তালতলীতে কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘দলবদ্ধ ধর্ষণ’, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ
Published: 27th, April 2025 GMT
বরগুনার তালতলী উপজেলায় প্রতিবেশী নারীর সহায়তায় এক কিশোরীকে (১৬) বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। ফলে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পাঁচ দিনেও কোনো মামলা হয়নি।
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ওই কিশোরীর বাড়ি উপজেলার নিশানাবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রতিবেশী এক নারী তাঁর দূরসম্পর্কের আত্মীয় ইব্রাহিম নামের এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এর পরিপেক্ষিতে গত মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল রাতে ওই নারীর বাড়িতে কিশোরী ও তার মাকে ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় মায়ের অজান্তে কিশোরীকে বিভিন্নভাবে ফুঁসলিয়ে ইব্রাহিম নামের ওই যুবকের সঙ্গে মোটরসাইকেলে পাঠিয়ে দেন ওই নারী। ইব্রাহিম তাকে একটি মাছের ঘেরে নিয়ে যান। সেখানে ইব্রাহিমসহ তাঁর চার বন্ধু তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পরিবারের। পরে সকালে ২০০ টাকা গাড়িভাড়া দিয়ে ওই কিশোরীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ওই কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে রাতেই থানায় জানান পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে বলা হয়, সকালে আসতে। কিশোরীর খোঁজ মিললে তাকে নিয়ে পরের দিন আবারও থানায় যায় ওই কিশোরীর পরিবার। পরে বিস্তারিত বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। তবে এ ঘটনায় থানার ওসি মো. শাহজালাল মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ধর্ষণের আলামত সংরক্ষণ করে রাখতে বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইব্রাহিমের পুরো পরিচয় জানতে পারেনি ভুক্তভোগীর পরিবার। ঘটনার পর থেকে প্রতিবেশী ওই নারীও পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাকিল খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়টি শুনে ওই মেয়ের পরিবারের সাথে আমিও থানায় যাই। তবে ওই ছেলের সঠিক পরিচয় না পেয়ে মামলা নেয়নি পুলিশ।’
জানতে চাইলে তালতলী থানার ওসি মো. শাহজালাল বলেন, ‘কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। নিখোঁজের বিষয়ে একটা তথ্য পেয়েছিলাম। পরে তাদের জিডি করার জন্য ছবিসহ আসতে বলেছিলাম।’ একজন জনপ্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় হাজির হলেও অভিযুক্তের সঠিক পরিচয় না পাওয়ায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমি মেয়েকে পেয়ে ইউপি সদস্য শাকিল খানসহ কয়েকবার থানায় যাই। মেয়ে বিস্তারিত ঘটনা পুলিশকে জানায়। তবে ওসি সাহেব কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমরা জিডি করতে চাইলেও নানা অজুহাত দেখায় ও ইব্রাহিমকে থানায় ডাকার কথা বলেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র স র পর ব র ওই ক শ র ত লতল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জুলাই আন্দোলনের এক শহীদের কলেজছাত্রী মেয়ের (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
ওই কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে তার ভাতিজির আত্মহত্যার খবর পান তিনি। এরপর তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।
এসআই কমল চন্দ্র ধর বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় তার কলেজশিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলে। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করে। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।
মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।