জয়পুরহাটে ইটভাটার ধোঁয়ায় ধানখেত নষ্টের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ
Published: 27th, April 2025 GMT
জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলগেট সংলগ্ন একটি ইটভাটার ধোঁয়ায় ১২০ বিঘা জমির বোরো ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—এমন অভিযোগে সড়ক অবরোধ করেছেন কৃষকেরা।
আজ রোববার জয়পুরহাট-পাঁচবিবি সড়কে এই অবরোধ করা হয়। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
পুরানাপৈল রেলগেট এলাকায় আরএনবি নামের একটি ইটভাটা আছে। স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, ২৫ এপ্রিল ওই ইটাভার গরম ধোঁয়া ছাড়া হয়। এরপর একে একে মাঠের বোরো ধানখেত ধূসর রং ধারণ করতে থাকে। আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা পুরানাপৈল রেলগেট এলাকায় জড়ো হন। তাঁরা বিকেল পাঁচটায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে জয়পুরহাট-পাঁচবিবি সড়ক বসে পড়েন। খবর পেয়ে ইউএনও, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে ইউএনওর আশ্বাসের পর কৃষকেরা সড়ক ছেড়ে দেন। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কৃষক মিরাজুল, মো.
পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান আলী বলেন, ২৫ একর বোরো ধানখেত ও এক একর কলার বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষকেরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, ‘আমরা মাঠের ধানখেত পরিদর্শন করেছি। ইটভাটার গরম ধোঁয়ায় বোরো ধানখেতের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি।’
জয়পুরহাট সদরের ইউএনও মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা ও ক্ষতির কারণ নির্ণয় করবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইটভাটার মালিক বেলায়েত হোসেন বলেন, তাঁর ইটভাটার কারণে ধানখেত নষ্ট হয়েছে বলে কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইটভ ট র ধ নখ ত অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল বিষয়ে পিছু হটল ট্রাম্প প্রশাসন
তীব্র বিরোধিতার মুখে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিচার বিভাগের অ্যাটর্নি এলিজাবেথ কারলান ফেডারেল আদালতকে জানিয়েছেন, অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থায় ভিসা পর্যালোচনা ও বাতিল নিয়ে কাজ করছেন।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও পড়াশোনার আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়ায় আদালতে ১০০টির বেশি মামলা হয়েছে। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়া হলো।
মার্কিন হায়ার এডুকেশনের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর ওপর ভিসা বাতিলের প্রভাব পড়েছে।
আরও পড়ুনতহবিল স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা২২ এপ্রিল ২০২৫মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর অনেক শিক্ষার্থীকে জোর করে বের করে দেওয়ায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া নির্দেশনায় সরকারি অর্থ বরাদ্দ বাতিলের হুমকি দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মামলা দায়ের করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। মামলার শুনানিতে গতকাল শুক্রবার এক বিচারক জানান, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় ঐকমত্যে পৌঁছেছে এবং সরকার তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলে ট্রাম্প প্রশাসনের সরে আসার সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল রাতে একটি নিউজ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমসও। এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁরা এখন নিরাপদে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুনটাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং: দেশসেরা বুয়েট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির অবস্থান কোথায়২৫ এপ্রিল ২০২৫শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়ের কথা বলা হচ্ছে। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর তীব্র বিরোধিতা। দ্বিতীয়ত, এ সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন মহল থেকে চাপ।
এর আগে শিক্ষার্থী ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা) নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ছিল—১. যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করবেন, তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে; ২. যাঁরা শুধু অনলাইন কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না; ৩. যাঁরা অনলাইন ও অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে ক্লাস করবেন, তাঁদের ভিসা বাতিল হবে না; ৪. এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতো।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে জেলায় জেলায় হচ্ছে স্বতন্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্র২৪ এপ্রিল ২০২৫ট্রাম্প প্রশাসনের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চের পর থেকে ১৭৪ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়। এর ফলে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা হারিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত যদি বহাল থাকত, তাহলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হতো।