রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে চীনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বামপন্থি দলগুলো। রোববার ঢাকা সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বাম নেতারা এ আহ্বান জানান। এদিন রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর ডাইরেক্টর জেনারেল পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল আরও ছিলেন চেন ইয়াংপেই, ঝাং গুইউ।

সিপিবির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ এবং সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী। 

অন্যদিকে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান এবং মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক বৈঠকে যোগ দেন।

সিপিবির সঙ্গে বৈঠককালে উভয় দলের নেতারা বাংলাদেশসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়া দুই পার্টির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

সিপিবি নেতারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং টেকসই উন্নয়নের চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকারের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেন। 

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের  গণতান্ত্রিক সংগ্রামে সিপিবির সাহসী ভূমিকা তারা সবসময়ই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। 

জবাবে সিপিবি নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্খা ভিত্তিতে বাংলাদেশের মেহনতী মানুষের জন্য একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সংহতি কামনা করেন। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বৈঠক 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বৈঠককালে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশিদের জন্য  চীনের ভিসা আরও সহজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ চীনবিরোধী কোনো তৎপরতায় কাউকে বাংলাদেশকে ব্যবহারের সুযোগ দেবে না।

চীনের প্রতিনিধিদলের প্রধান পেং জিউ বিন বলেন, চীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল থাকবে। চীন আগামীতে পারস্পরিক মর্যাদার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমাত্রিক সহযোগিতার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আগামীতে উভয় পার্টির মধ্যকার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দুই নেতা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করল প্রশাসন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লম্বাশিয়া পাহাড় ধ্বংস করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। লম্বাশিয়া পাহাড়টি বালু প্রকৃতির, যার ফলে এ পাহাড় ঘেঁষে যাওয়া সাতগরিয়া ছড়ার পানির পথ পরিবর্তন করে দেয় বালুখেকোরা। আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ে পাহাড়। শ্যালো মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হয় বালু। এভাবেই চলছে দেড় যুগ ধরে। 

এ ছড়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। রোববার দৈনিক সমকালে ‘লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের এক দিন পর রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর ঢিবি নষ্ট করে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত অবৈধভাবে মজুদ করা পানি কেটে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাস্তা কেটে গর্ত তৈরি করে দেওয়া হয়, রাস্তার মাঝে পিলার পুঁতে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়। 

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সঙ্গে ছিলেন চুনতির রেঞ্জ অফিসার মো. আবীর হাসান, সাতগড় বিটের বিট অফিসার মহসিন আলী ইমরানসহ থানা পুলিশ ও বনবিভাগের সদস্যরা।

২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটার জুড়ে ক্ষতচিহৃ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পরও বনবিভাগ ও প্রশাসন রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আরেক দল দূর্বৃত্ত কাঁটাতার তুলে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন করে। 

 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ