মানুষ চায় দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন: সালাউদ্দিন টুকু
Published: 27th, April 2025 GMT
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ চায় দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। মানুষ নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তার পছন্দমতো সরকার চায়।
রোববার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিবেকানন্দ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এ বিএনপি নেতা বলেন, একটি রাজনৈতিক সরকার, নির্বাচিত সরকার যে কোনো অনির্বাচিত সরকারের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী। কাজেই আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সবার আগে প্রয়োজন। আমাদের দলের দাবির সঙ্গে এ দেশের জনগণও তাই চায়।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, আগামী বাংলাদেশ কীভাবে চলবে– বিএনপি তার জন্য ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। বেশির ভাগ রাজনৈতিক নেতা চাচ্ছেন, আগামী ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন হোক। আমরা এই ধারায় রয়েছি। পরে সরকার কী সিদ্ধান্ত দেবে, এটি আমরা বলতে পারব না। যেহেতু আমরা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কাজ করছি; বাংলাদেশের জনগণের সেই প্রত্যাশা এই সরকার পূরণ করবে– এটিই আমরা প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, ৩১ দফায় শিক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান, বেকার ভাতা, স্বাস্থ্যের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবার ফ্যামিলি কার্ড পাবে। স্বাস্থ্যের জন্য বীমার কথাও চিন্তা করছি আমরা। বিগত সময়ে বিএনপি জাতির সামনে যে ওয়াদা করেছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বজলুর রহমান, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, যুবদলের আহ্বায়ক রাশেদুল আলম রাশেদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুর রহমান শফিক প্রমুখ। আগামী ১২ জুন শুরু হবে বিবেকানন্দ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল উদ দ ন ট ক সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বটগাছ প্রতীক ফেরত চায় খেলাফত আন্দোলনের কাশেমী অংশ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বটগাছ প্রতীক ফেরত পেতে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের এক অংশের সভাপতি আবু জাফর কাশেমী।
আদালতের রায় তারা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তারা হেরে গেছে। এখন বটগাছ প্রতীক আমাদের প্রাপ্য। আমরা এটা নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্য দরখাস্ত করেছি।”
রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরউদ্দিনসহ আরেক কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন তিনি।
“আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে যেন আমরা বটগাছ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারি,” প্রত্যাশা করছেন আবু জাফর কাশেমী।
তিনি বলেন, “আমাদের খেলাফত আন্দোলনের যে আরেক অংশ রয়েছে, তারা বিগত দিনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতীকটা ব্যবহার করেছে। আমরা আগে নির্বাচন করি নাই। এখন যেহেতু আমরা নির্বাচন করব, সেহেতু প্রতীকটা আমরা চাচ্ছি; আমাদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য।”
খেলাফত আন্দোলনের আরেক অংশের প্রধান আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ‘বটগাছ’ প্রতীকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন।
আবু জাফর কাশেমী বলেন, “আমরা আজকে এসেছি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করতে। নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, এটা নিয়ে বিতর্ক চলছে। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আগে সংস্কার হতে হবে। প্রত্যেক জায়গায় স্বৈরাচারী সরকারের কর্মকর্তারা রয়েছেন, পতিত দলের সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন। সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। এবং নির্বাচন যেন একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে হয়।”
দ্বিতীয় এজেন্ডা কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আগে জাতীয় নির্বাচন হবে নাকি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হবে; যদি আগে জাতীয় নির্বাচন হয়, যে দল ক্ষমতায় আসবে, মেয়র থেকে মেম্বর পদ পর্যন্ত তাদের দলীয় লোক ছাড়া অন্য কারো নির্বাচন করার সুযোগ নেই। সেজন্য আমরা চাচ্ছি, আগে স্থানীয সরকারের নির্বাচন হবে, পরে জাতীয় নির্বাচন হবে।”
“তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং যোগ্য লোক দেশের সেবা করার সুযোগ পাবে,” মনে করছেন আবু জাফর কাশেমী।
খেলাফত আন্দোলন বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আমরা বিগত সরকারের নির্বাচন বয়কট করেছি। বয়কট করার কারণে আমরা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমি চার মাস জেল খেটেছি। আমাদের মহাসচিব ৩২ মাস জেল খেটেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা সারা দেশে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।”
তারা বিদেশেও সফর করেছিলাম জানিয়ে আবু জাফর কাশেমী বলেন, “চায়না আমাদের পাঁচটি দলের সঙ্গে দাওয়াত দিয়েছিল। সেখানে আমাদের আলোচনা হয়েছিল। আমরা চাই, ইসলামী দলগুলো যেন একটি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারে ঐক্যবদ্ধভাবে। আলোচনা হইতেছে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে আমরা বারবার বসতেছি। একটি নির্বাচনি এলাকায় আমাদের একটি প্রতীক থাকবে। যার যেখানে গ্রহণযোগ্যতা আছে, যেন সে পাস করে আসতে পারে।”
অভিন্ন প্রতীকে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যে কোনো আসনে একক প্রার্থী দিয়ে তাকে পাস করিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা অনেক দূর আগাইছি। সবাই চায়, আমরা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করি। যার যে মত, সে অবস্থায় থাকবে কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা সবাই একমত।”
‘‘আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি দেশ গঠনে’’ এমন দাবি করে আবু জাফর কাশেমী বলেন, “যেহেতু পতিত স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, সেহেতু এখন সময় এসেছে, দেশটাকে নতুন করে গড়ার। সেজন্য আমাদের যত দ্বন্দ্ব আছে, আমরা সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে দেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। ইনশাআল্লাহ, সমস্ত ইসলামী দল আমরা একসঙ্গে হব, এটাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমরা অনেক দূর এগেয়েছি। আমাদের মিল হয়ে গেছে। এখন শুধু ঘোষণাটা বাকি।”
ঢাকা/হাসান/রাসেল