দেয়, দেশের গণপরিবহন নারীবান্ধব নয় এবং এ জায়গায় আমাদের কাজ করা উচিত।’
সবার জন্য উন্মুক্ত ১২ দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।