বিচার নিশ্চিত হলে লামিয়ার জীবন দিতে হতো না: রিজভী
Published: 27th, April 2025 GMT
বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, লামিয়ার উপর অত্যাচার এবং নির্যাতনের যে হুমকি এসেছিল, তিনি যে বিচার চাচ্ছিলেন, সেই সময় বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত হলে হয়ত আজকে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হতো না।
ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শহীদ জসিম উদ্দিনের কন্যা লামিয়ার জানাজায় অংশ নেন তিনি। এর আগে রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘আয়না ঘর থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যার যে ভয়াবহ পরিস্থিতি আমরা দেখেছি, সেখান থেকে মুক্তির জন্য সর্বশেষ যে পৃথিবী কাঁপানো অভ্যুত্থান হয়েছিল, সেখানে লামিয়ার পরিবারের প্রধান ব্যক্তি অংশ নিয়ে জীবন দিয়েছেন। তার অবদানের মধ্যে দিয়ে গোটা জাতি নিষ্কৃতি পেয়েছে। লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিনসহ অনেকের আত্মদানের মাধ্যমে আজ আপনাদের মাঝে কথা বলার সাহস পেয়েছি, মুক্ত পরিবেশ পেয়েছি।’’
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
বরগুনায় দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
তিনি বলেন, ‘‘আদালত হচ্ছে বিচারের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা। যেখান থেকে যদি মানুষ বিচ্যুতি হয়, বঞ্চিত হয়; সেই সমাজে নৈরাজ্যের কালো অন্ধকার নেমে আসে, সেই সমাজের মধ্যে পরিব্যক্ত হয় এক ভয়ঙ্কর হতাশা। ফ্যাসিবাদের পতনের পরে এখনো কেন সেই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’’
গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালী দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে শহীদ জসিম উদ্দিনের কন্যা লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর নিজেই থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। বাবার মৃত্যু এবং ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত লামিয়া শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ৬ নম্বর রোডের ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
লামিয়ার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে রুহুল কবির রিজভী শহীদ জসিম উদ্দিনের গ্রামের বাড়িতে আসেন। এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানাজায় অংশ নেন।
গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশ গুলিতে জসিম উদ্দিন শহীদ হন।
ঢাকা/ইমরান/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করল প্রশাসন
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লম্বাশিয়া পাহাড় ধ্বংস করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। লম্বাশিয়া পাহাড়টি বালু প্রকৃতির, যার ফলে এ পাহাড় ঘেঁষে যাওয়া সাতগরিয়া ছড়ার পানির পথ পরিবর্তন করে দেয় বালুখেকোরা। আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ে পাহাড়। শ্যালো মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হয় বালু। এভাবেই চলছে দেড় যুগ ধরে।
এ ছড়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। রোববার দৈনিক সমকালে ‘লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের এক দিন পর রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর ঢিবি নষ্ট করে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত অবৈধভাবে মজুদ করা পানি কেটে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাস্তা কেটে গর্ত তৈরি করে দেওয়া হয়, রাস্তার মাঝে পিলার পুঁতে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়।
লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সঙ্গে ছিলেন চুনতির রেঞ্জ অফিসার মো. আবীর হাসান, সাতগড় বিটের বিট অফিসার মহসিন আলী ইমরানসহ থানা পুলিশ ও বনবিভাগের সদস্যরা।
২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটার জুড়ে ক্ষতচিহৃ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পরও বনবিভাগ ও প্রশাসন রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আরেক দল দূর্বৃত্ত কাঁটাতার তুলে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন করে।