অশুভ শক্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বললেন ড. কামাল হোসেন
Published: 27th, April 2025 GMT
সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। কোনো অশুভ শক্তি বা ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড.
গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। অনুষ্ঠান মঞ্চের ব্যানারে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ৮৮তম জন্মদিন উৎসব’।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্র–জনতার যে ঐক্য গড়ে উঠেছে তা দেশ গড়ার কাজে নতুন দিগন্ত তৈরি করবে। স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে দেশের জনগণ।
বিগত সময়ে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন ড. কামাল হোসেন। এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
যথাসময়ে সংস্কার কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ যাতে সুগম হয় সেই প্রত্যাশার কথাও লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন ড. কামাল। পরে অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের ওপর বিশ্বাস রাখার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে নিজেদের ঐক্যকে ধরে রাখে জনগণ। যেকোনো ঝুঁকি নিতে জনগণ দ্বিধাবোধ করে না। বহুবার এর প্রমাণ জনগণ দিয়েছে। দেশের মানুষ হবে গণতন্ত্রের পাহারাদার।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, দেশের রাজনীতিতে যত দিন পর্যন্ত গোয়েন্দা বিভাগের হস্তক্ষেপের অবসান না হবে তত দিন স্বাধীনভাবে গণতন্ত্র চর্চা করা সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন করা যেতে পারে। তবে সংবিধান নিয়ে যে চক্রান্ত হচ্ছে, তা প্রতিহত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সদস্য এস এম আলতাফ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। বক্তব্য দেন গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দার, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. কামাল হোসেনকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন গণফোরামের নেতা–কর্মীরা। অনুষ্ঠান শেষে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন করেন নেতা–কর্মীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণফ র ম র ন গণফ র ম গণতন ত র অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা জুলুম করে রাজনীতি করতে চাই না : নাহিদ ইসলামের বাবা
“আমরা জুলুম করে রাজনীতি করতে চাই না, জনগণ আমাদের কাজ দেখে ভালোবেসে ভোট দিলে আমরা ক্ষমতায় যাব।” বলেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম জামির।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নড়াইল জেলা শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে নতুন দল এনসিপির প্রথম পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বদরুল ইসলাম জামির বলেন, “আন্দোলনের পরে দেখলাম এক ফ্যাসিস্ট সরকারকে তাড়ানোর পর আরেক ফ্যাসিস্ট সরকার মাথা চাড়া দিচ্ছে। এ জন্যই তরুণদের নেতৃত্বে এই নতুন রাজনৈতিক দলের প্রকাশ। আন্দোলনের সময় আমাদের একটা স্লোগান ছিল ‘ক্ষমতা না জনতা - জনতা জনতা’। আমরা ক্ষমতার জন্য দল করিনি, দেশ ও জনগণের সেবার জন্য দল করে জনতার কাতারেই থাকতে চাই। আমাদের দেশে তো নির্বাচন হয় না। নির্বাচনেতো ভোটের প্রতিফলন হয়নি। আর নির্বাচন যখন হয়, তখন দেশের জনগণ কিন্তু মার্কা দেখে ভোট দেয়। জনগণকে অনুরোধ করবো মার্কা দেখে নয়, দলের কাজ দেখে যেন ভোট দেন।”
এনসিপি নড়াইল জেলা শাখার আহবায়ক শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহবায়ক তানজিল আহমেদ, কমিটি উপদেষ্টা নোমান আহমেদ, জেলা নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব পাঁচগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান এস এম সাইফুজ্জামান, নলদী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ পাখি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইলের আহবায়ক আব্দুর রহমান মেহেদী।
চলতি বছরের ২৮ ফেরুয়ারি নতুন দল গঠনের পর নড়াইলে প্রথম জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) আনুষ্ঠানিক কোনো সভা অনুষ্ঠিত হলো।
পরে জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঢাকা/শরিফুল/টিপু